কুরবানী কি? ফরজ না সুন্নাত? কুরবানী সম্পর্কিত ৫০টি প্রশ্নোত্তর। kurbani ki?
(قربانى) কুরবানি শব্দটি উর্দু শব্দ। এ শব্দটি এসেছে আরবী শব্দ কুরবান বা করব থেকে যার অর্থ “নৈকট্য”। প্রশ্ন হচ্ছে- কুরবানী কি? অথবা কোরবানি কাকে বলে? কুরবানী হচ্ছে- আল্লাহর সন্তুষ্টি বা নৈকট্য লাভের জন্য মনের পশুকে কুরবানী দেয়ার জন্য পশু জবাই করা।
কুরবানীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য
কুরবানীর ইতিহাসের শুরু হয়েছে হযরত আদম (আঃ) -এর পুত্রদ্বয় ক্বাবীল ও হাবীল -এর দেওয়া কুরবানীর মাধ্যমে । কিন্তু, আমরা এখন যে কুরবানী করি তা এসেছে ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক পুত্র ইসমাঈল (আঃ) -কে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানী দেওয়া থেকে। এ ঘটনা অনুসরণ করে পশু কুরবানীর হুকুম এখনো মুসলিমরা পালন করছেন। পবিত্র কুরবানীর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন- অর্থঃ “যখন ইসমাঈল (আ:) তার পিতা (ইব্রাহীম আ:) এর সাথে চলাফেরা করার মতো বয়স হল, ঠিক তখন ইবরাহীম (আ:) তাকে বললেন, হে আমার সন্তান! আমি স্বপ্ন দেখেছি, আমি তোমাকে জবেহ করছি। এখন তুমি চিন্তা করে বলো- তোমার মতামত কি? ইসমাঈল (আ:) বলল, হে পিতা! আপনাকে যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা প্রতিপালন করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। তারপর যখন পিতা ও পুত্র আত্মসমর্পন করল এবং পিতা পুত্রকে উপুড় করে ফেলল, তখন আমি তাকে ডাক দিলাম, হে ইবরাহীম! নিশ্চয়ই তুমি তোমার স্বপ্ন সত্যে পরিণত করেছ। আমি এমনিভাবে সৎকর্মশীল বান্দাদের পুরষ্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এটি সুস্পষ্ট পরীক্ষা (আল্লাহর দিক থেকে)। আর আমি তার (ছেলের) পরিবর্তে (আমার নিজের পক্ষ থেকে) একটা বড় কুরবানী (-র জন্তু সেখানে) দান করলাম। (অনাগত মানুষদের জন্য এ বিধান চালু রেখে) তার স্মরণ আমি অব্যাহত রাখলাম। ইবরাহীমের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক।” (সূরা ছফফাত ১০২-১০৯)
কুরবানীর উদ্দেশ্য কি?
কুরবানীর আসল উদ্দেশ্য আল্লাহ ভীতি ও নৈকট্য অর্জন করা। যেন মানুষ এ চিন্তা করে যে, আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কারণে কুরবানী করা পশুগুলি মানুষের অনুগত হয়েছে। কোরবানীর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের আল্লাহভীতি দেখেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা সুরা হজ্জ এর ৩৭নং আয়াতে বলেন- “কুরবানির পশুর গোশত বা রক্ত আল্লাহর নিকট পৌঁছেনা। বরং তার নিকট পৌঁছে কেবলমাত্র তোমাদের তাকওয়া।”
কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত
কোরবানির ইতিহাস তো জানলাম। মুসলিমদের জন্য কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত কি? আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যার আগ (১০ তারিখ উত্তম) পর্যন্ত কোরবানির নিয়তে উট, গরু কিংবা মহিষ অথবাা ছাগল কিংবা ভেড়া জবেহ করাই হলো কোরবানি। কোরবানির দিন কোরবানি করা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়। কোরবানি করা পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তা কবুল করে নেন। নবীজি বলেন কোরবানি করা পশুর পশম যতবেশিই হোক না কেন, কোরবানি পশুর প্রতিট পশমের বিনিময়ে রয়েছে একটি করে সওয়াব দেয়া হবে।
যাদের সামর্থ্য আছে কিন্তু কোরবানি করে না, তাদের জন্য নবীজি হুশিয়ারী করেছেন। হাদিসে এসেছে- মহাবনী বলেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কোরবানি করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের ধারে-কাছেও না আসে।’ এ থেকে কোরবানির গুরুত্ব সহজেই বোঝা যায়। কোরবানির মাধ্যমে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়।
কোরবানি আমাদের কি শিক্ষা দেয়?
কোরবানির মাধ্যমে সমাজের অভাবগ্রস্থ গরীব দু:খীদের সাহায্য করার শিক্ষা পাই। সবচেয়ে আপন প্রিয় সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি দেয়া হয়। কোরবানির ত্যাগ একদিকে যেমন বড় ইবাদাত অন্য দিকে এটি আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়। অন্তুরের পশুত্ব, নিষ্ঠুরতা, নির্মমতা এবং বীভৎসতাকে দূর করা হয় পশু জবাইয়ের মাধ্যমে। মানবতা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হয় হিংসা বিদ্বেষ, লোভ লালসা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। এতে মনের আত্মশুদ্ধি অর্জনের সাথে তাকওয়া অর্জিত হয়। তবে, আল্লাহর ভালোবাসা শুধু কোরবানিতে সীমাবদ্ধ না রেখে সারা জীবন নিজের মধ্যে জাগ্রত রাখতে হবে। নিজেকে শির্ক মুক্ত রাখা, তাওহীদে বিশ্বাস দৃঢ় করা এবং ইসলামের মহান আদর্শ বাস্তবায়ন হয় কোরবানির মাধ্যমে। পশু কোরবানীর মাধ্যমে নিজের ভিতরকার পশুর কোরবানি করা গেলে পৃথিবী হয়ে সুন্দর, নিরাপদ ও শান্তিময়।
কোরবানির দোয়া কি? বিস্তারিত কোরবানির নিয়ম কানুন
কোরবানী করার জন্য পশুকে প্রথমে পশ্চিম দিকে অর্থাৎ কিবলামুখী করা হয়। তারপর নিচের দোয়াটি পড়তে হয়। অনেকেই এ দোয়া নিয়ে দ্বিমত করেছেন। শুধু বিসমিল্লাহ বলে পশু জবাই করলেই কোরবানী হয়ে যাবে, সমস্যা নেই। তবে দোয়াটি পড়া উত্তম।
দোয়াটি হলো-
اَللَّهُمَّ إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ اِبْرَاهِيْمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ – إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ – لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ – بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ
উচ্চারণ- ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা আলা মিল্লাতি ইবরাহিমা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।
যদি কেউ উপরের দোয়াটি না পারেন তবে নিচের ছোট দোয়াটি পড়বেন- بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ
বাংলা উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা। (আশা করছি এটি খুব সহজেই মুখস্ত করতে পারবেন)
আমরা সাধারণত মসজিদের ইমাম কিংবা মুয়াজ্জিন দিয়ে কোরবানি দিয়ে থাকি। যদি কেউ নিজেই পশু নিজের পশু জবাই করে কোরবানি করতে চায় তাহলে এ দোয়া পড়বেন-
اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِّى كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’
এবার আপনি যদি অন্যের কোরবানি করেন তাহলে আপনি এ দোয়া পড়বেন-
اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِكَ–مِنْكُمْ كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিনকা-মিনকুম’ কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’
মনে রাখবেন- একা কোরবানি দিলে আর পশুটি নিজে জবাই করলে বলতে হয় মিন্নি; অন্যের কোরবানি দেয়ার সময় বলতে হয় ‘মিনকা-মিনকুম’ এবং যাদের নামে কোরবানি তাদের নাম বলতে হবে।
কোন পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যাবে?
কোরবানি দেয়ার জন্য সুন্দর, সুঠাম ও নিঁখুত পশু দরকার। কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু কেনার সময় তাই দেখেশুনে কিনতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক- কোন কোন পশু দিয়ে কোরবানি (kurbanir poshu) করা যায়?
- উট
- গরু
- মহিষ
- ছাগল
- ভেড়া এবং
- দুম্বা
মনে রাখবেন, কোরবানির জন্য এই ছয় প্রকারের পশু জায়েয করা হয়েছে। এর বাহিরে অন্য কোন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবেনা।
কুরবানীর পশুর বয়স (kurbanir poshur boyos) কত হতে হবে
- ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কোরবানী করার জন্য নূন্যতম ১ বছর হতে হবে।
- গরু ও মহিষ – ২ বছর।
- উট – ৫ বছর।
কোরবানি করার জন্য পশুর উপরোক্ত বয়স হতেই হবে। তবে, ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে যদি দেখতে ১ বছরের মত মনে হয় অর্থাৎ বড় ও হৃষ্টপুষ্ট হয় তবে তা দিয়ে কুরবানী দেওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে মুসলিম-১৯৬৩ নং হাদীস- রাসুল ( সঃ ) বলেছেন- “নির্দিষ্ট বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো পশু তোমরা কুরবানী করো না। তবে তা পেতে যদি কখনো দুষ্কর হয়ে যায়, তাহলে শুধু সেক্ষেত্র ছয়মাস বয়সের মেষ-শাবক কুরবানী করতে পার।”
পশুর কি দোষত্রুটির জন্য কোরবানি (Qurbani) হবেনা
- কোরবানির পশুটি কানা হলে কোরবানি হবেনা।
- সুস্পষ্ট রোগা বা অসুস্থ হওয়া যাবেনা।
- খোঁড়া পশু দিয়ে কোরাবানি হবেনা।
- পাতলা, হাড্ডিসার পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবেনা।
- চোখ আছে কিন্তু অন্ধ এমন পশু দিয়ে কোরবানি জায়েয নয়।
- কোরবানী পশুর পেটে বাচ্চা থাকলে হবেনা।
- কান কাটা কিংবা শিং ভাঙ্গা থাকলে হবেনা।
শরীকে বা ভাগে কোরবানি দেয়ার নিয়ম কি?
উট, গরু, মহিষকে সর্বোচ্চ সাত (০৭) ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে। বাকী ভেড়া, দুম্বা,ছাগল ভাগে কোরবানি দেয়া যাবেনা। শরীকে কুরবানী দিলেও গোশত সমান ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। অনুমান বা আন্দাজ করে নেয়া ঠিক নয়। শরীকদার সচেতনতার সাথে নির্বাচন করতে হবে। কোরবানির টাকা হালাল হতে হবে। মনে রাখবেন কোরবানি গোশত খাওয়ার জন্য নয় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মূল লক্ষ্য।
কুরবানীর গোস্ত কিভাবে বন্টন করবো?
কোরবানির গোস্ত বন্টন করা বাধ্যতামূলক নয়। আপনি চাইলে সম্পূর্ন কোরবানির গোস্ত বন্টন করে দিতে পারেন অথবা নিজের জন্য রেখে দিতে পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কুরবানি কেন করি? গোস্ত খাওয়ার জন্য? নিশ্চই না। তাই উত্তম হচ্ছে কুরবানীর মাংশকে ৩ ভাগ করা।
- নিজের জন্য
- আত্ময় স্বজনের জন্য
- গরিব-দুঃখীদের জন্য
এতে আপনার প্রতিবেশি গরীব দু:খী মানুষ একদিন ভালো খেয়ে আপনার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করবেন।
প্রশ্ন: কোরবানী সুন্নত, ওয়াজিব নাকি ফরজ?
উত্তর: এ বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। কারো কারো মতে কুরবানি করা সুন্নতে মুআক্বাদা। আবার কারো মতে কুরবানি করা ওয়াজিব। তবে, অধিকাংশের মতে কুরবানি করা ওয়াজিব। তাই, মতকে প্রাধান্য দিয়ে বলা হয় কোরবানি করা ওয়াজিব।
প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেয়ার নিয়ম কি?
উত্তর: মৃত ব্যক্তির নামে চাইলে কোরবানি দেয়া যায়। এটি মুস্তাহাব। অবশ্যই মনে রাখতে হবে, কোরবানি দেয়ার সময় মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বলতে হবে।
প্রশ্ন: শরীকে কুরবানী কি বিজোড় হতে হবে?
উত্তর: না, শরীকে কোরবানী দিলে জোড় বিজোড় কোন সমস্যা নেই। ০১ থেকে ০৭ পর্যন্ত যেকোন ভাগে হতে পারে।
প্রশ্ন: কুরবানি একা নাকি ভাগে উত্তম?
উত্তর: কুরবানি একা দেয়া উত্তম।
প্রশ্ন: কুরবানির জন্য সর্বোত্তম পশু কি?
উত্তর: সর্বোত্তম পশু উট। তারপর ক্রমান্বয়ে গরু,মহিষ,দুম্বা, ভেড়া, ছাগল।
প্রশ্ন: শ্বশুর বাড়ীর দেয়া খাসি দিয়ে কোরবানি দিলে জায়েয হবে?
উত্তর: স্বেচ্ছায় যদি শ্বশুর বাড়ী থেকে খাসি দেয় কোরবানীর জন্য তাহলে হবে।
প্রশ্ন: কোরবানির পশু প্রদর্শন করা কি জায়েয?
উত্তর: অন্য কেউ বাহবা দিবে এমন উদ্দেশ্যে কোরবানীর পশু প্রদর্শন করা যাবেনা।
প্রশ্ন: কোরবানির পশুর সাথে সেলফি তোলা যাবে?
উত্তর: না, কোরবানির পশুর সাথে সেলফি তুলে ফেসবুকে প্রচার করা খুবই গর্হিত কাজ।
প্রশ্ন: পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে একজন কুরবানী দিলে হবে?
উত্তর: প্রত্যেকের পক্ষ থেকে একজন কুরবানী দিলে হবে। তবে, উত্তম হচ্ছে সামর্থ্যবান সবাই আলাদা আলাদা কুরবানী দিলে উত্তম।
প্রশ্ন: কোরবানী কারো নামে দেয়া যায়?
উত্তর: কোরবানী কারো নামে দেয়া যায়না। এটি একমাত্র আল্লাহর নামে মানুষের পক্ষ থেকে দেয়া যায়।
প্রশ্ন: কষাইকে কাজের বিনিময়ে মাংশ দেয়া যাবে?
উত্তর: কষাইকে মাংশ দেয়া যাবেনা। তবে, কাজের বিনিময়ে যথাযোগ্য মজুরী দিতে হবে।
প্রশ্ন: কোরবানীর অংশীদার বা শরীকদারের টাকা হারাম হলে কুরবানী হবে?
উত্তর: ভাগে কুরবানীর ক্ষেত্রে কোন ভাগীদারের টাকা হারাম হলে কুরবানী হবেনা।
প্রশ্ন: কুরবানীর টাকা অন্য কেউ দিলে হবে কিনা?
উত্তর: এক্ষেত্রে কুরবানী জায়েজ হবে।
প্রশ্ন: হাজী সাহেবদের জন্য দেশে কোরবানী দিতে হবে কিনা?
উত্তর: হজ্জের উদ্দেশ্যে যিনি গিয়েছেন তার জন্য কোরবানী করার প্রয়োজন নেই।
প্রশ্ন: বিয়ের জন্য কুরবানী জায়েজ কিনা?
উত্তর: বিয়ের জন্য কুরবানী করা জয়েজ নেই।
প্রশ্ন: কুরবানীর ভাগীদারদের নাম নেয়া জরুরী কিনা?
উত্তর: পশু জবাইয়ের পর যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া হয় তাদের নাম নেয়া মুস্তাহাব।
প্রশ্ন: বৈদ্যুতিক মেশিন দিয়ে কোরবানী করা জায়েজ আছে কিনা?
উত্তর: পশু যদি কষ্ট না পায়, চুরি দিয়ে জবাই হয় এবং জবাই করার সময় আল্লাহু আকবার বলে সুইচ চালানো হয় তবে, জবাই করা জায়েজ হবে।
প্রশ্ন: কোরবানী কারীকে নোখ, চুল দাড়ি ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
উত্তর: ঈদুল আযহার দিন থেকে পূর্বের দশ দিন কুরবানীকারী নোখ চুল ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সবশেষে: আজকের এই পোস্ট থেকে কুরবানী সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর, কুরবানীর হাদিস, মাসলামাসায়েল, কুরবানীর নিয়ম-কানুন, কুরবানীর দোয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ আপনাদের সকলের কুরবানী কবুল করুন। আমিন।