Site icon My Classroom

বর্ষাকাল রচনা। Class 3 4 5 6 6। আমার প্রিয় ঋতু বর্ষাকাল

বর্ষাকাল রচনা। Class 3 4 5 6 6। আমার প্রিয় ঋতু বর্ষাকাল

রচনা

বর্ষাকাল রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় বর্ষাকাল রচনা না দিয়ে বলা হয় বর্ষাকাল সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে বর্ষাকাল সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে বর্ষাকাল রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে।

বর্ষাকাল রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। বর্ষাকাল এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। My Favorite Sports essay is written for class- 3, 4, 5, 6 and 7.

বর্ষাকাল অথবা আমার প্রিয় ঋতু

ভূমিকা :

কুলায় কাঁপিছে কাতর কপোত,
দাদুরী ডাকিছে সঘনে।
গুরুগুরু মেঘ গুমরি গুমরি
গরজে গগনে গগনে।

প্রকৃতিবক্ষের ঋতুরঙ্গ-নাট্যশালার দ্বিতীয় অঙ্কে আবির্ভাব ঘটে নবযৌবনা বর্ষার। গ্রীষ্মের দারুণ অগ্নিবাণে বাংলার এ অঞ্চল যখন শুষ্ক, দগ্ধ হয়ে ওঠে, ঠিক তখন নিদাঘ তপ্ত আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত ঢেকে যায় গাঢ় কালো মেঘে। প্রকৃতির বুকে শিহরণ জাগিয়ে শুরু হয় বর্ষাকাল। প্রবল ধারায় চলতে থাকে বর্ষণ। মাটির তলদেশ থেকে তৃণাঙ্কুর মাথা তুলে উঁকি মারে। রুক্ষ, শুষ্ক, শীর্ণ তরুলতার প্রাণে জাগে তারুণ্যের চঞ্চলতা। কদম, কেয়া, কামিনী, জুঁইয়ের আত্মপ্রকাশে চারদিক আমোদিত হয়। নয়নরঞ্জন নবীনা বর্ষার এ হচ্ছে আসল রূপ, অনুপম সৌন্দর্যশ্রী ।

বর্ষার পল্লি : বর্ষা ঋতুতে পল্লিবাংলা ধারণ করে অসাধারণ মূর্তি। দিগন্তহারা জল খেলা করে ধানের ক্ষেতে। ধানের চারাগুলো হাওয়ায় দোলে। পাটের চারাগুলো দাঁড়িয়ে থাকে পানির ওপরে মাথা তুলে। খাল-বিল, নদী-নালায় কলকল শব্দে স্রোত বয়ে যায়। নদীতে পালতোলা নৌকা দ্রুতগতিতে ছুটে চলে, গাছে-গাছে শ্যামলিমার সমারোহ। মেঘমেদুর আকাশে স্নিগ্ধ কান্তি, পুকুরপাড়ে কলম-কেয়া ফুলের চিত্তহারা সুরভির অজস্রতা। সবকিছু মিলে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যাতে মানুষের অন্তর সাড়া না দিয়ে পারে না। বাঙালিচিত্তে এরূপ বর্ষার প্রভাব অসামান্য। তার স্বাক্ষরও পাওয়া যায় বাংলা কাব্যজগতে।

রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-

বাদলের ধারা করে বর কর
আউশের ক্ষেত জলে ভর ভর
কালিমাখা মেঘে ওপারে আঁধার ঘনায়েছে দেখ চাহিরে।
ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।

প্রিয় ঋতু বর্ষাকালের রচনা

শহরে বর্ষা : পল্লির মতো শহরে বর্ষা বিচিত্র রূপ নিয়ে আসে না। শহরে বর্ষা সৃষ্টি করে বিভিন্ন সমস্যা। বিশেষ করে
বাংলাদেশের শহরাঞ্চল অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠার কারণে নিম্নাঞ্চল ডুবে আসে। উন্নত পয়োনিষ্কাশনের অভাবে ড্রেন ছাপিয়ে পানি শহরের রাস্তায় উঠে যায়। ফলে বিঘ্নিত হয় জনজীবন। এ সুযোগে রিকশা ও স্কুটারচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যায় বেড়ে। সবকিছু মিলিয়ে শহরে বর্ষা আসে অভিশাপ হয়ে ।

বর্ষার প্রকৃতি : বর্ষায় বাংলাদেশের নিভৃত পল্লিতে প্রকৃতি এক অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। প্রকৃতির এই রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে পরির মানুষের প্রাত্যহিক জীবনেও বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়। বর্ষা ও বৃষ্টির অবিরল জলধারা বনপথে অপূর্ব ছন্দ ও সুর তোলে। কদমফুল ফুটতে শুরু করে। হিজলের বনে ফুলের মেলা বসে। বর্ষায় বাংলার দিগন্তজোড়া ফসলের ক্ষেত, তরুলতা সকলের ভেতরেই যেন একটা নতুন প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি হয়। সেই আনন্দে তাল-নারকেলের কুঞ্জ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দোলে। কখনো বা বাতাসের স্পর্শে বেঁকে এমন আকার ধারণ করে যে দেখলে মনে হয় গাছপালা সব পত্রপুটে ফটিক জল পান করছে। বর্ষাপ্রকৃতির এই রূপ সত্যিই অপূর্ব।

বর্ষাকালের রচনা ক্লাস ৬-৭

বন্যারূপে বর্ষা : বর্ষার রূপ শুধু কোমল-মধুর নয়, তার মধ্যে কঠোরতাও আছে, আছে রুদ্রমূর্তি। যাকে বলা হয় বন্যা। বিক্ষুশ বর্ষা অর্থাৎ বন্যার ভয়াল রূপ দেখতেও এ দেশের প্রকৃতিপ্রেমিক কবিদের কত না আনন্দ। কোমলতায় কঠোরতায় মিশ্রিত বর্ষার যে রূপ তার সাথে অন্য ঋতুর তুলনাই হয় না। বর্ষার তুলনা শুধু বর্ষাই। বন্যারূপে বর্ষার নির্মমতা অবিশ্বাস্য সত্য। বন্যা তার সাম্যবাদী শক্তি দিয়ে সবকিছু একাকার করে দিয়ে যায়। এখানেই বর্ষার কঠোর রূপের প্রকৃত সার্থকতা।

আরও পড়ুন: আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট অথবা বাংলাদেশের ক্রিকেট

বর্ষার প্রভাব : বর্ষার প্রভাব খুবই ব্যাপক। বর্ষার বৃষ্টিসিক্ত দিনে মানুষ ভুলে যায় তার কৃত্রিমতা। সে গেয়ে ওঠে মনের অজান্তেই প্রিয় কবিতা অথবা গান। তার স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে অতীত স্মৃতির কথা, ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। এমন সময় নজরুলগীতি কিংবা রবীন্দ্রসংগীত মন কেড়ে নেয়।

মনের অজান্তেই হয়তো গেয়ে ওঠে কোনো পথহারা প্রেমিক-

‘শাওনও রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে ।’

উপসংহার : বাংলার বর্ষার রূপ-বৈচিত্র্য অতুলনীয়। বাঙালির প্রাণে বিচিত্র অনুভূতির সঞ্চার করে বর্ষা হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের ঋতু। তাই তো কবিকণ্ঠের পক্তি ফুটে ওঠে প্রতিটি প্রাণে, বলে ওঠে তারা- ‘এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘনঘোর বরিষায়’।

সবশেষে

অনেকেই বর্ষাকাল রচনা pdf চেয়েছেন। বর্ষাকাল রচনা class 8, বর্ষাকাল রচনা ক্লাস ২, বর্ষাকাল অনুচ্ছেদ রচনা, বর্ষাকাল রচনা ৩য় শ্রেণি, বর্ষাকাল রচনা ক্লাস 6, বর্ষাকাল রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট।

Exit mobile version