আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। ৩য়,৪র্থ,৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম শ্রেণি।pdf Download
আমার প্রিয় খেলা রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় আমার প্রিয় খেলা রচনা না দিয়ে বলা হয় আমার প্রিয় খেলা সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে আমার প্রিয় খেলা সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে আমার প্রিয় খেলা রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে।
আমার প্রিয় খেলা রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। আমার প্রিয় খেলা এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। My Favorite Sports essay is written for class- 3, 4, 5, 6 and 7.
আমার প্রিয় খেলা
ভূমিকা : বর্তমান সময়ে ক্রিকেট খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ক্রিকেট খেলার পুরোটা সময়ে থাকে টানটান উত্তেজনা । শামীম কবিরের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শুভযাত্রা শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বৃহৎ মণ্ডের প্রবেশদ্বার আইসিসির সদস্যপদ লাভ করে। ক্রিকেট আমার প্রিয় খেলা। ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ আজ অন্যতম অভিজাত টপ টেন ।
ক্রিকেটের জন্ম : ক্রিকেটের প্রচলন ও প্রসার ঘটে ইংল্যান্ডে। হ্যাম্পশায়ারের অন্তর্গত হ্যাম্পবলটন ছিল ক্রিকেট খেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান । সেখানেই গড়ে ওঠে ইংল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেট দল। এরপর সমগ্র ব্রিটেনে ক্রিকেট খেলা ছড়িয়ে পড়ে। কালক্রমে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, জিম্বাবুয়ে, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ প্রভৃতি দেশে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট খেলা অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট
প্রকারভেদ : ক্রিকেটে বর্তমানে তিনটি ধরন বা শ্রেণিবিভাগ লক্ষ করা যাচ্ছে। এগুলো হলো- (১) টেস্ট ক্রিকেট বা পাঁচ দিনের ক্রিকেট (২) ওয়ানডে ক্রিকেট বা একদিনের ক্রিকেট (৩) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বা কয়েক ঘণ্টায় খেলা। বর্তমানে টি-টোয়েন্টি পদ্ধতি অর্থাৎ বিশ ওভারের খেলা ক্রিকেটের ধারণাটাই পাল্টে দিয়েছে। এটি ক্রিকেটের সর্বাধুনিক ও জনপ্রিয় সংস্করণ।
উপকরণ : এ খেলার জন্য ব্যাট, বল, স্টাম্প, প্যাড, গার্ড প্রভৃতি মূল্যবান উপকরণের প্রয়োজন হয়। এর জন্য একটি সমতল গোলাকার মাঠ প্রয়োজন। ক্রিকেট খেলার জন্য দুটি দল থাকে। প্রতিটি দলে এগারোজন করে খেলোয়াড় থাকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু খেলোয়াড় থাকে।
মাঠের আকৃতি : ক্রিকেট খেলার মাঠ সাধারণত ১৪০ গজ ব্যাসবিশিষ্ট বৃত্তাকার হয়। মাঠের মাঝে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা ২২ গজ পিচ থাকে।
আমার প্রিয় খেলা রচনা ক্লাস ৩য়-৭ম
নিয়মকানুন : টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলা কিছু সাধারণ ও কিছু বিশেষ নিয়মে খেলতে হয়। টেস্ট-ক্রিকেট খেলা হয় পাঁচ দিন ধরে। প্রতিদিন সাধারণত গড়ে ছয় ঘণ্টা খেলা হয়। একপক্ষ যখন ব্যাটিং করে অন্যপক্ষ তখন ফিল্ডিং করে। খেলা শুরুর পূর্বে টসে নির্ধারিত হয় কোন দল ব্যাট বা ফিল্ডিং করবে। টসে জয়ী দল এটি নির্ধারণ করে। খেলার শুরুতে ‘ব্যাটিং’ করতে নির্বাচিত দলের দুজন খেলোয়াড় ব্যাট হাতে মাঠে নামেন এবং দুদিকে স্থাপিত ‘স্টাম্পের কাছে দুজন অবস্থান গ্রহণ করেন। এদের বলা হয় ‘ব্যাটসম্যান।’ প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড় বল করেন, যাকে বলা হয় বোলার। বোলারের কাজ স্টাম্প থেকে বেল ফেলানো।
বেল পড়লেই ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাবেন। একজন বোলার একনাগাড়ে ৬টি বল অর্থাৎ এক ওভার বল করতে পারেন। বোলার বল নিক্ষেপ করলে ব্যাটসম্যান ব্যাট দিয়ে সজোরে আঘাত করে দূরে পাঠিয়ে দেন। বল যদি গড়িয়ে গড়িয়ে বাউন্ডারি বা সীমানা পার হয়, তাহলে হবে চার রান আর মাঠে না পড়ে যদি বাউন্ডারি বা সীমানা পার হয়ে যায়, তাহলে হবে ছয় রান। তা ছাড়া বল ঠুকে দিয়ে দৌড়েও রান করা যায়। এভাবে ব্যাটসম্যানরা রানের টার্গেট দেন এবং প্রতিপক্ষ এই টার্গেটে খেলেন । প্রথম দল যে টার্গেট দেয় তা পরবর্তী দল অর্থাৎ প্রতিপক্ষকে অতিক্রম করতে হয়। তবেই দলে জয় আসে আর না হলে আগের দল জয়ী হবে। সবশেষ বিজয়ী দলকে ট্রফি দেওয়া হয়।
আইসিসিতে বাংলাদেশ : ১৯৭৬ সালের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির সহযোগী সদস্য নির্বাচিত হয়। ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ৬ষ্ঠ আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত কেনিয়াকে ২ উইকেটে পরাজিত করে এক শ্বাসরুদ্ধকর খেলা উপহার দিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
ক্রিকেট বাংলাদেশ : ক্রিকেটে বাংলাদেশের আগমন খুব বেশি দিন নয়। বাংলাদেশ ১৯৭৭ সালের ২৬ জুলাই প্রথম আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ অর্জন করে। এরপর ১৯৯৯ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে শক্তিশালী কেনিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়ে সারা বিশ্বে তার আগমনবার্তা ছড়িয়ে দেয়। এরপর ২০০০ সালের প্রত্যাশিত টেস্ট মর্যাদা পায় বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও বাংলাদেশ রচনা
বর্তমান চিত্র : বর্তমানে বাংলাদেশ বেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে। ইতোমধ্যেই ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করেছে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দীর্ঘ ১৩ বছরের ইতিহাসে দেশের পক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন উইকেটকিপার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসকে হারায়।
এশিয়া কাপ ২০১৬-তে বাংলাদেশ ইউনাইটেড আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ২০১৭ সালের জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ অসাধারণ নৈপুণ্যের পরিচয় দেয়। এবারই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের এত বড় আসরে সেমিফাইনাল খেলার গৌরব অর্জন করে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানকে পরাজিত করে। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড T20 সিরিজ জয় লাভ করে বাংলাদেশ ।
ক্রিকেট খেলার আনন্দ : খেলা মানেই আনন্দ। ক্রিকেট আনন্দদায়ক খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ক্রিকেট খেলার সময় স্টেডিয়ামের গ্যালারি দর্শকে পরিপূর্ণ থাকে। ফলে প্রতিটি ওভার, প্রতিটি বলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খেলায় জিতলে সারা দেশে আনন্দের স্রোত বয়ে যায়। সুতরাং ক্রিকেট একটি আনন্দপূর্ণ ও মজার খেলা ।
রচনা আমার প্রিয় খেলা pdf
উপকারিতা : খেলাধুলা মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্রিকেট খেলার সময় খেলোয়াড়দের অনেক ছুটোছুটি করতে হয় বলে এটি শরীরের জন্য উত্তম ব্যায়াম। নিয়মিত ক্রিকেট খেললে শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ক্রিকেট একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ খেলা বিধায় এটি খেলোয়াড়দের চরিত্র গঠনে সাহায্য করে। এ খেলার মাধ্যমে দেশ, জাতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয় ।
অপকারিতা : প্রত্যেক খেলার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতাও রয়েছে। অধিক খেলাধুলার কারণে শারীরিক নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। ক্রিকেট অন্যান্য খেলার চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কারণ, দ্রুতগতিসম্পন্ন বল যেকোনো সময় অসতর্কভাবে শরীরে লাগার ফলে মারাত্মক সমস্যার তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া ক্রিকেট বেশ উত্তেজনাকর খেলা বিধায় দু-দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে । ক্রিকেট খেলা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এটা মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট করে।
উপসংহার : বাংলাদেশে ক্রিকেট অতি জনপ্রিয় খেলা। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অভিজ্ঞ দল হিসেবে গড়ে উঠছে। অচিরেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজের স্থান সুসংহত করবে, সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আইসিসি ট্রফির মতো বাংলাদেশ বিশ্বকাপও ঘরে তুলতে সক্ষম হবে ।
সবশেষে
অনেকেই আমার প্রিয় খেলা রচনা pdf চেয়েছেন। আমার প্রিয় খেলা রচনা class 8, আমার প্রিয় খেলা রচনা ক্লাস ২, আমার প্রিয় খেলা অনুচ্ছেদ রচনা, আমার প্রিয় খেলা রচনা ৩য় শ্রেণি, আমার প্রিয় খেলা রচনা ক্লাস 6, আমার প্রিয় খেলা রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট।