বিশ্বের বৃহত্তম ১০ কোম্পানি: সাধারন জ্ঞান। Top 10 Large Company

বৈশ্বিক অর্থনীতির দ্রুত পরিবর্তনশীল এই যুগে কিছু কোম্পানি তাদের বিশাল বাজারমূল্য এবং অব্যাহত উদ্ভাবনের মাধ্যমে শীর্ষস্থানে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। আজকের আলোচনায় আমরা বিশ্বের বৃহত্তম ১০টি কোম্পানির তথ্য তুলে ধরব। এই তথ্যগুলো সাধারণ জ্ঞান এবং চাকরি ও ভর্তি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং এ নিয়ে “মাই ক্লাসরুম” ব্লগে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১. অ্যাপল (Apple)
খাত: প্রযুক্তি | বাজারমূল্য: ৩.৪৪১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
অ্যাপল বিশ্বের সর্ববৃহৎ কোম্পানি, যা তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি পণ্যের জন্য বিখ্যাত। আইফোন, ম্যাকবুক, আইপ্যাড এবং অ্যাপল ওয়াচসহ অ্যাপলের প্রতিটি পণ্যই নতুন মান স্থাপন করে। উদ্ভাবনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত অ্যাপল, তাদের উন্নত প্রযুক্তির জন্য শীর্ষে অবস্থান করছে।
২. মাইক্রোসফট (Microsoft)
খাত: প্রযুক্তি | বাজারমূল্য: ৩.২২১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
মাইক্রোসফট কম্পিউটার সফটওয়্যার এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এ বিশ্বব্যাপী প্রধান ভূমিকা পালন করছে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য কোম্পানিটি বিখ্যাত। এছাড়াও মাইক্রোসফটের ক্লাউড সেবা আজুরেও একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে।
৩. এনভিডিয়া (NVIDIA)
খাত: সেমিকন্ডাক্টর | বাজারমূল্য: ৩.০২৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
গ্রাফিক্স প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (GPU) তৈরির ক্ষেত্রে এনভিডিয়া বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা সেন্টার প্রযুক্তিতেও কোম্পানিটির বিশাল অবদান রয়েছে, যা প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ উন্নয়নের এক অনন্য উদাহরণ।
৪. অ্যামাজন (Amazon)
খাত: ই-কমার্স | বাজারমূল্য: ২.০২০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ই-কমার্স কোম্পানি হিসেবে অ্যামাজনের নাম প্রথমে আসে। প্রাথমিকভাবে বই বিক্রির মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে প্রায় সবধরনের পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে। এছাড়া অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS) মাধ্যমে ক্লাউড পরিষেবাতেও নেতৃত্ব দিচ্ছে।
৫. অ্যালফাবেট (Alphabet)
খাত: প্রযুক্তি | বাজারমূল্য: ১.৯৮৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
অ্যালফাবেট হলো গুগলের মূল কোম্পানি, যা সার্চ ইঞ্জিন, বিজ্ঞাপন ও ইউটিউবের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বিশাল প্রভাব বিস্তার করেছে। এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বয়ংচালিত গাড়ি এবং স্বাস্থ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অ্যালফাবেটের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
৬. সৌদি আরামকো (Saudi Aramco)
খাত: তেল ও গ্যাস | বাজারমূল্য: ১.৭৮৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবের এই কোম্পানি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তেল উৎপাদক। সৌদি আরামকো দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এবং বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে শীর্ষস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে।
৭. মেটা (Meta)
খাত: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম | বাজারমূল্য: ১.৪৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার
মেটা, ফেসবুকের মূল কোম্পানি, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মেটা বিশ্বব্যাপী অসংখ্য ব্যবহারকারীকে সংযুক্ত রেখেছে এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও মেটাভার্স প্রযুক্তিতে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
৮. বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে (Berkshire Hathaway)
খাত: বিনিয়োগ | বাজারমূল্য: ৯৭৫.৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে থাকে। বীমা, জ্বালানি, এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে তাদের বৃহৎ অংশীদারিত্ব রয়েছে।
৯. টিএসএমসি (TSMC)
খাত: সেমিকন্ডাক্টর | বাজারমূল্য: ৯৪৫.৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
টিএসএমসি বা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের প্রধান প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নত চিপ প্রস্তুত করে থাকে, যা আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১০. এলি লিলি (Eli Lilly)
খাত: ফার্মাসিউটিক্যাল | বাজারমূল্য: ৮৩২.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
এলি লিলি একটি প্রখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ওষুধ তৈরি করে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদান অনেক এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
উপসংহার
এই কোম্পানিগুলো আজকের বিশ্বের অর্থনীতি ও প্রযুক্তি খাতের শীর্ষে অবস্থান করছে। এদের প্রতিটি নিজস্ব খাতের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি স্থায়ী প্রভাব ফেলে এবং উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় তাদের ভূমিকা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। “মাই ক্লাসরুম” থেকে এই ধরনের সাধারণ জ্ঞান এবং তথ্যাদি চাকরি ও ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।