বাংলা ব্যাকরণ

কারক কাকে বলে? কারক নির্ণয় উদাহরন। কারক চেনার উপায়

Table of Contents

কারক কাকে বলে?

মূলত ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনামের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। কারক সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়ে থাকে।

কারক কত প্রকার ও কি কি?

১. কর্তৃকারক
২. কর্মকারক
৩. করণ কারক
৪. সম্প্রদান কারক
৫. অপাদান কারক
৬. অধিকরণ কারক


কারকের সংজ্ঞা বিস্তারিত

কারক হলো বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত শব্দ। পদগুলো ক্রিয়াপদের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে পারলেই তারা কারক হয়।

সংজ্ঞা:
‘কারক’ শব্দের অর্থ হলো, যা ক্রিয়া সম্পাদন করে। ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যস্থিত বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের অন্বয় বা সম্পর্ককে কারক বলে।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন:

“ক্রিয়ার সহিত যে পদের কোন অন্বয় থাকে, তাহাকে কারক বলে।”

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন:

“বাক্যের অন্তর্গত ক্রিয়া-পদের সহিত নাম-পদের বা বিশেষ্যের অন্বয় বা সম্বন্ধকে, সংস্কৃত ব্যাকরণকারগণের মতে, কারক (Case) বলে।”


কারক সম্পর্কের বিশ্লেষণ

বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের বিভিন্ন সম্পর্ক থাকে। উদাহরণস্বরূপ:
বাক্য:
“সম্রাট আকবর প্রতি শুক্রবার কোষাগার থেকে নিজ হাতে দরিদ্রদের অর্থ ও বস্ত্র দিতেন।”

ক্রিয়াপদ: দিতেন
ক্রিয়াপদকে প্রশ্ন করে বিভিন্ন কারক সম্পর্ক পাওয়া যায়:

কারক নির্ণয় উদাহরন

প্রশ্নউত্তরকারক সম্পর্ক
কে দিতেন?সম্রাট আকবরকর্তৃকারক
কী দিতেন?অর্থ ও বস্ত্রকর্মকারক
কিসের দ্বারা দিতেন?নিজ হাতেকরণ কারক
কাদের দিতেন?দরিদ্রদেরসম্প্রদান কারক
কোথা থেকে দিতেন?কোষাগার থেকেঅপাদান কারক
কখন দিতেন?প্রতি শুক্রবারঅধিকরণ কারক

কর্তা কারক

ক্রিয়া যার দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে কর্তা কারক বলে। বাক্যের কর্তা বা উদ্দেশ্যই কর্তা কারক। কর্তা কারক সাধারণত বিভক্তি যুক্ত হয় না।
উদাহরণ:

  • আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম।
  • অনেকগুলো বন্য হাতি বাগান নষ্ট করে দিল।

কর্তা কারকে কখনো কখনো -এ বিভক্তি যুক্ত হয়।
উদাহরণ:

  • পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়।

কর্ম কারক

যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে কর্ম কারক বলে। বাক্যের মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম উভয় ধরনের কর্মই কর্ম কারক হিসেবে গণ্য হয়। সাধারণত মুখ্য কর্ম কারকে বিভক্তি হয় না, তবে গৌণ কর্ম কারকে ‘-কে’ বিভক্তি হয়।
উদাহরণ:

  • সে রোজ সকালে এক প্লেট ভাত খায়।
  • শিক্ষককে জানাও।
  • অসহায়কে সাহায্য করো।

কাব্যভাষায় কর্ম কারকে ‘-রে’ বিভক্তি হয়।
উদাহরণ:

  • আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা।

করণ কারক

যার দ্বারা বা যে উপায়ে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘দ্বারা’, ‘দিয়ে’, ‘কর্তৃক’ ইত্যাদি অনুসর্গ যুক্ত হয়।
উদাহরণ:

  • ভেড়া দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়।
  • চাষিরা ধারালো কাস্তে দিয়ে ধান কাটছে।

অপাদান কারক

যে কারকে ক্রিয়ার উৎস নির্দেশ করা হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘হতে’, ‘থেকে’ ইত্যাদি অনুসর্গ শব্দের পরে বসে।
উদাহরণ:

  • জমি থেকে ফসল পাই।
  • কাপটা উঁচু টেবিল থেকে পড়ে ভেঙে গেল।

অধিকরণ কারক

যে কারকে স্থান, কাল, বিষয় ও ভাব নির্দেশিত হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘-এ’, ‘-য়’, ‘-তে’ ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।
উদাহরণ:

  • বাবা বাড়িতে আছেন।
  • বিকাল পাঁচটায় অফিস ছুটি হবে।
  • রাজীব বাংলা ব্যাকরণে ভালো।

সম্বন্ধ কারক

যে কারকে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্ক নির্দেশিত হয়, তাকে সম্বন্ধ কারক বলে। এই কারকে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পরোক্ষ। এই কারকে শব্দের সঙ্গে ‘-র’, ‘-এর’, ‘-য়ের’, ‘-কার’, ‘কের’ ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।
উদাহরণ:

  • ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না।
  • আমার জামার বোতামগুলো একটু অন্য রকম।
  • তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে চলতে হতো মাইলের পর মাইল।

কারক নির্ণয় গুরুত্বপূর্ন নিয়ম

  1. অপ্রাণিবাচক শব্দের শেষে ‘কে’ বা ‘রে’ বিভক্তি যোগ না হয়ে শূন্য (০) বিভক্তি হয়।
    উদাহরণ: বই দাও।
  2. স্বরান্ত শব্দের পরে ‘এ’ বিভক্তির রূপ হয় ‘য়’ বা ‘য়ে’। ‘এ’ স্থানে ‘তে’ বিভক্তিও যোগ হতে পারে।
    উদাহরণ:
    • গাঁ + এ = গাঁয়ে
    • ঘোড়া + এ = ঘোড়ায়
    • বাড়ি + তে = বাড়িতে
  3. অ-কারান্ত ও ব্যঞ্জনান্ত শব্দের পরে প্রায়ই প্রথমায় ‘রা’ স্থানে ‘এরা’ হয় এবং ষষ্ঠী বিভক্তির ‘র’ স্থলে ‘এর’ যোগ হয়।
    উদাহরণ:
    • লোক + রা = লোকেরা
    • বিদ্বান + রা = বিদ্বানেরা
    • মানুষ + এর = মানুষের
      তবে খাঁটি বাংলা শব্দের ক্ষেত্রে একবচনে সাধারণত ‘র’ যোগ হয়, ‘এর’ যোগ হয় না।
      উদাহরণ: বড়র, কাকার ইত্যাদি।

কর্তৃকারক নির্নয় নিয়ম

যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদন করে বা অন্যকে দিয়ে করায়, তাকে কর্তৃকারক বলে। মনে রাখতে হবে, কর্তৃকারকই হলো বাক্যের প্রধান পদ এবং এই পদই বাক্যের উদ্দেশ্য।

কর্তৃকারক চেনার সহজ উপায়:

সমাপিকা ক্রিয়াকে ‘কে’ বা ‘কারা’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা-ই কর্তৃকারক।
উদাহরণ:

  • বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।
    • ক্রিয়া: খেয়েছে
    • প্রশ্ন: কে খেয়েছে?
    • উত্তর: বুলবুলিতে (কর্তৃকারক)
  • মেয়েরা ফুল তোলে।
    • ক্রিয়া: তোলে
    • প্রশ্ন: কারা তোলে?
    • উত্তর: মেয়েরা (কর্তৃকারক)

কর্তৃকারকের প্রকারভেদ:

বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য অনুযায়ী কর্তৃকারক চার প্রকার।

  1. মুখ্য কর্তা: নিজে ক্রিয়া সম্পাদনকারী।
    উদাহরণ: মেয়েরা ফুল তুলছে।
  2. প্রযোজক কর্তা: অন্যকে দিয়ে ক্রিয়া করানো।
    উদাহরণ: মা ছেলেকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
  3. প্রযোজ্য কর্তা: অন্যের প্রেরণায় ক্রিয়া সম্পাদনকারী।
    উদাহরণ: মা ছেলেকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
    • এখানে ছেলের প্রেরণায় মা চাঁদ দেখছেন।
  4. ব্যতিহার কর্তা: একই বাক্যে দুটি কর্তা।
    উদাহরণ: রাজায়-রাজায় যুদ্ধ হয়।

কর্মকারক

যাকে আশ্রয় বা অবলম্বন করে ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে কর্মকারক বলে।

কর্মকারক চেনার উপায়:

ক্রিয়াকে ‘কী’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা কর্মকারক।
উদাহরণ:

  • ছাত্ররা বই পড়ে।
    • ক্রিয়া: পড়ে
    • প্রশ্ন: কী পড়ে?
    • উত্তর: বই (কর্মকারক)
  • বালকটি ভাত খায়।
    • ক্রিয়া: খায়
    • প্রশ্ন: কী খায়?
    • উত্তর: ভাত (কর্মকারক)

কর্মকারকের প্রকারভেদ:

  1. মুখ্যকর্ম: মুখ্য ক্রিয়া সম্পাদনের বস্তুকে বোঝায়।
    উদাহরণ: মা শিশুকে চাঁদ দেখান।
    • মুখ্যকর্ম: চাঁদ
  2. গৌণকর্ম: গৌণ ক্রিয়া সম্পাদনের বস্তুকে বোঝায়।
    উদাহরণ: মা শিশুকে চাঁদ দেখান।
    • গৌণকর্ম: শিশু
  3. উদ্দেশ্য কর্ম ও বিধেয় কর্ম:
    • উদ্দেশ্য কর্ম: মূল ক্রিয়া।
    • বিধেয় কর্ম: পরিপূরক ক্রিয়া।
      উদাহরণ: দুধকে মোরা দুগ্ধ বলি।
      • উদ্দেশ্য কর্ম: দুধকে
      • বিধেয় কর্ম: দুগ্ধ
  4. সমধাতুজ কর্ম: কর্ম ও ক্রিয়া একই ধাতু থেকে উৎপন্ন।
    উদাহরণ: খেলা খেললে।
    • এখানে ‘খেলা’ সমধাতুজ কর্ম।

এভাবে বাক্যের কারক সম্পর্ক বুঝতে হলে, ক্রিয়া ও সংশ্লিষ্ট শব্দের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে হবে।

কর্মকারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ

শূন্য বিভক্তি:

  1. আকাশে মেঘ করেছে।
  2. ডাক্তার ডাক।
  3. ঘোড়া গাড়ি টানে।
  4. আমি কলম কিনে আনলাম।

দ্বিতীয়া বিভক্তি:

  • ছেলেকে ডাক।
  • পাখিটাকে তীর মেরো না।
  • দুষ্টকে চাবুক মার।

ষষ্ঠী বিভক্তি:

  • মাতাপিতার সেবা কর।
  • তোমায় কে মেরেছে?

সপ্তমী বিভক্তি:

  • আকাশ মেঘে ছেয়েছে।
  • ফুলে ফুলে ঘর ভরেছে।
  • তুমি আমার কলমে লেখ।

করণ কারক

সংজ্ঞা:
‘করণ’ শব্দটির অর্থ হলো যন্ত্র, সহায়ক বা উপায়। কর্তা যার সাহায্যে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণ কারক বলে।

উদাহরণ:

  1. বালকটি হাত দিয়ে ভাত খায়।
  2. শিক্ষক খড়ি দিয়ে অংক করছেন।

প্রশ্ন করে বের করুন:

  • কী দিয়ে খায়? উত্তর: হাত দিয়ে।
  • কী দিয়ে অংক করছেন? উত্তর: খড়ি দিয়ে।

এখানে ‘হাত’‘খড়ি’ করণ কারক।

করণ কারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ

শূন্য বিভক্তি:

  • তারা বল খেলে।

তৃতীয়া বিভক্তি:

  • কলম দিয়ে লেখা হয়।
  • লাঙ্গল দ্বারা জমি চাষ করা হয়।

পঞ্চমী বিভক্তি:

  • আমা হতে এ কাজ হবে না সাধন।

ষষ্ঠী বিভক্তি:

  • কালির দাগ মোছে না।

সপ্তমী বিভক্তি:

  • আকাশ মেঘে ছেয়েছে।
  • টাকায় কি না হয়।

সম্প্রদান কারক

সংজ্ঞা:
যাকে যত্নসহকারে বা ত্যাগের মাধ্যমে কোনো কিছু দান করা বোঝায়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে।

উদাহরণ:

  1. ভিখারিকে পয়সা দাও।
  2. দরিদ্রকে ধন দাও।

এখানে ‘ভিখারিকে’‘দরিদ্রকে’ সম্প্রদান কারক।

সম্প্রদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ

শূন্য বিভক্তি:

  • দিব তোমা শ্রদ্ধা-ভক্তি।

চতুর্থী বিভক্তি:

  • ভিখারিকে ভিক্ষা দাও।

ষষ্ঠী বিভক্তি:

  • দেশের জন্য প্রাণ দাও।

সপ্তমী বিভক্তি:

  • দীনে দয়া কর।

অপাদান কারক

সংজ্ঞা:
যা থেকে কোনো কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত, বা রক্ষিত হয়, তাকে অপাদান কারক বলে।

উদাহরণ:

  1. আমি গাছ থেকে আম পাড়লাম।
  2. সে হাঁড়ি হতে ভাত বের করল।

অপাদান কারকের প্রকারভেদ:

  • স্থানবাচক অপাদান: তিনি রাজশাহী থেকে এসেছেন।
  • কালবাচক অপাদান: আজ সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে।
  • দূরত্ববাচক অপাদান: ঢাকা থেকে ষোল কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জ।
  • অবস্থানবাচক অপাদান: বারান্দা থেকে দেখলাম।
  • তারতম্যবাচক অপাদান: বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়।

অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ

শূন্য বিভক্তি:

  • ট্রেন ঢাকা ছাড়ল।

দ্বিতীয়া বিভক্তি:

  • বাবাকে ভয় নেই।

তৃতীয়া বিভক্তি:

  • নল দিয়ে জল আসে।

ষষ্ঠী বিভক্তি:

  • যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে সন্ধ্যে হয়।

সপ্তমী বিভক্তি:

  • দুধে দই হয়।
  • লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।

অধিকরণ কারক

যে স্থানে বা যে সময়ে ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, “নদীতে মাছ থাকে”, এখানে ‘নদীতে’ অধিকরণ কারক। অধিকরণ কারক বলতে ক্রিয়ার আধার বোঝায়, যা স্থান, কাল, পাত্র বা বিষয়ের মাধ্যমে বুঝানো হয়। বাক্যের ক্রিয়াপদটিকে ‘কখন’, ‘কোথায়’, ‘কোন বিষয়ে’, ‘কিসে’ প্রভৃতি প্রশ্ন করে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা-ই অধিকরণ কারক।

অধিকরণ কারকের প্রকারভেদ

অধিকরণ কারক তিন প্রকার।

কালাধিকরণ:

ক্রিয়া যে কালে ঘটে বা সম্পাদিত হয়, তাকে কালাধিকরণ বলা হয়। উদাহরণ:

আধারাধিকরণ

যে অধিকরণে ক্রিয়ার আধার বা স্থান নির্দেশ করে, তাকে আধারাধিকরণ বলা হয়। আধারাধিকরণ তিন ভাগে বিভক্ত:

ক. ঐকদেশিক: বিরাট স্থানের কোনো একটি অংশে ক্রিয়া সম্পাদিত হলে তাকে ঐকদেশিক আধারাধিকরণ বলা হয়।
যেমন:

বনে বাঘ আছে। (বনের যে কোনো এক অংশে)

আকাশে চাঁদ উঠেছে। (আকাশের কোনো এক অংশে)

পুকুরে মাছ আছে। (পুকুরের যে কোনো এক স্থানে)

ঘাটে নৌকা বাঁধা আছে (ঘাটের কাছে)।

খ. অভিব্যাপক: উদিষ্ট বস্তু যদি সমগ্র আধার (স্থান) ব্যস্ত করে বিরাজমান থাকে, তবে তাকে অভিব্যাপক আধারাধিকরণ বলা হয়।
যেমন:

তিলে তৈল আছে। (তিলের সারা অংশব্যাপী)

নদীতে পানি আছে। (নদীর সমস্ত অংশ ব্যাপ্ত করে)

গ. বৈষয়িক: কোনো বিষয় বা ব্যাপারে ক্রিয়া সম্পাদিত হলে তাকে বৈষয়িক অধিকরণ বলা হয়।
যেমন:

মধুমিতা বাংলায় দুর্বল, কিন্তু ইংরেজিতে খুব ভালো।

রাকিব অঙ্কে কাঁচা, কিন্তু ব্যাকারণে ভালো।

ভাবাধিকরণ:

যদি কোনো ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য অন্য ক্রিয়ার কোনো রূপভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তবে তাকে ভাবাধিকরণ বলা হয়। ভাবাধিকরণে সব সময় সপ্তমী বিভক্তির প্রয়োগ হয়, তাই একে ‘ভাবে সপ্তমী’ বলা হয়। উদাহরণ:

সুর্যোদয়ে অন্ধকার দূরীভূত হয়।

কান্নায় শোক মন্দীভূত হয়।

ভোরে সূর্য উঠলে পদ্মফুল ফোটে।

কান্নায় বেদনা কমে।

অধিকরণ কারকে বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ

শূন্য বিভক্তি:

  • সে বাড়ি আসবে।
  • সন্ধ্যার সময় এসো।

দ্বিতীয়া বিভক্তি:

  • আজকে আমি যাব।
  • ঘরকে যাও।

তৃতীয়া বিভক্তি:

  • পথ দিয়ে চলো।

পঞ্চমী বিভক্তি:

  • ছাদ থেকে বাজার দেখা যায়।
  • বাড়ি থেকে তাকিয়ে দেখ।

সপ্তমী বিভক্তি:

  • তিনি শোকে পাগল হলেন।
  • আমরা বিকালে বেড়াতে যাব।
  • সূর্যোদয়ে অন্ধকার দূরীভূত হয়।
  • জলে কুমির ডাঙায় বাঘ।
  • প্রভাতে সূর্য ওঠে।
  • তার বাড়িতে সব আছে।
  • কান্নায় শোক কমে।
  • তারা ঢাকায় গেলেন।

সম্বন্ধ পদ

বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে যে এক বা একাধিক বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকে না, তবে বাক্যের অন্য কোনো নামপদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে, তাকে বা তাদের সম্বন্ধ পদ বলা হয়। উদাহরণ:

  • রাতুলের খাতাটি এখানে রাখো।

এখানে ‘রাতুলের’ শব্দটির ক্রিয়ার সঙ্গে কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই, কিন্তু ‘খাতাটি’ বিশেষ্য পদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তাই ‘রাতুলের’ পদটি সম্বন্ধ পদ। বাংলায় সম্বন্ধ পদ অকারক পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

সম্বন্ধ পদের বিভক্তি

সম্বন্ধ পদে একবচনে ‘র’ এবং ‘এর’ এই দুটিই বিভক্তি। স্বরান্ত শব্দ হলে সাধারণত ‘র’ বিভক্তি এবং ব্যঞ্জনান্ত শব্দ হলে ‘এর’ বিভক্তি যুক্ত হয়। উদাহরণ:

  • : মধুর দোকান, শিফার জামা
  • এর: সাগরের জল, দীপের বন্ধু

কখনো কখনো ‘য়ের’, ‘কের’ বা ‘কার’ বিভক্তিও যুক্ত হয়। উদাহরণ:

  • ‘য়ের’: মায়ের কোল
  • ‘কের’: আজকের কাগজ পড়েছ?

বহুবচনে সম্বন্ধ পদের বিভক্তিগুলো হলো— ‘দের’, ‘এদের’ এবং ‘দিগের’। উদাহরণ:

  • ‘দের’: সুমনদের ঘরে নতুন ফ্রিজ এসেছে।
  • ‘এদের’: রামেদের বাড়িতে দুর্গাপূজা হয়।
  • ‘দিগের’: বালকদিগের সাথে বালিকাদিগের আবৃত্তি প্রতিযোগিতা হবে।

সম্বন্ধ পদের প্রকারভেদ

সম্বন্ধ পদ নানা প্রকারের হতে পারে এবং তা বহু বিচিত্র অর্থ প্রকাশ করে। এখানে বিভিন্ন প্রকারের সম্বন্ধ পদের আলোচনা করা হলো:

  1. অধিকার সম্বন্ধ:
    • রাজার সিংহাসন
    • কৃষকের জমি
  2. জন্ম-জনক সম্বন্ধ:
    • গাছের ফল
    • পুকুরের মাছ
  3. কার্যকারণ সম্বন্ধ:
    • পাপের ফল
    • গাছের ছায়া
    • শোকের কান্না
    • আগুনের তাপ
  4. উপাদান সম্বন্ধ:
    • রূপার থালা
    • কাঠের ঘোড়া
    • সোনার বাটি
    • মোমের পুতুল
  5. গুণ সম্বন্ধ:
    • মধুর মিষ্টতা
    • নিমের তিক্ততা
  6. গতি সম্বন্ধ:
    • ঘোড়ার গাড়ি
    • পালের নৌকা
  7. ক্রম সম্বন্ধ:
    • সাতের ঘর
    • আটের পৃষ্ঠা
  8. ব্যাপ্তি সম্বন্ধ:
    • সাতদিনের কাজ
    • বর্ষাকালের বৃষ্টি
    • আলোর ঝরনা
    • জ্ঞানের আলো
  9. অঙ্গ সম্বন্ধ:
    • হাতের নখ
    • গরুর শিং
    • গাছের ডাল
    • কুকুরের লেজ
  10. অব্যয় সম্বন্ধ:
    • জোরের সঙ্গে
    • গাছের ভিতরে
  11. অবলম্বন সম্বন্ধ:
    • দুর্বলের বল
    • নিরাশ্রয়ের আশ্রয়
  12. বিশেষণ সম্বন্ধ:
    • আশার বাণী
    • সুখের দিন
  13. ব্যবসায় সম্বন্ধ:
    • পাটের দালাল
    • আদার ব্যাপারী
  14. অসম্ভব সম্বন্ধ:
    • ঘোড়ার ডিম
    • কাঁঠালের আমসত্ত্ব
  15. কৃত-সম্বন্ধ:
    • রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’
    • নজরুলের ‘অগ্নিবীণা’
  16. কারক সম্বন্ধ:
    ক) কর্তৃ সম্বন্ধ:
    • রাজার হুকুম
      খ) কর্ম সম্বন্ধ:
    • বিজ্ঞানের চর্চা
      গ) করণ সম্বন্ধ:
    • লাঠির ঘা
    • চোখের দেখা
    • কলমের খোঁচা
      ঘ) অপাদান সম্বন্ধ:
    • চোখের জল
    • বৃষ্টির পানি
    • ভূতের ভয়
      ঙ) অধিকরণ সম্বন্ধ:
    • খাঁচার পাখি
    • পূজার ছুটি
    • পদ্মার ইলিশ

সম্বোধন পদ

‘সম্বোধন’ কথাটির অর্থ হলো বিশেষভাবে ডাকা। যেসব বিশেষ্যপদ দিয়ে কাউকে সম্বোধন বা আহ্বান করা বোঝায়, তাদের সম্বোধন পদ বলে। উদাহরণ:

  • হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছো মহান।
  • ও ভাই, তোমাকে দিয়ে তো কাজটা হবে না দেখছি।
  • ও বাবারা, তোমরা কি শুনতে পাচ্ছ না?
  • বন্ধুগণ! আজকের সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • ওহে মাঝি, আমাকে পার কর।
  • শাহেদ, এদিকে আসো।

সম্বোধন পদ কারক নয় কেন?

সম্বোধন পদ সাধারণত বাক্যের প্রথমে বসে, কখনো-কখনো পরেও বসে। এই পদ দিয়ে কখনো কর্তাকে, কখনো গৌণ কর্মকে, আবার কখনো বা করণবাচক ব্যক্তিকে নির্দেশ করা হয়। সম্বন্ধ পদের মতো সম্বোধন পদও কারক নয়। যেমন: ওহে মাঝি, আমাকে পার কর।
এ বাক্যে ‘ওহে’ সম্বোধন পদের সঙ্গে পার কর ক্রিয়াপদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই সম্বোধন পদ কারক নয়, কারণ ক্রিয়াপদের সঙ্গে এর কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।


সম্বোধন পদের বিভক্তি ও বিরামচিহ্ন

সম্বোধন পদ সাধারণভাবে বিভক্তিহীন। তবে, বহুবচন পদে কখনো কখনো ‘রা’ বা ‘গুলো’ বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। একবচনেও কখনো কখনো ব্যবহৃত হয়। সম্বোধন পদের সঙ্গে কর্তা বা বাক্যের অন্য কোনো পদেরই প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকে না, তাই এটি অকারক পদ।

বাক্যের মধ্যে সম্বোধন পদ কিছু বিশেষ বিরামচিহ্নের দাবি করে। বাক্যের প্রথমে সম্বোধন পদ থাকলে সেই পদের পরে একটি কমা (,) বা বিস্ময়সূচক চিহ্ন (!) বসে। সম্বোধন পদের আগে বা পরে সাধারণত অ, অয়ি, অহে, আরে, ও, ওগো, ওলো, ওহে, হে, হ্যাঁ, হ্যাঁরে ইত্যাদি অব্যয় পদ বসে।


বিভিন্ন কারকে শূন্য বিভক্তি

  1. কর্তৃকারক:
    • মধুমিতা স্কুলে যায়।
  2. কর্মকারক:
    • গরু ঘাস খায়।
  3. করণ কারক:
    • ঘোড়াকে চাবুক মার।
  4. সম্প্রদান কারক:
    • দিব তোমা শ্রদ্ধাভক্তি।
  5. অপাদান কারক:
    • গাড়ি স্টেশন ছাড়ে।
  6. অধিকরণ কারক:
    • আমি ঢাকা যাব।

বিভিন্ন কারকে সপ্তমী বা ‘এ’ বিভক্তি

  1. কর্তৃকারক:
    • পাগলে কী না বলে।
  2. কর্মকারক:
    • এ অধীনে দায়িত্বভার অর্পণ করুন।
  3. করণ কারক:
    • এ কলমে ভালো লেখা হয়।
  4. সম্প্রদান কারক:
    • দানে দয়া কর।
  5. অপাদান কারক:
    • তিলে তেল হয়।
  6. অধিকরণ কারক:
    • এ দেহে প্রাণ নেই।

অনুশীলনমূলক বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

  1. বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে কোন পদের সম্পর্ককে কারক বলে?
    ক) বিশেষ্য ও বিশেষণ
    খ) বিশেষ্য ও সর্বনাম
    গ) বিশেষ্য ও অনুসর্গ
    থ) ক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক থাকা পদের নাম কারক
    সঠিক উত্তর: খ) বিশেষ্য ও সর্বনাম
  2. ক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই, তেমন কারকের নাম কী?
    ক) সম্বন্ধ
    খ) অপাদান
    গ) কর্ম
    ঘ) অধিকরণ
    সঠিক উত্তর: ক) সম্বন্ধ
  3. বাংলা ভাষায় কারকের সংখ্যা কয়টি?
    ক) চার
    খ) পাঁচ
    গ) তিন
    ঘ) ছয়
    সঠিক উত্তর: ঘ) ছয়
  4. ‘আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম’- বাক্যটিতে ‘আমরা’ কোন কারক?
    √ ক) কর্তা
    খ) কর্ম
    গ) করণ
    ঘ) অধিকরণ
    সঠিক উত্তর: ক) কর্তা

কারক বিভক্তি MCQ

  1. যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া ‘সম্পাদন করে’, তাকে কোন কারক বলে?
    ক) কর্তা
    খ) কর্ম
    গ) করণ
    ঘ) অপাদান
    সঠিক উত্তর: খ) কর্ম
  2. ‘শিক্ষককে জানাও’- এই বাক্যে ‘শিক্ষককে’ কোন কারক?
    ক) অধিকরণ
    √ খ) কর্ম
    গ) অপাদান
    ঘ) কর্তা
    সঠিক উত্তর: খ) কর্ম
  3. ‘ভেড়া দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়’- এই বাক্যে ‘ভেড়া দিয়ে’ কোন কারক?
    ক) সম্বন্ধ
    খ) করণ
    গ) কর্তা
    ঘ) অপাদান
    সঠিক উত্তর: খ) করণ
  4. ‘জমি থেকে ফসল পাই’- বাক্যটিতে ‘জমি থেকে’ কোন কারক?
    ক) কর্তা
    √ খ) অপাদান
    গ) কর্ম
    ঘ) অধিকরণ
    সঠিক উত্তর: খ) অপাদান
  5. কোন কারকে মূলত ক্রিয়ার স্থান, সময় ইত্যাদি বোঝায়?
    ক) অপাদান
    √ খ) অধিকরণ
    গ) সম্বন্ধ
    ঘ) কর্ম
    সঠিক উত্তর: খ) অধিকরণ

সকল ক্লাসের জন্য কারক ও বিভক্তি

  1. ‘গাছের ফল পেকেছে’- এখানে কোন বিভক্তির প্রয়োগ হয়েছে?
    ক) -র
    খ) -এর
    গ) -তে
    ঘ) -য়
    সঠিক উত্তর: খ) -এর
  2. ‘কর্তা কারকে ‘-এ’ বিভক্তির উদাহরণ কোনটি?
    √ ক) পাগলে কী না বলে।
    খ) গরু ঘাস খায়।
    গ) আমার দাদা বাড়ি যাচ্ছেন।
    ঘ) এ কথাগুলি সত্য।
    সঠিক উত্তর: ক) পাগলে কী না বলে।
  3. বাক্যের কর্ম কত প্রকার হয়ে থাকে?
    ক) দুই
    খ) তিন
    গ) চার
    ঘ) পাঁচ
    সঠিক উত্তর: ক) দুই
  4. সাধারণত মুখ্য কর্মকারকে কোনটি যুক্ত হয় না?
    ক) অতীত
    খ) ভবিষ্যত
    √ গ) বিভক্তি
    ঘ) বর্তমান
    সঠিক উত্তর: গ) বিভক্তি
  5. গৌণ কর্ম কারকে কোন বিভক্তির রূপ হয়?
    ক) -এ
    √ খ) -কে
    গ) -তে
    ঘ) -য়
    সঠিক উত্তর:√ খ) -কে
  6. কোন কারকে দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক ইত্যাদি অনুসর্গ যুক্ত হয়?
    √ ক) করন কারক
    খ) কর্ম কারক
    গ) অধিকার কারক
    ঘ) সম্বন্ধ কারক
    সঠিক উত্তর: √ ক) করন কারক
  7. ‘অনেকগুলো শেয়াল আখের খেত নষ্ট করে দিল।’- বাক্যে দাগ দেওয়া অংশটুকু কোন কারকে কোন বিভক্তি?
    ক) কর্মে শূন্য
    √ খ) কর্তায় শূন্য
    গ) অধিকরণে ৭মী
    ঘ) করণে ৭মী
    সঠিক উত্তর: √ খ) কর্তায় শূন্য

বিগত সালে আসা কারক প্রশ্নোত্তর

  1. কর্তা কারকে কখনো কখনো কোন বিভক্তি যুক্ত হয়?

    ক) -য়ের √ খ) -এ
    গ) -র
    ঘ) -তে
    সঠিক উত্তর: √ খ) -এ
  2. ‘গাভীতে দুধ দেয়’– ‘গাভীতে’ কোন্ কারকে কোন্ বিভক্তি?
    ক) করণে ৭মী
    খ) কর্তৃকারকে ৭মী
    গ) কর্মে শূন্য
    ঘ) অধিকরণে ৭মী
    সঠিক উত্তর: খ) কর্তৃকারকে ৭মী
  3. ‘দরিদ্রকে সাহায্য করো।’- বাক্যটিতে কোন কারক বিদ্যমান?
    √ ক) কর্ম
    খ) করণ
    গ) অপাদান ৭মী
    ঘ) অধিকরণে ৭মী
    সঠিক উত্তর: √ ক) কর্ম
  4. কোন কারকে সাধারণত হতে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি অনুসর্গ শব্দের পরে বসে?
    ক) কর্মকারক
    খ) কর্তৃকারক
    গ) অধিকরন
    ঘ) অপাদান কারক
    সঠিক উত্তর: ঘ) অপাদান কারক

M@mun

Hasan Al Mamun is a dedicated teacher, blogger, and YouTuber who has achieved great success in his field. He was born to parents Shahjahan Topodar and Masrura Begum and grew up with a love for learning and exploration. After completing his Bachelor's degree, Hasan pursued a Master's degree in Accounting and excelled in his studies. He then began his career as a teacher, sharing his knowledge and passion for accounting with his students. In addition to teaching, Hasan is also an avid blogger and YouTuber, creating content that educates and inspires his viewers. His YouTube channel, "My Classroom," has grown to an impressive 240,000 subscribers, earning him a silver play button from YouTube. Hasan's interests include book reading, travelling, gardening, and writing, and he often incorporates these passions into his work. He strives to create an honest and supportive community in all of his endeavors, encouraging his followers to learn and grow alongside him. Overall, Hasan Al Mamun is a talented and dedicated individual who has made a significant impact in the fields of education, blogging, and content creation.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button