নোবেল পুরস্কার ২০২৪: বিজয়ীদের তালিকা ও অবদান বিস্তারিত

নোবেল পুরস্কার ২০২৪ ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে মোট ১১ জন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠান এই সন্মান লাভ করেছেন। পুরুষ বিজয়ী ১০ জন এবং নারী বিজয়ী ১ জন। প্রত্যেক নোবেলজয়ী একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (বাংলাদেশি টাকায় ১২ কোটি ৮০ লাখ) পুরস্কার পাবেন। যেখানে একাধিক বিজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই অর্থ বণ্টন করা হবে। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানটি আগামী ১০ ডিসেম্বর, আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের বিস্তারিত
বিষয় | পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম | দেশ | অবদান | ঘোষণাকারী প্রতিষ্ঠান |
---|---|---|---|---|
চিকিৎসাবিজ্ঞান / শরীরতত্ত্ব | ভিক্টর অ্যামব্রোস | যুক্তরাষ্ট্র | মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও উদ্ভাবন | দ্য রয়েল সুইডিশ একাডেমি |
পদার্থবিজ্ঞান | গ্যারি রাভকুন, জন জে হপফিল্ড | যুক্তরাষ্ট্র | কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিং সম্ভবপর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবন | ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট |
পদার্থবিজ্ঞান | জিওফ্রে ই হিন্টন | কানাডা | মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং ট্রান্সক্রিপশন পরবর্তী জিন নিয়ন্ত্রণে | ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট |
রসায়ন | ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাসি | যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য | প্রোটিনের গঠনে ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা | একাডেমি অব সায়েন্স, দ্য রয়েল সুইডিশ একাডেমি |
সাহিত্য | জন এম জাম্পার | তীক্ষ্ণ কাব্যিক গদ্যের জন্য | সুইডিশ একাডেমি | |
সাহিত্য | হান ক্যাং | দক্ষিণ কোরিয়া | ঐতিহাসিক আঘাতের মুখোমুখি হয়ে মানবজীবনের ভঙ্গুরতা প্রকাশ করেছে | সুইডিশ একাডেমি |
শান্তি | নিহন হিদানকিও | জাপান | পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব অর্জনের প্রচেষ্টায় | নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি |
অর্থনীতি | ড্যারন আসেমোগলু, সাইমন জনসন, জেমস রবিনসন | বিভিন্ন দেশ | বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পদের বণ্টন এবং বৈষম্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা | দ্য রয়েল সুইডিশ একাডেমি |
পুরস্কার বিতরণ ও অন্যান্য তথ্য
- মোট বিজয়ী: ১১ জন ব্যক্তি এবং ১টি প্রতিষ্ঠান
- লিঙ্গ বন্টন: পুরুষ ১০ জন, নারী ১ জন
- পুরস্কার: প্রতিটি নোবেলজয়ী পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (বাংলাদেশি টাকায় ১২ কোটি ৮০ লাখ)
- বন্টন নীতি: যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বণ্টন করা হবে
- উৎসবের তারিখ: আগামী ১০ ডিসেম্বর, আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে
- ঘোষণাকারী প্রতিষ্ঠান: বিভিন্ন বিভাগের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দায়ী ছিল, যেমন দ্য রয়েল সুইডিশ একাডেমি, ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট, একাডেমি অব সায়েন্স ইত্যাদি
নোবেল পুরস্কার ২০২৪ আমাদের বৈজ্ঞানিক, সাহিত্যিক ও মানবিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য সম্মানিত করে। এই বিজয়ীরা বিশ্বজুড়ে তাদের কাজের মাধ্যমে মানবতার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল বিজয়ী ২০২৪
২০২৪ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রাভকুন। মাইক্রোআরএনএ (microRNA) আবিষ্কার ও ট্রান্সক্রিপশন-পরবর্তী জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা নিয়ে তাদের যুগান্তকারী গবেষণা বহুকোষী প্রাণীর জিন নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ধারনা আমূল বদলে দিয়েছে।
ভিক্টর অ্যামব্রোস
- জন্ম: ১ ডিসেম্বর ১৯৫৩, হ্যানোভার, নিউ হ্যাম্পশায়ার, যুক্তরাষ্ট্র
- অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান: ইউম্যাস চ্যান মেডিকেল স্কুল, উরসেস্টার, ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র
- পুরস্কার ঘোষণা: ৭ অক্টোবর ২০২৪
গ্যারি রাভকুন
- জন্ম: ১৯৫২, বার্কলে, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
- অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান: ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল, বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র; হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র
- পুরস্কারের অংশ: উভয় বিজ্ঞানী পুরস্কারের অর্ধেক করে শেয়ার করবেন
- প্রেরণা: মাইক্রোআরএনএ ও ট্রান্সক্রিপশন পরবর্তী জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা আবিষ্কারের জন্য
যুগান্তকারী গবেষণা: মাইক্রোআরএনএ-এর আবিষ্কার
অ্যামব্রোস ও রাভকুন ১৯৮০-এর দশকে C. elegans নামক ১ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের গোলকৃমির উপর গবেষণা শুরু করেন। তাদের গবেষণার লক্ষ্য ছিল বহুকোষী প্রাণীর কোষে কীভাবে জিন নিয়ন্ত্রিত হয়, তা জানা। তারা মূলত লিন-৪ (lin-4) এবং লিন-১৪ (lin-14) নামক দুটি জিন নিয়ে কাজ করেন, যা কোষের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিক্টর অ্যামব্রোস লিন-৪ জিন নিয়ে গবেষণায় দেখেন, এটি থেকে একটি ছোট্ট আরএনএ উৎপন্ন হয়, যা পরে “মাইক্রোআরএনএ” নামে পরিচিত হয়। এই মাইক্রোআরএনএ লিন-১৪ জিনের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে, গ্যারি রাভকুন দেখেন, লিন-১৪ জিনের কার্যকারিতা সরাসরি থামানো না হলেও লিন-৪-এর প্রভাব পরে গিয়ে একটি বিশেষ অবস্থায় তা বাধা দেয়। এই প্রক্রিয়াটি জিনের কার্যকারিতার গভীর স্তরে প্রভাব ফেলে।
লেট-৭ (let-7) মাইক্রোআরএনএ-এর আবিষ্কার
২০০০ সালে গ্যারি রাভকুন এবং তার গবেষণা দল “লেট-৭” নামক আরেকটি মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার করেন, যা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত প্রভাব ফেলে। আগে আবিষ্কৃত জিনগুলো শুধুমাত্র C. elegans গোলকৃমির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, লেট-৭ জিনটি সম্পূর্ণ প্রাণীজগত জুড়ে পাওয়া যায়। এটি অভিযোজনের ধারায় ৫০০ মিলিয়ন বছর ধরে সংরক্ষিত একটি প্রাচীন বৈশিষ্ট্য, যা নতুন গবেষণার পথ খুলে দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
অ্যামব্রোস ও রাভকুনের মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার জিন নিয়ন্ত্রণের ধারণায় বিপ্লব ঘটিয়েছে। তাদের এই ছোট্ট গোলকৃমির উপর করা গবেষণা বিভিন্ন জীববিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং আধুনিক জিন গবেষণায় অগ্রগতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এই যুগান্তকারী আবিষ্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানকে নতুনভাবে দেখার সুযোগ দেয় এবং আগামী দিনের গবেষকদের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করে।
পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০২৪
২০২৪ সালের পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানী জন জে হপফিল্ড এবং কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জিওফ্রে ই হিন্টন। তাদের এই সম্মাননা কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিং-এর উন্নয়নকে সম্ভব করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য প্রদান করা হয়েছে। তাদের গবেষণা মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) অগ্রগতিতে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে এবং বৈশ্বিকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে আরও কার্যকরী করে তুলছে।
জন জে হপফিল্ড
- জন্ম: ১৫ জুলাই ১৯৩৩, শিকাগো, ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্র
- কর্মক্ষেত্র: প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিন্সটন, নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্র
জন জে হপফিল্ড একজন প্রথিতযশা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি নিউরাল নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে একটি অগ্রগামী আবিষ্কার করেন। তিনি ১৯৮০-এর দশকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করেন যা “হপফিল্ড নেটওয়ার্ক” নামে পরিচিত। এটি এমন একটি নেটওয়ার্ক যেখানে তথ্য সঞ্চিত থাকে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পুনরায় গঠন (রিকনস্ট্রাক্ট) করা যায়। মূলত, এই নেটওয়ার্কটি শারীরিক নীতিগুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা পদার্থবিজ্ঞানের স্পিন-ব্যবস্থার শক্তি দশার আদলে নির্মিত। হপফিল্ডের এই নেটওয়ার্কে সংরক্ষিত তথ্যকে মেমোরির মতো কাজ করে যা উন্নত মেশিন লার্নিং মডেলগুলোর জন্য নতুন পথ দেখায়।
জিওফ্রে ই হিন্টন
- জন্ম: ৬ ডিসেম্বর ১৯৪৭, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
- কর্মক্ষেত্র: টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, টরন্টো, কানাডা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় আরেকটি বিশাল অবদান রাখেন অধ্যাপক জিওফ্রে ই হিন্টন, যিনি “বোলজম্যান মেশিন” নামে একটি নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেন। বোলজম্যান মেশিনের ভিত্তি হপফিল্ড নেটওয়ার্ক হলেও, এর কাজের পদ্ধতি ভিন্ন। এই মেশিন ডেটার মধ্যে লুকায়িত বৈশিষ্ট্য ও ছাঁচগুলো (প্যাটার্ন) শনাক্ত করতে পারে, যা মেশিন লার্নিং-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। হিন্টন পরিসংখ্যানগত পদার্থবিদ্যার (স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিজিক্স) ধারনা ব্যবহার করে এই নেটওয়ার্ক গঠন করেন। পরিসংখ্যানগত পদার্থবিদ্যা মূলত অনেক উপাদানের সম্মিলিত আচরণ সম্পর্কে আলোচনা করে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
- পুরস্কার ঘোষণা: ৮ অক্টোবর ২০২৪
- পুরস্কার ভাগ: দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে ১/২ করে ভাগ করে প্রদান করা হবে
- পুরস্কারের কারণ: মেশিন লার্নিংকে কার্যকরী করতে কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের উন্নয়নে মৌলিক গবেষণা ও উদ্ভাবন।
অর্থনীতি নোবেল পুরস্কার ২০২৪
২০২৪ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ড্যারন আসেমোগলু, সাইমন জনসন, এবং জেমস রবিনসন তাদের গবেষণার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পদের বৈষম্যের কারণ উদ্ঘাটন করেছেন। তাদের গবেষণা সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, কেন দেশগুলোর মধ্যে এত বড় অর্থনৈতিক পার্থক্য রয়েছে এবং এটি কীভাবে পরিবর্তন হতে পারে।
গবেষণা ও তাত্ত্বিক অবদান
আসেমোগলু, জনসন এবং রবিনসনের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে গঠন হয় এবং সেগুলো দেশের উন্নয়নে কীভাবে ভূমিকা পালন করে। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে, তারা দেখিয়েছেন—কোনো দেশের স্থায়িত্ব, সুশাসন এবং সমৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এ গবেষণার ফলাফলে প্রমাণিত হয়েছে যে সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গঠন এবং তার পরিবর্তন অর্থনৈতিক বিকাশের মূল কারণ হিসেবে কাজ করে।
ব্যক্তিগত প্রোফাইল
ড্যারন আসেমোগলু
- জন্ম: ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৭
- জন্মস্থান: তুরস্ক
- অধ্যাপক: ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT), ক্যামব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্র
সাইমন জনসন
- জন্ম: ১৬ জানুয়ারি, ১৯৬৩
- অধ্যাপক: ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT), ক্যামব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্র
জেমস এ. রবিনসন
- জন্ম: ১৯৬০
- অধ্যাপক: ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো, শিকাগো, যুক্তরাষ্ট্র
পুরস্কার ঘোষণা ও অংশীদারিত্ব
২০২৪ সালে ১৪ অক্টোবর, নোবেল কমিটি ঘোষণা করে যে এই তিন গবেষককে অর্থনীতির ক্ষেত্রে তাদের গবেষণা অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে। প্রতিটি বিজয়ী ১/৩ ভাগ করে পুরস্কারের অর্থ পাবেন। তাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সমৃদ্ধির মধ্যে সম্পর্ক এবং বিভিন্ন দেশে বৈষম্যের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছে।
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৬৮ সালে সুইডিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘রিক্সব্যাংক’ তাদের ৩০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য একটি পুরস্কার ঘোষণা করে। ১৯৬৯ সালে এটি অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পুরস্কারের আনুষ্ঠানিক নাম The Sveriges Riksbank Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel।
গবেষণার প্রভাব
আসেমোগলু, জনসন ও রবিনসনের গবেষণা ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকার উপর আলোকপাত করবে।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ২০২৪: নিহন হিদানকিও
ঘোষণা: ১১ অক্টোবর ২০২৪
পুরস্কার বিজয়ী: নিহন হিদানকিও (Japan Confederation of A- and H-Bomb Sufferers)
গঠনের তারিখ: ১০ আগস্ট ১৯৫৬
বাসস্থান: টোকিও, জাপান
পুরস্কারের অংশ: এককভাবে (1/1)
পুরস্কার প্রেরণার কারণ: “পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব অর্জনে এবং সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার আর কখনোই না করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি আলোকপাত করায়।”
নিহন হিদানকিওর প্রোফাইল এবং ইতিহাস
নিহন হিদানকিও, জাপানে “হিবাকুশা” নামে পরিচিত একটি সংগঠন, যা পারমাণবিক বোমার শিকার ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি কনফেডারেশন। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পারমাণবিক বোমা হামলায় হিরোশিমা ও নাগাসাকির বেঁচে থাকা মানুষদের জন্য। এই সংগঠনটি পরমাণু অস্ত্রের ভয়াবহতা এবং অস্ত্র নিষিদ্ধকরণের প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
সংস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাপান সরকারকে পরমাণু বোমার শিকারদের সেবার জন্য চাপ প্রদান এবং বিশ্বব্যাপী পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে তদবির করা। তারা বিশ্বমঞ্চে পরমাণু অস্ত্রের নিষিদ্ধকরণ নিয়ে আলোচনা, চিকিৎসা সহযোগিতা, এবং শান্তির জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের সদস্যরা পরমাণু বোমা হামলার সাক্ষ্য প্রদান করে বিশ্বকে জানিয়েছেন এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এবং শপথ করেছেন যে এই ধ্বংসাত্মক অস্ত্র কখনোই পুনরায় ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়।
নিহন হিদানকিওর লক্ষ্য ও কর্মসূচি
মূল উদ্দেশ্য ও প্রচেষ্টা:
১. পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ: তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো পরমাণু অস্ত্র নির্মূল করা, যাতে আর কখনোই কোনো জাতিকে পরমাণু হামলার সম্মুখীন না হতে হয়। ২. নিষিদ্ধকরণ ও চিকিৎসা সহায়তা: পরমাণু বোমার শিকারদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা এবং সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চাপ প্রদান। ৩. শান্তির প্রচার: এই সংগঠনটি শান্তির জন্য সক্রিয় প্রচারণা চালিয়ে আসছে এবং শান্তিপূর্ণ ও পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
নিহন হিদানকিওর সম্মান ও আন্তর্জাতিক ভূমিকা
নোবেল পুরস্কার ২০২৪ অর্জন করে, নিহন হিদানকিও পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের অমর প্রতিজ্ঞা এবং শান্তির প্রতি তাদের অঙ্গীকার বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছে। এ সংগঠনটির অবস্থান টোকিওর মিনাতো জেলার শিবাদাইমন এলাকায়। তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোরালোভাবে শান্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন এবং মানবতার জন্য সুরক্ষিত ভবিষ্যতের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের এই ত্যাগ ও সংহতি, মানবিকতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।
বিশ্বের জন্য প্রেরণা: নিহন হিদানকিওর সংগ্রাম এবং ত্যাগ মানবজাতির জন্য পরমাণু অস্ত্রবিরোধী প্রচেষ্টায় একটি দৃষ্টান্ত। তাদের প্রেরণা এবং শপথ শান্তির পথে সকল জাতির জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
২০২৪ রসায়ন নোবেল পুরস্কার
রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী
২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের জন্য। মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকার এবং প্রোটিনের গঠন অনুমানের জন্য ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবিস এবং মার্কিন বিজ্ঞানী জন এম জাম্পার এই পুরস্কারের গৌরব অর্জন করেছেন। এই গবেষণা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রোটিন গঠন এবং তার কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও গভীর বোঝার জন্য অপরিসীম ভূমিকা রাখছে।
১. ডেভিড বেকার
- জন্ম: ১৯৬২, সিয়াটল, ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র
- কর্মস্থল: ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন, সিয়াটল, ওয়াশিংটন, ইউএসএ এবং হাওয়ার্ড হিউজ মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইউএসএ
- পুরস্কার শেয়ার: ১/২
- গবেষণা অবদান: ডেভিড বেকার প্রথম ২০০৩ সালে অ্যামিনো অ্যাসিডের শৃঙ্খলে রদবদল ঘটিয়ে নতুন ধরনের প্রোটিন তৈরি করেন, যা আগে কল্পনাও করা সম্ভব ছিল না। তিনি প্রমাণ করেন, প্রকৃতিতে বিদ্যমান নয় এমন প্রোটিন তৈরি করা যায়, যা মানবদেহে নতুন রোগ নিরাময়ের পথ উন্মোচন করতে পারে।
২. ডেমিস হাসাবিস
- জন্ম: ২৭ জুলাই, ১৯৭৬, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
- কর্মস্থল: গুগল ডিপমাইন্ড, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
- পুরস্কার শেয়ার: ১/৪
- গবেষণা অবদান: প্রোটিনের ত্রিমাত্রিক গঠন অনুমানের ক্ষেত্রে ডেমিস হাসাবিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০২০ সালে তিনি আলফাফোল্ড২ নামে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মডেল তৈরি করেন, যা প্রোটিনের কাঠামোকে সঠিকভাবে অনুমান করতে সক্ষম।
৩. জন এম জাম্পার
- জন্ম: ১৯৮৫, লিটল রক, আর্কানসাস, যুক্তরাষ্ট্র
- কর্মস্থল: গুগল ডিপমাইন্ড, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
- পুরস্কার শেয়ার: ১/৪
- গবেষণা অবদান: হাসাবিসের সাথে মিলিত হয়ে, জন এম জাম্পার আলফাফোল্ড২ মডেল তৈরিতে অবদান রাখেন। এই মডেল ইতিমধ্যে ১৯০টি দেশে ২০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারী প্রোটিন গবেষণায় ব্যবহার করেছেন। এটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের সমস্যা এবং প্লাস্টিক ভেঙে ফেলতে সক্ষম এনজাইম তৈরিতে সহায়ক হচ্ছে।
গবেষণার প্রভাব
- প্রোটিনের গঠন অনুমান: প্রোটিন মূলত অ্যামিনো অ্যাসিডের দীর্ঘ শৃঙ্খল দ্বারা গঠিত। ২০ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডের উপর ভিত্তি করে এই শৃঙ্খল ভিন্ন গঠনে যুক্ত হয়ে একটি ত্রিমাত্রিক কাঠামো তৈরি করে। প্রোটিনের গঠন নির্ধারণ করা অত্যন্ত জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর গঠনই প্রোটিনের চরিত্র ও কার্যকারিতার প্রধান নির্দেশক। হাসাবিস ও জাম্পার প্রোটিন গঠনের এই জটিলতা নিরসনে আলফাফোল্ড২ মডেল তৈরি করেন, যা বিশ্বব্যাপী গবেষণায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
প্রোটিনের কার্যকারিতা
প্রোটিন হলো অ্যামিনো অ্যাসিডের শৃঙ্খল যা দেহের বুনিয়াদী কাজ পরিচালনা করে। ডেভিড বেকারের গবেষণা প্রোটিনের গঠন এবং চরিত্র সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করেছে। এই গবেষণাগুলি আধুনিক চিকিৎসা ও জৈবপ্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
সম্মাননা
- ঘোষণার তারিখ: ৯ অক্টোবর ২০২৪
- পুরস্কার বিতরণ: ১০ ডিসেম্বর, আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে
হান ক্যাং: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ২০২৪
সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল
- নাম: হান ক্যাং
- জন্ম: ২৭ নভেম্বর ১৯৭০, গোয়াংজু, দক্ষিণ কোরিয়া
- বাসস্থান: পুরস্কারের সময়ে সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া
- ভাষা: কোরিয়ান
- পুরস্কারের অংশ: ১/১ (পুরস্কার পুরোপুরি তার নিজের নামে)
- প্রাপ্তি: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ২০২৪
- পুরস্কার ঘোষণার তারিখ: ১০ অক্টোবর ২০২৪
- পুরস্কারের প্রেরণা: “তার গভীর ও কাব্যিক গদ্যের জন্য যা ঐতিহাসিক আঘাত ও মানব জীবনের ভঙ্গুরতা উদ্ঘাটন করে।”
সাহিত্যকর্ম ও জীবন
হান ক্যাং কোরিয়ান সাহিত্যজগতের এক অনন্য নাম। তিনি কোরিয়ান ঔপন্যাসিক হান সিউং-ওনের কন্যা এবং ২৭ নভেম্বর ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজুতে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন কেটেছে সিউলের ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি কোরিয়ান সাহিত্যে পড়াশোনা করেন। তার পরিবারেও সাহিত্যপ্রেম প্রবল, যার প্রমাণ তার ভাই হান ডং রিম, যিনি নিজেও একজন লেখক।
সাহিত্যকর্মের তালিকা
হান ক্যাংয়ের সাহিত্যজগতে অবদান অনেক। তার রচনাসমূহের মধ্যে রয়েছে:
- উপন্যাস: Fruit of my Women (২০০০), Fire Salamander (২০১২), Black Deer (১৯৯৮), Your Cold Hands (২০০২), The Vegetarian (২০০৭), এবং We Don’t Part (২০২১)
- কবিতার বই: Poetry Book (২০১৩)
- প্রবন্ধ সংকলন: Love and the Things Surrounding Love (২০০৩), A Song to Sing Calmly (২০০৭)
- আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস: The White Book (২০১৭)
তাঁর রচিত The Vegetarian উপন্যাসটি ২০১৬ সালে ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার অর্জন করে, যা তাকে আন্তর্জাতিক সাহিত্যে সুপরিচিত করে তোলে। এছাড়া তাঁর ‘বেবি বুদ্ধ’ এবং ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাস নিয়ে নির্মিত হয় সিনেমাও।
‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’: মূল থিম ও প্রভাব
The Vegetarian উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র ইয়ং-হাই একজন নারী, যিনি আচমকা নিজের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে এবং মাংস পরিত্যাগ করতে উদ্যোগী হন। তার এই সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিতে সমাজ ও পরিবারের সঙ্গে তার সংঘর্ষ শুরু হয় এবং ঘটনার পরম্পরায় তা এক হিংসাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়। ইয়ং-হাই-এর জীবন তার গভীর মনস্তাত্ত্বিক সংগ্রাম এবং সমাজের প্রচলিত মানদণ্ডের বিরুদ্ধে তার অন্তর্নিহিত প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে।
এই উপন্যাসটি কোরিয়ান অনুবাদক ডেবোরা স্মিথ ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যা পরবর্তীতে প্রায় ১৩টি ভাষায় অনূদিত হয়। বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন নীলিমা রশীদ তৌহিদা।
সাহিত্যিক ও ব্যক্তিগত প্রভাব
হান ক্যাং এশিয়ার প্রথম, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় সাহিত্যিক, এবং সাহিত্যে ১৮তম নারী নোবেলজয়ী। কোরিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী ছিলেন কিম দায়ে-জং, যিনি ২০০০ সালে শান্তির জন্য নোবেল পান। সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ফরাসি কবি ও প্রাবন্ধিক সুলি প্রুদোম, এবং প্রথম মহিলা হিসেবে নোবেল জয় করেছিলেন সুইডিশ লেখিকা সেলমা লেগারলফ।
হান ক্যাং-এর রচনাগুলো তার গভীর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ, যা কোরিয়ান সমাজ ও ঐতিহাসিক আঘাতের মনস্তাত্ত্বিক প্রতিফলন। তার সাহিত্যে মানবজীবনের ভঙ্গুরতা, সমাজের সঙ্গে ব্যক্তির সংঘাত এবং মানবিকতার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, যা বিশ্বসাহিত্যে অবিস্মরণীয় অবদান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
FAQ সংক্ষেপ:
সাহিত্যে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার কে পেয়েছেন?
দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং সাহিত্যে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তার কাব্যিক গদ্যে ঐতিহাসিক আঘাত এবং মানব জীবনের ভঙ্গুরতা প্রকাশের জন্য।
২০২৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার কারা পেয়েছেন?
জাপানের সংগঠন নিহন হিডানকিও এই পুরস্কার পেয়েছে।
২০২৪ সাল পর্যন্ত কতজন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন?
১৯০১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মোট ৯৭৬ জন ব্যক্তি এবং ২৮টি প্রতিষ্ঠান নোবেল পুরস্কার পেয়েছে।
নোবেল পুরস্কারের আর্থিক মূল্য কত?
১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার, যা প্রায় ১,০৩৫,০০০ মার্কিন ডলার।
সাহিত্যে প্রথম নোবেল বিজয়ী কে ছিলেন?
১৯০১ সালে, ফরাসি কবি সুলি প্রুদোম সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান।
নোবেল পুরস্কার কোথায় দেওয়া হয়?
শান্তির নোবেল পুরস্কার নরওয়ের অসলোতে এবং বাকি পুরস্কার সুইডেনের স্টকহোমে দেওয়া হয়।
নোবেল পুরস্কার কবে দেওয়া হয়?
প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কয়েকজন দুইবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কারা?
লিনাস পলিং এবং মেরি কুরি। পলিং একমাত্র ব্যক্তি, যিনি দুইবার এককভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলাদেশি টাকায় নোবেল পুরস্কারের মূল্য কত?
প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা।
বিশ্বের প্রথম নোবেল বিজয়ী কে ছিলেন?
প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার পান সুইস জিন হেনরি ডুনান্ট ও ফরাসি ফ্রেডেরিক প্যাসি।
নোবেল প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কে?
ফরাসি লেখক জাঁ-পল সার্ত্র ১৯৬৪ সালে সাহিত্যে নোবেল প্রত্যাখ্যান করেন।
অর্থনীতিতে প্রথম নোবেলজয়ী নারী কে ছিলেন?
এলিনর অস্ট্রম, অর্থনীতিতে প্রথম নোবেলজয়ী নারী।
প্রশ্ন: নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য কাউকে কিভাবে মনোনীত করা যায়?
উত্তর: মনোনয়ন জমা ৩১ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে এবং তা অবশ্যই একটি অনলাইন ফর্মের মাধ্যমে হওয়া উচিত। প্রথম বৈঠকে নোবেল কমিটি চাইলে আরও নাম সংযোজন করতে পারে।
প্রশ্ন: রসায়নে প্রথম নোবেল পুরস্কার কে পেয়েছিলেন?
উত্তর: ১৯০১ সালে নেদারল্যান্ডের জ্যাকবাস হেনরিকাস ভ্যান হফ প্রথম নোবেল রসায়ন পুরস্কার পান।
প্রশ্ন: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রথম নারী কে?
উত্তর: মেরি কুরি প্রথম মহিলা হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান এবং তিনিই একমাত্র মহিলা যিনি দুটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রশ্ন: নোবেল পুরস্কারের জনক কে?
উত্তর: আলফ্রেড নোবেল নোবেল পুরস্কারের প্রচলন করেন ১৮৯৫ সালে; পুরস্কার প্রদান শুরু হয় ১৯০১ সালে।
প্রশ্ন: অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার কবে থেকে দেওয়া হয়?
উত্তর: ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা শুরু হয়।
প্রশ্ন: প্রথম শান্তি নোবেল পুরস্কার কে পেয়েছিলেন?
উত্তর: ১৯০১ সালে ফ্রেডেরিক প্যাসি ও হেনরি ডুনান্ট প্রথম শান্তি নোবেল পুরস্কার পান।
প্রশ্ন: শান্তি পুরস্কার প্রদানের শর্তাবলী কী?
উত্তর: জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, অস্ত্রশস্ত্র বিলুপ্তি এবং শান্তি কংগ্রেসের আয়োজনের জন্য কাজ করাকে পুরস্কৃত করা হয়।
প্রশ্ন: কতজন নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন?
উত্তর: জিন-পল সার্ত্র (১৯৬৪) ও লে ডুক থো (১৯৭৩) দুজনই নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
প্রশ্ন: গণিতে নোবেল পুরস্কার কেন নেই?
উত্তর: আলফ্রেড নোবেল গণিতের প্রতি আগ্রহী ছিলেন না, তাই গণিতে নোবেল পুরস্কার নেই।
প্রশ্ন: গান্ধীজি নোবেল পুরস্কার পাননি কেন?
উত্তর: প্রাপকের অভাব ও মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় গান্ধীজি নোবেল পুরস্কার পাননি।
প্রশ্ন: প্রথম মুসলিম নোবেল বিজয়ী কে ছিলেন?
উত্তর: আবদুস সালাম প্রথম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
প্রশ্ন: নোবেল শান্তি পুরস্কার নির্বাচনের পদ্ধতি কী?
উত্তর: নোবেল কমিটি অক্টোবরের শুরুতে বিজয়ী নির্ধারণ করে এবং ডিসেম্বর মাসে পুরস্কার প্রদান করে।
প্রশ্ন: পৃথিবীর প্রথম নারী বিজ্ঞানী কে ছিলেন?
উত্তর: মেরি কুরি প্রথম প্রখ্যাত নারী বিজ্ঞানী ছিলেন।
প্রশ্ন: ২০২৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার কে পেয়েছেন?
উত্তর: জাপানে পরমাণু বোমা থেকে বেঁচে যাওয়া “হিবাকুশা” সংগঠনটি ২০২৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে।