চাকরির আবেদনপত্র লেখার নিয়ম । চাকরির আবেদনেযা থাকতেই হবে
একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে চাকরির আবেদন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। অনেকেই মনে করেন, সিভি দাখিল করলেই আবেদনের কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এখন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে এনজিও ও আইএনজিওগুলো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কভার লেটার বা চাকরির আবেদনপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে।
বর্তমান সময়ে চাকরির আবেদনপত্র চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গুগল সার্চ করলেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। গুগলের সার্চ বক্সে হাজার হাজার মানুষ চাকরির আবেদনপত্র, কোম্পানির চাকরির আবেদনপত্র, মাদ্রাসায় চাকরির আবেদনপত্র, শিক্ষক পদে চাকরির আবেদনপত্র ও এনজিও চাকরির আবেদনপত্রের নমুনা খোঁজেন। কোথাও কোথাও চাকরির আবেদনপত্রের নমুনা বেশ জটিলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অনুসরণ করলে কার্যত কিছুই হবে না, বরং সময় ও শ্রম নষ্ট হবে।
চাকরির আবেদনপত্র লিখবেন কিভাবে?
চাকরির আবেদনপত্র বা কভার লেটার সহজ ও প্রাণবন্ত হওয়া উচিত, যেখানে একজন প্রার্থী আবেদিত পদের জন্য কতটা যোগ্য এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংক্ষেপে তথ্য প্রদান করবেন। বেশ কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তাদের মতে, মাত্র ৫ শতাংশ প্রার্থী সিভির সঙ্গে কভার লেটার দিয়ে থাকেন, এবং অনেকের কভার লেটার অসম্পূর্ণ থাকে। বিশেষ করে বানান ভুল এবং বাক্যগত ভুল অনেকেই করে থাকেন। কখনও কখনও প্রার্থী কী বোঝাতে চেয়েছেন, সেটিও অস্পষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে সেসব সিভি গ্রহণযোগ্যতা হারায়।
সরকারি চাকরির আবেদনপত্র
তাহলে, চলুন একটি সুন্দর ও মার্জিত চাকরির আবেদনপত্র বা কভার লেটার কীভাবে লিখতে হয়, সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। চাকরির আবেদনপত্র বা কভার লেটার হচ্ছে একটি ফরমাল চিঠি, যা সিভির সঙ্গে জমা দিতে হয়। যেকোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদনের সময় জীবনবৃত্তান্ত বা সিভির সঙ্গে একটি কভার লেটার যুক্ত করতে হয়। ইমেইলের মাধ্যমে চাকরির আবেদন পাঠালে, একই মেইলে প্রথমে কভার লেটার পরে সিভি সংযুক্ত করতে হবে।
কভার লেটারে মূলত আপনার স্কিল বা দক্ষতার সুস্পষ্ট বিবরণী এবং কেন আপনি এই পদের জন্য উপযুক্ত, তা বর্ণনা করা হয়। চাকরির ভিন্নতা অনুসারে কভার লেটারের বিভিন্ন ধরনের রূপ থাকতে পারে।
চাকরির আবেদনপত্র বা কভার লেটার লেখার নিয়ম
চাকরির ভিন্নতার কারণে কভার লেটার ভিন্ন হলেও মূল বিষয় একই থাকে। সাধারণত একটি চাকরির আবেদনপত্রে তিনটি অংশ থাকে: সূচনা, মূল অংশ ও পরিসমাপ্তি।
সূচনা: চাকরির আবেদনপত্র শুরু হয় কভার লেটার দিয়ে। এখানে আপনার পরিচয়, আবেদনের কারণ, কীভাবে নিয়োগ সম্পর্কে জানলেন এবং এই পদে আপনার কাজ করার ইচ্ছে কেন, এসব বিষয় সংক্ষেপে লিখবেন।
উদাহরণ যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, গত ১৮.০১.২০২২ তারিখ ‘ঢাকা পোস্ট জবস’ পাতায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, আপনার প্রতিষ্ঠানে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্যাশ)’ পদে কিছু সংখ্যক লোক নিয়োগ করা হবে।
মূল অংশ: কভার লেটারের মূল অংশটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পদের সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতার বিষয়গুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করতে হবে। আপনি চাইলে পূর্বের কাজের বিবরণ ছোট আকারে দিতে পারেন, যা আপনার পদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। চেষ্টা করবেন দুটি প্যারাগ্রাফে যাবতীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং অর্জন সমূহ বর্ণনা করতে।
উদাহরণ: বিগত পাঁচ বছর ধরে পদ সংশ্লিষ্ট খাতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছি। ফলে পদ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি কার্যক্রম সম্পর্কে আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে।
পরিসমাপ্তি: কভার লেটারের শেষ অংশে উক্ত পদে চাকরি করার বাসনা ব্যক্ত করুন। কীভাবে তারা আপনার সঙ্গে পরবর্তীতে যোগাযোগ করবে, সেটিও স্পষ্ট করে উল্লেখ করুন। পাশাপাশি আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য যোগাযোগের তথ্য দিয়ে সাক্ষাতের সম্ভাবনা ব্যক্ত করুন। কভার লেটার পড়ার জন্য নিয়োগকর্তাকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। শেষে আপনার নাম এবং স্বাক্ষর দিন।