সাধারন জ্ঞান

বৈষম্যরোধে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা

ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে এবং স্বাধীনতার পর থেকে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিকদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে, বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামাজিক অনিয়ম ও অবিচার দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের পদক্ষেপ শুরু হয়। ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কর্তৃক রাষ্ট্র সংস্কারের ঘোষণা দেন, যা সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করে।

‘বৈষম্য’ শব্দটি ল্যাটিন শব্দ “discrimire” থেকে এসেছে, যার অর্থ আলাদা করা বা পার্থক্য করা। বৈষম্য বলতে বোঝায়, নির্দিষ্ট গুণসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট গুণহীন বা কম গুণসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিচু করে দেখা বা কর্মের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা। অন্যদিকে, পূর্বে যা ছিল তার আধুনিক বাস্তবসম্মত পরিমার্জনকেই সংস্কার বলা হয়। সংস্কারের বাংলা অর্থ হলো মেরামত বা সঠিক করা।

ম্যাগনাকার্টা সনদ

রাষ্ট্র সংস্কারের অন্যতম উদাহরণ হলো ম্যাগনাকার্টা। ১২১৫ সালের ১৫ জুন ব্রিটিশ রাজা জন তার সামন্তদের চাপে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, যার মূল শর্ত ছিল যে রাজা জনগণের স্বাধীনতা ও সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না স্থানীয় প্রতিনিধিদের অনুমতি ছাড়া।

বৈষম্যবিরোধের পটভূমি

ব্রিটিশ উপনিবেশের সময় ভারতীয় উপমহাদেশে নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সংস্কারের দাবি উঠেছিল। ১৯০৯, ১৯১৯ ও ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতকে বিভিন্নভাবে সংস্কার করা হয়। পাকিস্তানি শাসনামলেও ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ সালের সংবিধান প্রণয়ন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্র ও সমাজ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা:

রাষ্ট্র সংস্কার একটি জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং কাজ। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে “রাষ্ট্র সংস্কার” শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই সংস্কার হচ্ছে সাংবিধানিক, রাজনৈতিক, নির্বাচন কমিশন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কাঠামোতে বৈষম্য রোধে বিভিন্ন আইনের সংস্কার প্রয়োজন। এছাড়া ব্যাংক, শেয়ার বাজারসহ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আইনি কাঠামো সংস্কারও প্রয়োজন। বৈষম্যহীনতার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

মানবাধিকার

১৯৪৮ সালের মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে যে “সকলেই যেকোনো বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী” (অনুচ্ছেদ ৭)। ১৯৬৫ সালে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে বর্ণবৈষম্য নিরসনের কনভেনশনে বলা হয়, জাতিগত, ধর্মীয় ও জাতীয় ঘৃণার সমস্ত প্রকাশ জাতিসংঘের সনদের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে এ ধরনের সব ঘৃণামূলক প্রকাশ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ:

বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিতকরণে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।” রাষ্ট্রের বিশাল অংশের সম্পদ সীমিত গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত করা এবং তাদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সংবিধানের নির্দেশনার বিপরীত।

নারী-পুরুষের সমতা

বাংলাদেশের সংবিধানে নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হলেও সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে নারীরা এখনও অনেক ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। সংবিধানের ১০নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে বাস্তবে এই অধিকার কার্যকর করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বৈষম্য দেখা যায়, বিশেষ করে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে। সমান কর্মসংস্থানের সুযোগের ধারণাটি এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি, ফলে নারীরা কর্মক্ষেত্রে যথাযথ সমান সুযোগ লাভ করতে পারছে না।

ধর্মীয় সম্প্রীতি

বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮নং অনুচ্ছেদে ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে রাষ্ট্র কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সাথে, নারীর জন্যও সমান অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৯নং অনুচ্ছেদে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধি জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিককে সমান অধিকার প্রদান করে, যা ব্যক্তিকে যেকোনো ধরনের বৈষম্য বা সহিংসতার বিরুদ্ধে রক্ষা করে। এটি বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা:

গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমগুলো সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশ করতে এবং তথ্য বিনিময়ের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে। বৈষম্যহীন মূল্যবোধ প্রচার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণমাধ্যম জনগণের কথা তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হলে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং নীতিনির্ধারণের প্রক্রিয়ায় দুর্বলতা দেখা দেয়। সঠিক তথ্যপ্রকাশের মাধ্যমে গণমাধ্যম সমাজের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে সক্ষম।

রাজনৈতিক ব্যবস্থা

বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের আশা হলো গণতন্ত্র ও সুশাসন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে দলীয় সমন্বয়ের অভাব এবং এককেন্দ্রিক ক্ষমতার প্রভাব দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দুর্বল করে দিয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি। নির্বাচনব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংস্কার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উন্নয়ন দেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আইন ও বিচার বিভাগ

স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার কথা থাকলেও স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বিচারবিভাগ রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। বিচারকদের নিয়োগ, পদোন্নতি এবং বিভিন্ন স্তরে বৈষম্য ও পক্ষপাতিত্বের সমস্যা দেখা যায়। এসব থেকে উত্তরণের জন্য বিচার বিভাগে সংস্কার অপরিহার্য। সঠিকভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত বিচার বিভাগ গঠন এখন সময়ের দাবি, যা সমাজে সুবিচার ও মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

প্রশাসনিক ব্যবস্থা: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রশাসনিক পরিবর্তন এবং চ্যালেঞ্জ

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা মূলত উপনিবেশিক ধারায় পরিচালিত হতে থাকে। এই প্রশাসনিক ব্যবস্থার মূলে ছিল উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা, যা স্থানীয় জনগণের প্রয়োজন ও সমস্যা মেনে চলতে সক্ষম ছিল না। স্বাধীনতার পরেও এই ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত দুর্নীতির কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। দুর্নীতি এখন বাংলাদেশের একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থার কার্যকরী দিকগুলোর মধ্যে দুর্নীতির ব্যাপকতা প্রশমন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা বিঘ্নিত হয়ে যাচ্ছে এই দুর্নীতির কারণে, যা সরকারের উন্নয়ন উদ্যোগগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশেষত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে স্বচ্ছতার অভাব এবং অর্থের অপব্যবহার খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের উন্নয়নশীল কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। তাই, এই প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তা আরও কার্যকরী এবং দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনশীল হয়। এই সংস্কারের মাধ্যমে প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ, গতিশীল এবং দায়িত্বশীল করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শিক্ষাখাত: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার

শিক্ষা একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচিত হয়, যা দেশের ভবিষ্যত উন্নতির জন্য অতি জরুরি। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে, কার্যকরী শিক্ষার অভাবে বাংলাদেশ বিশ্বমানের উন্নয়ন এবং উন্নতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেশের অন্যতম বড় সমস্যা হলো সরকারের পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার মান কমিয়ে দেয়। এছাড়া, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার বিভাজন এবং কারিগরি শিক্ষা তথা কর্মমুখী শিক্ষার সমান গুরুত্ব না দেওয়াও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নানা ধরনের দক্ষতার অভাব দেখা যাচ্ছে। আর্থিক বৈষম্য দূর করতে এবং শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্নিহিত বৈষম্য কাটাতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এজন্য অতি দ্রুত একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো জরুরি, যাতে এটি দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যত চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়।

বৈশ্বিক রাষ্ট্র সংস্কারের উদাহরণ

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ তাদের নিজস্ব সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র সংস্কার সম্পাদন করেছে। এসব সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল সমাজে বৈষম্য কমানো এবং একটি সুস্থ, উন্নত এবং সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। কিছু দেশের উদাহরণে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো (নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড), রুয়ান্ডা এবং যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি দেশ তার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও বাস্তবতার ভিত্তিতে এই সংস্কারগুলো পরিচালনা করেছে, তবে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠা এবং সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।

বৈষম্য দূরীকরণে করণীয়

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূরীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে, এই উদ্দেশ্যে যে পদক্ষেপগুলি প্রয়োজন তা নিম্নলিখিতভাবে সন্নিবেশিত করা যেতে পারে:

  1. প্রশাসনিক দুর্নীতি দূরীকরণ প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত এবং কার্যকরী করার জন্য একটি শক্তিশালী সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে সরকারি পরিষেবাগুলি জনগণের কাছে নিরপেক্ষভাবে পৌঁছাবে।
  2. সরকারি পরিষেবায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি: সরকারি পরিষেবাগুলিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির উন্নত ব্যবহারের মাধ্যমে সুষ্ঠু কাজকর্ম নিশ্চিত করতে হবে। এতে জনগণ সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবে এবং সরকারের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
  3. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কার্যকরভাবে চালু করতে হবে, যা শুধুমাত্র প্রশাসনিক পর্যায়ে নয়, বরং সকল স্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে।
  4. স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে সকল নাগরিকের ভোটাধিকার সুরক্ষিত থাকে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
  5. মানবাধিকার রক্ষা ও সুশাসন: মানবাধিকার সুরক্ষিত করতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর আধুনিক প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ করতে হবে। এতে জনগণের মধ্যে সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের ধারণা আরও দৃঢ় হবে।
  6. বহির্বিশ্ব থেকে চাপ মোকাবিলা: দেশীয় স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে আন্তর্জাতিক চাপ বা উসকানির মোকাবিলায় কৌশলী কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
  7. শিক্ষাব্যবস্থা ও কর্মসংস্থান: শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এটি দেশের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।
  8. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আরও উদার হতে হবে, যাতে জনগণ সঠিক তথ্য লাভ করতে পারে। এটি গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে।
  9. মত প্রকাশের অধিকার: মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রেখে গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভগুলো শক্তিশালী করতে হবে। এতে দেশের জনগণ তাদের মতামত freely প্রকাশ করতে পারবে, যা একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং গণ-অভ্যুত্থান রাষ্ট্র সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হয়ে উঠেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি প্রমাণিত যে জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপক আশা এবং আকাঙ্ক্ষা জন্মেছে। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন চেয়েছে। তারা আর কোনো কর্তৃত্ববাদী সরকার বা একনায়কতন্ত্র দেখতে চায় না। জনগণের সঙ্গে মিলিত হয়ে শিক্ষার্থীরা এক নতুন সমাজ ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে আন্দোলন করছে, যেখানে গণতন্ত্র এবং সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ দেশের সাধারণ মানুষও শিক্ষার্থীদের এই স্বপ্নের সঙ্গে একমত হয়েছে। তাদের চাহিদা এবং প্রত্যাশা নতুন করে আস্থা ও আশাবাদের জন্ম দিয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশকে একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

M@mun

Hasan Al Mamun is a dedicated teacher, blogger, and YouTuber who has achieved great success in his field. He was born to parents Shahjahan Topodar and Masrura Begum and grew up with a love for learning and exploration. After completing his Bachelor's degree, Hasan pursued a Master's degree in Accounting and excelled in his studies. He then began his career as a teacher, sharing his knowledge and passion for accounting with his students. In addition to teaching, Hasan is also an avid blogger and YouTuber, creating content that educates and inspires his viewers. His YouTube channel, "My Classroom," has grown to an impressive 240,000 subscribers, earning him a silver play button from YouTube. Hasan's interests include book reading, travelling, gardening, and writing, and he often incorporates these passions into his work. He strives to create an honest and supportive community in all of his endeavors, encouraging his followers to learn and grow alongside him. Overall, Hasan Al Mamun is a talented and dedicated individual who has made a significant impact in the fields of education, blogging, and content creation.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button