BCS VIVA Preparation । বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি পরামর্শ
বিসিএস ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে আলাদা প্রস্তুতি প্রয়োজন। জানতে হবে বিসিএস ভাইভা পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর পূর্বের বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা থেকে। বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি নিতে কি বই পড়বেন, বিসিএস ভাইভার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব বিষয় নিয়ে মাই ক্লাসরুমের আজকের আয়োজন। চলুন দেখে নেয়া যাক-
পিএসসি’র নতুন নির্দেশনায় ভাইভা
২০২৩ সালে বিসিএসের ভাইভায় নানা সংস্কার আনে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এসব সংস্কার নির্দেশনা আকারে ভাইভা বোর্ডের পরীক্ষকদের জানিয়েও দেওয়া হয় । ভাইভা বোর্ডে পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকতে পরীক্ষকদের প্রশ্ন করার বিষয়ে একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া মুখস্থনির্ভর প্রশ্ন করতে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে পিএসসি’র চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, ভাইভায় এমন কোনো প্রশ্ন করা যাবে না, যা একজন প্রার্থী মুখস্থ বলে দিতে পারে । কোন দেশের মুদ্রার নাম কী, রাজধানীর নাম কী— এ ধরনের প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকবে ভাইভা বোর্ড। তিনি বলেন, আমরা একজন গ্র্যাজুয়েটের ইন্টারভিউ নেই । কে কোন Background থেকে এসেছে, সেটি দেখা হয় না । যে MBBS পাস করে এসেছে তাকে চিকিৎসাবিদ্যা থেকেই প্রশ্ন করতে হবে বিষয়টি এমন না। আমরা এটি করিও না। আমরা এমন প্রশ্ন করি, যা সবার জন্যই প্রযোজ্য। কে আইন নিয়ে পড়েছে, আর কে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়েছে তা মুখ্য বিষয় না। ভাইভা বোর্ডের প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে পিএসসি
চেয়ারম্যান আরও বলেন, মৌখিক পরীক্ষায় আমরা বানিয়ে প্রশ্ন করি। এমন প্রশ্ন করি, যা বই বা অন্য কোথাও
নেই । এটি মূলত করা হয় প্রার্থী কীভাবে প্রশ্নের উত্তর দেয় সেটি দেখার জন্য । প্রার্থীর বাচনভঙ্গি, Eye contact,
ভাষার ব্যবহার, শব্দ চয়ন, কনফিডেন্স লেভেল ইত্যাদি কেমন, যে উত্তর দিচ্ছে তার মধ্যে যুক্তিতর্ক
রয়েছে কি-না, প্রার্থীর মধ্যে Critical thinking বিষয়টি রয়েছে কি-না— এ বিষয়গুলো দেখা হয় ।
বিসিএস ভাইবা প্রস্তুতি কিভাবে শুরু করবেন?
ভাইভার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। ভাইভা ভাগ্যের ব্যাপার । কাকে, কী বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে কেউ
জানে না । বিসিএসের ভাইভা হয় ২০০ নম্বরের। পরীক্ষায় শতকরা ৫০ নম্বর প্রাপ্তিকে পাস হিসেবে ধরা হয়। ভাইভায় পাস নম্বর পেলে ক্যাডার তালিকায় আসবে কি-না নিশ্চিত না হলেও নন-ক্যাডারে নাম থাকে। এর ফলে অন্য | সরকারি চাকরিতে সুপারিশ পাওয়ার সুযোগ থাকে।
ভাইভার জন্য গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রশ্নের জবাব দিবেন, নিজের উত্তরের ব্যাপারে পরিষ্কার থাকবেন হাসিমুখে
থাকবেন । সবার সঙ্গে Eye Contact রাখবেন কোনো | প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সময়ক্ষেপণ না করে
আন্তরিকতার সঙ্গে Sorry বলবেন আনুগত্যশীল ও বিনয়ী মানসিকতা বজায় রাখবেন To the point উত্তর
দেবার চেষ্টা করবেন কক্ষে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকবেন। Manner মেনে চলবেন ।
যেমন— অনুমতি নেওয়া, সালাম দেওয়া, নম্রভাবে হাঁটা | ইত্যাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান বা সদস্য নারী হলেও
স্যার সম্বোধন করবেন গলার স্বর কখনো অধিক উচ্চ বা অধিক নিম্ন যেন না হয়, standard level বজায়
রাখবেন বাংলা প্রশ্ন বাংলায় উত্তর, ইংরেজি প্রশ্নের ইংরেজিতে উত্তর এবং ইংরেজি বাংলা মিশ্রিত প্রশ্নের
উত্তর মিশ্রিতভাবে দিবেন। অনেক সময় ইংরেজি প্রশ্নের উত্তর বাংলায় দিতে চাইলে অনুমতি নিয়ে নিবেন।
যথাসম্ভব আঞ্চলিক ভাষা এড়িয়ে যাবেন কথা বলার সময় হাত নাড়াবেন না এবং পা ঝাঁকাবেন না । মাথা প্রয়োজন অনুযায়ী move করবেন। চেয়ারে হেলান নিয়ে বসবেন না।
বিসিএস ভাইভার জন্য ড্রেসআপ
ছেলেরা অবশ্যই ফরমাল হয়ে যাবেন । হালকা রঙের (সাদা/আকাশি/এক কালার) ফুল হাতা শার্ট, কালো/
নেভি ব্লু প্যান্ট, টাই, ফরমাল জুতা, জুতার কালারের সঙ্গে মিলিয়ে বেল্ট। শার্টের পকেটে একটি কলম
রাখবেন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্লেজার পরতে পারেন। আর শীতকাল হলে সেটা আবশ্যক। মেয়েদের ক্ষেত্রে
মার্জিত শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ, যেটা মানানসই এবং পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেটা পরবেন।
ভাইভার গেটআপ কেমন হবে-
ছেলেরা অনেক ক্ষেত্রে দাড়ি নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যান। যদি সুন্নতি দাড়ি হয় কোনো সমস্যা নেই,
অন্যথায় ক্লিন শেভ বাঞ্ছনীয়। ড্রেস ভালোভাবে আয়রন করা থাকলে স্মার্ট দেখায়। টাই পরলে বেল্টের
হালকা ওপর পর্যন্ত রাখবেন। শার্ট ফুলহাতা থাকবে। স্যুট পরলে স্যুটের হাতার বাইরে শার্টের হাতা দেখা
যাবে । মেয়েরা অতিরিক্ত অলংকার পরবেন না, বেশি মেকআপের প্রয়োজন নেই ।
শেষকথা
চাকরির ভাইভা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা আপনাকে আপনার দক্ষতা, জ্ঞান এবং ব্যক্তিত্ব প্রদর্শন করার সুযোগ করে দেয়। ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া আপনাকে সফল হতে সাহায্য করতে পারে। সরকারি চাকরির জন্য ভাইভা ও প্রশ্নোত্তর, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ এর ভাইভা প্রশ্নোত্তর সহ বিগত সালের ভাইভা অভিজ্ঞতাগুলো দেখুন। থাকুন মাই ক্লাসরুমের সাথে।