সুস্থ থাকার জন্য শেষ বয়স পর্যন্ত মেনে চলুন
কথায় বলে, বয়স একটা সংখ্যামাত্র! আসলেই তাই। সুস্থ জীবনযাপন করলে বেশি বয়সেও আপনি থাকতে পারেন একেবারে ফিট। সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে, ফলে ৬০-৬৫ বছরের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়ে। কিন্তু একটুখানি সচেতন থাকা আর কিছু নিয়ম কে অভ্যাসে পরিনত করলে ৬৫-এর পরেও আমরা থাকতে পারি একেবারে ফিট!
কী সেই নিয়মগুলো? চলুন জেনে আসি।
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
প্রতিদিন অল্প হলেও সহজ কিছু ব্যায়াম করুন। যেমন, সাইকেল চালানো, হাঁটা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। এছাড়াও যোগব্যায়াম করতে পারেন। আপনি যত বেশি নড়াচড়া করবেন, আপনার শরীর তত বেশি প্রদাহ ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হবে। শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ততই বাড়বে।
২. সুষম খাবার খান:
ফল, শাকসবজি এবং মাছ সমৃদ্ধ খাবার আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করবে। তাছাড়া ফল ও সবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। অ্যালকোহল, চিনিযুক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার ও লাল মাংস বাদ দেওয়াই ভালো। বয়স যখন ৬০ তখন কি খাবেন আর কি খাবেন না দেখে নিন- এখানে
৩. ঘনঘন হাত ধোয়া:
নিয়মিত হাত ধোয়া সারা বছর সুস্থ থাকার আর একটি চমৎকার উপায়। খাবার খাওয়ার আগে ও পরে, বাহির থেকে এসে, কোনো কাজ করার পর সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত ভালোভাবে ধুতে হবে। এছাড়াও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
৪. মানসিক চাপ কমান:
অতিরিক্ত মানসিক চাপ আপনার শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। যা শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে আরও দুর্বল করে। মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপেরও কারণ হতে পারে। তাই মানসিক চাপ কমাতে আনন্দদায়ক কাজ করুন, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখুন।
৫. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন:
ঘুম শুধু স্ট্রেস লেভেলই কমায় না এটি আপনার শরীরকে আরও ভিতর থেকে সক্রিয় ও উৎফুল্ল রাখে। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুম আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি স্মৃতিশক্তি ও একাগ্রতা উন্নত করে। রাতে অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৬. প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টারি ভিটামিন গ্রহণ করুন:
আপনার শরীরের অবস্থা অনুযায়ী ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে প্রতিদিনের খাবারের পাশাপাশি কিছু পরিপূরক যেমন ক্যালসিয়াম, মাল্টিভিটামিন বা কিছু ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। এতে আপনার শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে সহজেই।
৭. সংক্রমণ প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিন:
কিছু কিছু ফ্লু-এর টিকা আছে যেগুলো বছরে একবার নিলে সারাবছর সেসব ফ্লু থেকে মোটামুটি নিশ্চিন্ত থাকা যায়। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এসব টিকা নিয়ে ফেলতে পারেন। পাশাপাশি কোভিড ১৯-এর ফুল ডোজ টিকাও নিয়ে ফেলতে হবে।
৮. ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ সবসময় খেয়ালে রাখুন:
আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস কিংবা কোলেস্টেরলজনিত সমস্যার রোগী হয়ে থাকেন তবে এগুলো নিয়মিত চেক করুন। এর বাইরে প্রতি অন্তত একবার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো শরীর চেকআপ করা ভালো অভ্যাস।
৯. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিকতা রক্ষা করুন:
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের বন্ধু কমতে থাকে, গণ্ডি ছোটো হতে থাকে। কিন্তু এই বয়সে মন ও শরীর ভালো রাখার জন্য বন্ধু ও প্রিয়জনের সাথে কথা বলা, একসাথে সময় কাটানো খুবই জরুরি। কিন্তু এজাতীয় সামাজিকতা রক্ষা করতে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা খুবই জরুরি। বাইরে গেলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার করুন।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন: বয়স বাড়লেও সুস্থ থাকার উপায় কী কী?
উত্তর: খাবার নিয়ম মতো খেতে হবে। তাছাড়া, নিয়মিত ব্যয়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম।
প্রশ্ন: ক্লান্তি ও বয়স্কভাব কখন আসে?
উত্তর: এটা ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। কারও ৩০ বছর বয়সে, কারও ৫০ বছর আবার কারও ৬০ বছর বয়সে।