রচনা

কোটা সংস্কার আন্দোলন রচনা SSC HSC ১৫ ২০ ২৫ ৩০ পয়েন্ট।

কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা না দিয়ে বলা হয় কোটা সংস্কার  আন্দোলন সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে কোটা সংস্কার  আন্দোলন সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনাটি । কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। কোটা সংস্কার  আন্দোলন এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। Kota Sonskar Andolon 2024 essay is written for class- 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10

কোটা সংস্কার আন্দোলন রচনা ২০২৪

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভিন্ন সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঘটেছে। এসব আন্দোলনেই শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অধিকার আদায়ের অন্যতম আলোচিত আন্দোলন হলো “কোটা সংস্কার আন্দোলন”। ২০১৮ সালে এই আন্দোলন শুরু হয়ে দেশের শিক্ষার্থী সমাজে এক বৃহৎ সাড়া জাগায়। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবি থেকে এই আন্দোলন জন্ম নেয়। এ আন্দোলনের পেছনে ছিল মূলত মেধা ও ন্যায়ের দাবি এবং এই প্রেক্ষাপট থেকেই এর গুরুত্ব ফুটে ওঠে।

১. আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং পটভূমি

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সূচনা হয়। এটি তখন মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের এবং দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য ছিল। পরবর্তীতে নারী, উপজাতি এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্যও কোটা সংরক্ষিত হয়। তবে, সময়ে সময়ে কোটার পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং প্রায় ৫৬% সরকারি চাকরি কোটা ব্যবস্থা দ্বারা সংরক্ষিত হয়, যেখানে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য অবশিষ্ট থাকে মাত্র ৪৪%। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই কোটা ব্যবস্থা পরবর্তীতে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দেয়।

২. আন্দোলনের প্রধান কারণ

কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কিছু মানুষের বিশেষ সুবিধা থাকায় তা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বৈষম্যের সৃষ্টি করছিল। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চতর নম্বর পাওয়ার পরেও কোটা প্রার্থীদের কারণে নিয়োগ পরীক্ষায় সুযোগ পাচ্ছিল না। ফলে, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি, অনেক সময় কোটা ব্যবস্থার অপব্যবহারও লক্ষ্য করা যায়, যা শিক্ষার্থীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।

৩. আন্দোলনের সূচনা

২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই আন্দোলন অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া এ আন্দোলন এক সময় জাতীয় আন্দোলনের রূপ নেয়।

৪. আন্দোলনের মূল দাবি

শিক্ষার্থীরা কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে পাঁচ দফা দাবি সামনে তুলে ধরেন:

  1. কোটা ব্যবস্থা কমিয়ে ৫৬% থেকে ১০% এ নামানো।
  2. মেধার ভিত্তিতে চাকরি নিয়োগের সুযোগ বাড়ানো।
  3. কোটার মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুনর্বিন্যাস।
  4. প্রতিবন্ধী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সংরক্ষণ।
  5. নিয়োগে কোনো ধরনের বৈষম্য না রাখা।

৫. আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের অবস্থান

আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি আমলে না নিলে, আন্দোলন আরও বেগবান হয়। তবে, বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও প্রাথমিকভাবে কোনো সমাধান আসেনি। এ কারণে, বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

৬. আন্দোলনের গুরুত্ব এবং শিক্ষার্থীদের ঐক্য

কোটা সংস্কার আন্দোলন শুধু কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবি নিয়ে ছিল না; এটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটা ঐক্যবদ্ধ মানসিকতার প্রতিফলন ঘটায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমান অধিকার ও মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এটি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার গঠনমূলক ও যুগান্তকারী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়।

৭. মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা

এই আন্দোলনকে আরও জোরালো করে তোলে মিডিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার। টেলিভিশন, সংবাদপত্র, এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপ তুলে ধরার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারে। মিডিয়ার ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মনোবল বাড়ায় এবং আন্দোলনকে আরও সমৃদ্ধ করে।

৮. আন্দোলনের প্রভাব

আন্দোলনের চাপে সরকার এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন যে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করা হবে এবং এরপরেই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সুযোগ বাড়ানো হয়।

৯. আন্দোলনের ফলাফল

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সরকারি চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগের গুরুত্ব বেড়ে যায় এবং এটি ভবিষ্যতে মেধাবীদের জন্য আরও বড় সুযোগ সৃষ্টি করে। তবে, আন্দোলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে কিছু শিক্ষার্থী পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থায় মেধার ভিত্তিতে সংস্কারের পথ তৈরি হয়।

১০. শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

এই আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আশা করেন যে, আগামীতে সরকারি চাকরিতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। তবে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সফল বাস্তবায়ন আরও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, যেহেতু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সংরক্ষণ একটি সামাজিক প্রয়োজন। ফলে, ভবিষ্যতে সরকারের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

১১. সমাজে আন্দোলনের প্রভাব

কোটা সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশের তরুণ সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করে। মেধা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। এ আন্দোলন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয় যে, কোনো বৈষম্যমূলক নিয়মনীতি বা প্রথা থাকলে তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ করা যায় এবং প্রথাগত চিন্তাভাবনার বাইরে গিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

১২. সমালোচনা ও বিতর্ক

এ আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক ছিল। অনেকেই মনে করেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য কোটার ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা সংরক্ষণ করা উচিত। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, কোটার মাধ্যমে কিছু মানুষ বিশেষ সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছিল, যা মেধাবীদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করছিল না।

১৩. আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রভাব

কোটা সংস্কার আন্দোলন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দেশের বাইরেও আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও তা প্রশংসিত হয়।

১৪. শিক্ষা ও সচেতনতা

এ আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে ওঠে। এটি তরুণ প্রজন্মকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার শিক্ষা দেয় এবং তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস সঞ্চারিত করে।

১৫. উপসংহার

কোটা সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এটি তরুণ প্রজন্মের মেধা, ন্যায্যতা, ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এক নজিরবিহীন সংগ্রাম। এ আন্দোলন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, কোনো বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী হতে পারে না। সমাজে ন্যায্যতা এবং সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য যৌক্তিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা এবং শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধতার গুরুত্ব প্রমাণিত হয় এই আন্দোলনের মাধ্যমে।

সবশেষে

অনেকেই কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা pdf চেয়েছেন। কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা class 8, কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা ক্লাস ২, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোল অনুচ্ছেদ রচনা, কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা ৩য় শ্রেণি, কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা ক্লাস 6, কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট। মাই ক্লাসরুম ফেসবুক পেজ এখানে

যেভাবে খুজে পাবেন: কোটা সংস্কার  আন্দোলন রচনা সহজ ভাষায় ২০০ শব্দ, ৩০০ শব্দ, ৪০০ শব্দ, ৪৫০ শব্দে লেখা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে রচনাটি লেখা হয়েছে। জুলাই বিপ্লব রচনাটি ৬ষ্ঠ ৭ম ও ৮ম শ্রেণির জন্য ১৫ পয়েন্ট ২০ পয়েন্ট  করে লেখা হয়েছে। ৯ম ১০ম ১১শ ও ১২শ ক্লাসের জন্য ২৫ পয়েন্ট ও ৩০ পয়েন্ট করে লেখা হয়েছে। অনেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রচনা pdf ডাউনলোড করতে চান। আপনি মাই ক্লাসরুম থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন না। ১১ থেকে ২০ গ্রেডের অনেক চাকরি পরীক্ষা লিখিত হয়। লিখিত চাকরী পরীক্ষাগুলোতে রচনা লিখতে হয়। লিখিত চাকরি পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য উপযোগী করে এই রচনাগুলো লেখা হয়েছে। চাকরী পরীক্ষা যেমন- ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা, ইউনিয়ন সমাজকর্মীর জন্য বাংলা রচনা, খাদ্য অধিদপ্তর এর জন্য বাংলা রচনা প্রস্তুতি, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষা প্রস্তুতি, বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি, ব্যাংক লিখিত প্রস্তুতি সহ সকল সরকারি ও বেসরকারি চাকরি পরীক্ষার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন রচনা:

M@mun

Hasan Al Mamun is a dedicated teacher, blogger, and YouTuber who has achieved great success in his field. He was born to parents Shahjahan Topodar and Masrura Begum and grew up with a love for learning and exploration. After completing his Bachelor's degree, Hasan pursued a Master's degree in Accounting and excelled in his studies. He then began his career as a teacher, sharing his knowledge and passion for accounting with his students. In addition to teaching, Hasan is also an avid blogger and YouTuber, creating content that educates and inspires his viewers. His YouTube channel, "My Classroom," has grown to an impressive 240,000 subscribers, earning him a silver play button from YouTube. Hasan's interests include book reading, travelling, gardening, and writing, and he often incorporates these passions into his work. He strives to create an honest and supportive community in all of his endeavors, encouraging his followers to learn and grow alongside him. Overall, Hasan Al Mamun is a talented and dedicated individual who has made a significant impact in the fields of education, blogging, and content creation.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button