আমার প্রিয় কবি রচনা ১০ ১৫ ২০ পয়েন্ট Class 6 7 8 9 10 SSC HSC
আমার প্রিয় কবি রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় আমার প্রিয় কবি রচনা না দিয়ে বলা হয় আমার প্রিয় কবি সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে আমার প্রিয় কবি সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে আমার প্রিয় কবি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রচনাটি ।
আমার প্রিয় কবি রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। আমার প্রিয় কবি এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। Mukti judder itihas essay is written for class- 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10
আমার প্রিয় কবি রচনা: বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম
ভূমিকা
আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার কবিতা আমাকে গভীরভাবে অভিভূত করে এবং তার লেখনী আমাকে অসীম প্রেরণা দেয়। বাংলা সাহিত্যে এক ধূমকেতুর মতো তার আবির্ভাব হয়েছিল। অন্যায়, অবিচার এবং শোষণের বিরুদ্ধে তার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে প্রবল প্রতিবাদ। এই কবি জাতিকে সংগ্রাম ও বিপ্লবের কথা শুনিয়েছেন এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আমার কৈশোরেই নজরুলের কবিতার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে, এবং সেই পরিচয় আজও অবিচ্ছেদ্যভাবে আমার সত্তার অংশ হয়ে আছে।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মায়ের নাম জাহেদা খাতুন। নজরুলের জন্ম একটি পীর বংশে হলেও তার জীবন ছিল সংগ্রামে ভরপুর। মাত্র আট বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ ঘটে, এবং সেই থেকে তার জীবনের শুরু হয় অর্থনৈতিক সংগ্রামের। পরিবারে নেমে আসে চরম দারিদ্র্য, তবে এই অভাব-অনটনই তার প্রতিভার উন্মেষ ঘটায় এবং শক্তি জোগায়।
কবির প্রতিভার উৎস
নজরুলের কবি জীবনের সূচনা ঘটে যখন তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং দেখতে পান চারপাশে অন্যায়, অবিচার, এবং শোষণের প্রাচুর্য। সেই সময় তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘মুক্তি’। কবিতার মাধ্যমে তিনি অবিচারের বিরুদ্ধে নিজের ক্রোধ প্রকাশ করেন এবং বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
বিদ্রোহী-যৌবনের কবি
নজরুল মূলত বিদ্রোহ ও যৌবনের কবি। তার কবিতায় সমাজের শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিরোধ, অসাম্যের বিরুদ্ধে তার লেখা ছিল এক ধরনের যুদ্ধের মত। নজরুল বলেছেন:
“কারার ঐ লৌহ-কপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।”
এই কবিতার লাইনগুলোতে স্পষ্টতই বোঝা যায়, তিনি অন্যায়ের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য মানুষের মাঝে বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।
বিপ্লবী কবি
নজরুল ছিলেন বিপ্লবী কবি। ঔপনিবেশিক শাসনের নাগপাশ থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে তিনি ছিলেন অটল এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার কবিতায় ছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং শাসকবিরোধী বিপ্লবের বার্তা। জেলে থাকা অবস্থায়ও তিনি লেখালেখি চালিয়ে গেছেন এবং তার বিপ্লবী কবিতাগুলি মানুষকে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বলেছিলেন:
“দেব শিশুদের মারছে চাবুক, বীর যুবকদের দিচ্ছে ফাঁসি, ভূ-ভারত আজ কসাইখানা, আসবি কখন সর্বনাশী!”
মানবতার কবি
নজরুল তার কবিতার মাধ্যমে সব সময় মানবতার পক্ষে ছিলেন। তিনি অন্যায় এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেছেন। তার বিশ্বাস ছিল মানবতা সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন:
“মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মান্ধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
অসাম্প্রদায়িক কবি
নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথপ্রদর্শক। তিনি হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে অটুট মৈত্রী কামনা করেছেন এবং সব ধর্মকে সমান চোখে দেখতেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার লেখনীতে প্রখর প্রতিবাদ লক্ষ করা যায়। ১৯২৬ সালের দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু-মুসলমানদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, যেন তারা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন ঘটায়।
সর্বহারা ও সাম্যের কবি
নজরুল শ্রমজীবী এবং নিপীড়িত মানুষের জন্য কবিতা লিখেছেন। তিনি তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন এবং বলেছেন যে এই নিপীড়িত মানুষেরাই সমাজের প্রকৃত নির্মাতা। নজরুলের কবিতা এবং গানগুলো শ্রমজীবী মানুষদের সম্মান প্রদান করে। তিনি বলেন:
“গাহি তাহাদের গান, যারা ধরার হাতে দেয় ফসলের ফরমান।”
নজরুলের সাহিত্যকর্ম ও প্রভাব
কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের জন্য এক অনন্য সংযোজন। তার কাব্য এবং গানে ছিল অনন্য শক্তি যা আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তার লেখা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণা দিয়েছে। তার কবিতা ও গানগুলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যুগিয়েছে।
উপসংহার
কাজী নজরুল ইসলাম নিঃসন্দেহে আমাদের বিদ্রোহী কবি, মানবতার কবি এবং নিপীড়িত মানুষের কবি। তার কবিতায় আমরা পাই স্বাধীনতার চেতনা, সাম্যের বার্তা এবং মানবতার গান। তার সৃষ্টির মধ্যে তিনি আমাদের মনোবল বাড়ান, আমাদের আত্মবিশ্বাস যোগান এবং আমাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করতে শেখান। তার সৃষ্টিকর্ম আজও আমাদের মধ্যে স্বাধীনতা এবং সাম্যের চেতনা জাগ্রত করে, আমাদের আরও শক্তিশালী এবং উন্নত করে তোলে। এজন্যই কাজী নজরুল ইসলামই আমার প্রিয় কবি।
আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন রচনা:
- মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা
- আমাদের বিদ্যালয় রচনা
- বর্ষাকাল রচনা
- আমাদের গ্রাম রচনা
- আমাদের জাতীয় পতাকা রচনা
সবশেষে
অনেকেই আমার প্রিয় কবি রচনা pdf চেয়েছেন। আমার প্রিয় কবি রচনা class 8, আদর্শ গ্রাম রচনা ক্লাস ২, আদর্শ গ্রাম অনুচ্ছেদ রচনা, আমার প্রিয় কবি রচনা ৩য় শ্রেণি, আমার প্রিয় কবি রচনা ক্লাস 6, আমার প্রিয় কবি রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট। মাই ক্লাসরুম ফেসবুক পেজ এখানে
যেভাবে খুজে পাবেন: আমার প্রিয় কবি রচনা সহজ ভাষায় ২০০ শব্দ, ৩০০ শব্দ, ৪০০ শব্দ, ৪৫০ শব্দে লেখা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে রচনাটি লেখা হয়েছে। আমার প্রিয় কবি রচনাটি ৬ষ্ঠ ৭ম ও ৮ম শ্রেণির জন্য ১৫ পয়েন্ট ২০ পয়েন্ট করে লেখা হয়েছে। ৯ম ১০ম ১১শ ও ১২শ ক্লাসের জন্য ২৫ পয়েন্ট ও ৩০ পয়েন্ট করে লেখা হয়েছে। অনেকে আমার প্রিয় কবি রচনা pdf ডাউনলোড করতে চান। আপনি মাই ক্লাসরুম থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন না।
১১ থেকে ২০ গ্রেডের অনেক চাকরি পরীক্ষা লিখিত হয়। লিখিত চাকরী পরীক্ষাগুলোতে রচনা লিখতে হয়। লিখিত চাকরি পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য উপযোগী করে এই রচনাগুলো লেখা হয়েছে। চাকরী পরীক্ষা যেমন- ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা, ইউনিয়ন সমাজকর্মীর জন্য বাংলা রচনা, খাদ্য অধিদপ্তর এর জন্য বাংলা রচনা প্রস্তুতি, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষা প্রস্তুতি, বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি, ব্যাংক লিখিত প্রস্তুতি সহ সকল সরকারি ও বেসরকারি চাকরি পরীক্ষার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।