বাংলাদেশের নদনদী রচনা
বাংলাদেশের নদনদী রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় বাংলাদেশের নদনদী রচনা না দিয়ে বলা হয় বাংলাদেশের নদনদী সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে বাংলাদেশের নদনদী সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে বাংলাদেশের নদনদী রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে।
বাংলাদেশের নদনদী রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। বাংলাদেশের নদনদী এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। Bangladesh River essay is written for class- 3, 4, 5, 6 and 7.
বাংলাদেশের নদনদী
সূচনা :
আমি বাংলার, বাংলা আমার জন্মভূমি
বাংলা আমার, গঙ্গা ও যমুনা
বহিছে যাহার চরম ভূমি, পদ্মা ও মেঘনা
[কায়কোবাদ]
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। অসংখ্য নদনদী এদেশের বুকের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে। নদীগুলো আমাদের দেশের মাটিকে উর্বর করেছে। সাধারণ মানুষের জীবিকা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রেখেছে। নদীই যেন এদেশের প্রাণ । এদেশের অর্থনীতি নদীগুলোর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের প্রধান নদনদী
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপত্র বাংলাদেশের প্রধান নদনদী। এছাড়া রয়েছে ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গা, তিস্তা, কুশিয়ারা, শীতলক্ষ্যা, আত্রাই, গড়াই, কর্ণফুলী, মাতামুহুরী, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ এবং আরও অনেক নদ-নদী ।
পদ্মা : বাংলাদেশের প্রধান নদী পদ্মা। উত্তর ভারতের হিমালয়ের গঙ্গোত্রী নামক হিমবাহ হতে উৎপত্তির পর ভারতের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাজশাহী জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে এসে পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে । পদ্মা আমাদের দেশকে সমৃদ্ধিশালী করেছে।
মেঘনা নদী
মেঘনা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী। এ নদী নাগা মনিপুর জলবিভাজিকা থেকে উৎপন্ন হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পদ্মা ও যমুনার সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামেই বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
যমুনা নদী
যমুনা বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী। এ নদী উৎপত্তির স্থান থেকে আসামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যমুনা গোয়ালন্দের কাছে এসে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ধলেশ্বরী যমুনার প্রধান শাখানদী ।
কর্ণফুলী নদী
বাংলাদেশের খরস্রোতা নদী কর্ণফুলী। এটি লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপাসাগরে পড়েছে। কর্ণফুলী নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার। হালদা, বোয়ালখালী ও কাসালং এর প্রধান উপনদী।
ব্রহ্মপুত্র নদ
হিমালয় পর্বতের কৈলাশ শৃঙ্গের হিমবাহ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ উৎপন্ন হয়েছে। তিব্বত ও আসামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রংপুর জেলার কুড়িগ্রামের কাছে এসে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর একটি শাখা দক্ষিণ যমুনা নামে প্রবাহিত হয়ে পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। অন্য শাখাটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নদীর সাথে মিশেছে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নদনদীর প্রভাব
নদীর সঙ্গে রয়েছে আমাদের গভীর সম্পর্ক। এক সময় যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল নদী পথ। বর্তমানে নদী পথে নানা পণ্য সরবরাহ করা হয়। কৃষিকাজে সেচব্যবস্থার জন্য নদীর প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নানা বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এছাড়া জেলে সম্প্রদায় নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে । এদেশের শিল্প-সাহিত্যের অনেকাংশ জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশের নদী।
নদনদীর উপকারিতা
নদী আমাদের অনেক উপকার করে, জীবনের সাথে নদী ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। যাতায়াত ও মালপত্র আনা নেওয়া করতে নদীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া স্বপ্ন ব্যয়ে নদীপথে নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমারে করে অতি সহজে যাতায়াত করা যায়। নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে সংসার নির্বাহ করে অনেক জেলে পরিবার। দৈনন্দিন কাজে বহুমাত্রিক ব্যবহার হয় নদনদীর পানির। নদনদীতে প্রাপ্ত মাছ আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করে। শুষ্ক মৌসুমে নদী থেকে জলসেচের দ্বারা শস্য উৎপাদন করা হয়। নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও জাতীয় অর্থনীতিতে নদ-নদীগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
নদনদীর অপকারিতা
উপকারিতার পাশাপাশি নদীর কিছু অপকারিতা রয়েছে। বর্ষাকালে নদীগুলো জলে টুইটম্বুর হয়ে যায়। নদী উপচে বানের জলে ভাসিয়ে দেয় রাস্তাঘাট, বাড়িঘর। ফসলি জমিতে জল উঠে নষ্ট করে দেয় ফসল। কখনো কখনো নদীর প্রবল স্রোতে ভাঙন সৃষ্টি করে। নদীভাঙনের প্রবণতা মাঝে মাঝে এত তীব্র হয় যে একটি এলাকা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষ। মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিয়ে হয়ে যায়। নদীর প্রবল স্রোত প্রাণহানিও ঘটায়। প্রতিবছর নদীভাঙনে বাংলাদেশের অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপসংহার
অপকারিতার তুলনায় নদীর উপকারিতা অনেক বেশি। বাঙালি জীবনের সাথে একাত্ম হয়ে আছে নদনদী; আমাদের ভূমি হয়েছে সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা, অন্যদিকে তেমনি এদেশের মানুষের জীবনজীবিকার পথ হয়েছে সুগম।
বাংলার নদী কি শোভাশালিনী/কি মধুর তার কুল কুল ধ্বনি
দু ধারে তাহার বিটপীর শ্রেণী/হেরিলে জুড়ায় হিয়।
-[কায়কোবাদ]
সবশেষে
অনেকেই বাংলাদেশের নদনদী রচনা pdf চেয়েছেন। বাংলাদেশের নদনদী রচনা class 8, আদর্শ গ্রাম রচনা ক্লাস ২, আদর্শ গ্রাম অনুচ্ছেদ রচনা, বাংলাদেশের নদনদী রচনা ৩য় শ্রেণি, বাংলাদেশের নদনদী রচনা ক্লাস 6, বাংলাদেশের নদনদী রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট।
যেভাবে খুঁজে পাবেন: বাংলাদেশের নদনদী রচনা class 7, একটি বাংলাদেশের নদনদী রচনা class 5, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বাংলাদেশের নদনদী, আমার দেখা একটি বাংলাদেশের নদনদী রচনা ৫০০ শব্দ, বাংলাদেশের বাংলাদেশের নদনদী অনুচ্ছেদ, বাংলাদেশের সেরা ১০ বাংলাদেশের নদনদী, বাংলাদেশের সেরা বাংলাদেশের নদনদী, বাংলাদেশের নদনদী ঢাকা।