স্লিপ দিয়ে এনআইডি কার্ড Download করুন

ভোটার নিবন্ধন স্লিপ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) সংগ্রহ করা খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। যারা ইতিমধ্যে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন, তাদের কাছে থাকা ভোটার স্লিপে একটি বিশেষ শনাক্তকরণ নম্বর (ডোকেন নাম্বার) থাকে। এই নম্বর ও জন্মতারিখ ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডিজিটাল কপি (PDF) ডাউনলোড করা সম্ভব, যা সরকারি-বেসরকারি সব কাজে ব্যবহারযোগ্য।
তবে, এই প্রক্রিয়ায় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি। নিয়ম না মানলে আইডি কার্ড ডাউনলোডে সমস্যা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইনে একাধিকবার ভুল তথ্য দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে ব্লক হয়ে যেতে পারে, অথবা সাইটে বিভিন্ন ধরণের ত্রুটির (Error) বার্তা দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক নিয়ম অনুসরণ করলে প্রক্রিয়াটি সহজেই সম্পন্ন করা যাবে।
উল্লেখযোগ্য যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সর্বশেষ হালনাগাদে যারা নতুনভাবে ভোটার হয়েছেন এবং যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারা সহজেই এই স্লিপের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। পাশাপাশি, যারা সম্প্রতি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়েছেন এবং নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন, তারাও একই পদ্ধতিতে তাদের আইডি সংগ্রহ করতে পারবেন।
ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে ভোটার স্লিপ নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়াও নতুন ভোটার নিবন্ধিত হওয়ার পরে নির্বাচন কমিশন এর হট লাইন ১০৫ থেকে নাগরিকদের রেজিস্ট্রেশন কৃত মোবাইল নাম্বারে তাদের নতুন এনআইডি নাম্বার প্রেরণ করা হয়। উক্ত এনআইডি নাম্বার দিয়েও একাউন্ট নিবন্ধন করে আইডি কার্ড বের করা যাবে।
ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলে নির্বাচন অফিসে যেয়ে নতুন আরেকটি ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। আবার কোন কারণে যদি এনআইডি নম্বরটি এসএমএসের মাধ্যমে পাওয়া না যায় তাহলে এসএমএস ডায়াল করে এনআইডি নাম্বারটি সংগ্রহ করতে হবে। অথবা ফরম নম্বরটি সংগ্রহ করে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
নিচের পদ্ধতি অবলম্বন করে একাউন্ট নিবন্ধন এবং আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন:-
Step-1: অ্যাকাউন্ট তৈরি
প্রথম ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধন পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে ভোটার স্লিপে থাকা নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে একটি ফরম পূরণ করতে হয়।
- ভোটার স্লিপের নম্বরের আগে “NIDFN” যোগ করতে হবে। উদাহরণ: NIDFN1234567890
- জন্মতারিখ সঠিকভাবে লিখতে হবে
- তারপর ক্যাপচা কোডটি পূরণ করতে হবে
- সবশেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে

যদি সিস্টেমে “অপ্রত্যাশিত সমস্যার জন্য দুঃখিত” বার্তা দেখা যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এখনো সার্ভারে সংরক্ষিত হয়নি। এ অবস্থায় তথ্য হালনাগাদের জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
যদি এমন কোনো বার্তা না আসে, তবে পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন, যেখানে আপনাকে ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন করতে হবে:
- প্রথমে আপনার স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী বিভাগ নির্বাচন করুন
- এরপর জেলা নির্বাচন করুন
- তারপর উপজেলা বাছাই করুন
- একইভাবে বর্তমান ঠিকানাও নির্ধারণ করুন

নোট: স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা অবশ্যই সঠিকভাবে দিতে হবে। ভোটার নিবন্ধনের সময় যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিল, ঠিক সেই তথ্যই এখানে ব্যবহার করতে হবে। ভিন্ন কোনো ঠিকানা দিলে পরবর্তী ধাপে এগোনো সম্ভব হবে না। পাশাপাশি, তিনবার ভুল ঠিকানা দিলে অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
পরবর্তী ধাপে মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে ওটিপি যাচাই করতে হবে। ভোটার নিবন্ধনের সময় যে মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছিল, সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। চাইলে নম্বরটি পরিবর্তন করে নতুন নম্বরে ওটিপি পাঠানো যেতে পারে। এরপর প্রাপ্ত ওটিপি দিয়ে এই ধাপটি সম্পন্ন করতে হবে।

এরপরের ধাপে, মোবাইলে থাকা NID Wallet অ্যাপ ব্যবহার করে স্ক্রিনে দেখানো QR কোডটি স্ক্যান করতে হবে। কোড স্ক্যান করার পর মোবাইলের ক্যামেরা চালু হবে এবং সেখানে নিজের মুখমণ্ডল ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে স্ক্যান করাতে হবে। এই প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। স্ক্যানিং শেষ হলে আপনি পরবর্তী পেইজে নিজে থেকেই চলে যাবেন।

পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সকল সেবা ব্যবহার এবং অ্যাকাউন্টে লগইনের সুবিধার্থে একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। চাইলে এই ধাপটি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব, তবে নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতে সহজে প্রবেশের জন্য পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করাই উত্তম।

Step-2: আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন
পাসওয়ার্ড সেট করার পর আপনাকে একটি প্রোফাইল পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে বিভিন্ন অপশন থাকবে—যেমন প্রোফাইল তথ্য, রিইস্যু, পাসওয়ার্ড পরিবর্তন এবং ডাউনলোড। আইডি কার্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত দেখতে চাইলে প্রোফাইল অপশন ব্যবহার করা যায়, তবে যদি শুধু ডাউনলোড করতে চান, তাহলে সরাসরি ডাউনলোড অপশন ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।

জাতীয় পরিচয়পত্রের পিডিএফ সংস্করণ ডাউনলোড করতে “ডাউনলোড” অপশনে ক্লিক করতে হবে। এতে করে আপনার এনআইডি কার্ডের ডিজিটাল কপি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাউনলোড হয়ে যাবে।
তবে আপনি যদি আগেই একবার এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে থাকেন (অর্থাৎ পুরাতন ভোটার হয়ে থাকেন), তাহলে এই সেবাটি সরাসরি প্রযোজ্য নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনলাইন থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করতে চাইলে আপনাকে রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে, যেখানে নির্ধারিত ফি প্রযোজ্য হবে।

