Top 10
বিশ্বের বৃহত্তম ১০ দেশের বিস্তারিত বিবরণ। Top 10 Country
মাই ক্লাসরুম ব্লগে আজ আমরা আলোচনা করছি বিশ্বের বৃহত্তম ১০টি দেশ নিয়ে। আয়তন ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের দিক থেকে এই দেশগুলো বিশ্বে অনন্য। চাকরি ও ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত তথ্য হিসেবে এই দেশের বিবরণ জেনে রাখা অত্যন্ত কার্যকর।
১. রাশিয়া
- আয়তন: ১,৭০,৯৮,২৪২ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: রাশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ, যা ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশ জুড়ে বিস্তৃত। এর ভৌগোলিক বৈচিত্র্যে আছে তুন্দ্রা, তৃণভূমি, তাজা ও বরফাচ্ছন্ন অঞ্চলের বিস্তার। সাইবেরিয়া অংশটি তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ার জন্য পরিচিত, যেখানে শীতকালে তাপমাত্রা প্রায় -৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। রাশিয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম বনাঞ্চলও রয়েছে যা পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
২. কানাডা
- আয়তন: ৯৯,৮৪,৬৭০ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: উত্তর আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা। এর ভৌগোলিক বৈচিত্র্যে রয়েছে বিপুল হিমবাহ, বিশাল হ্রদ ও অরণ্য। কানাডা শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত এবং দেশটির আনুমানিক ২০% ভূখণ্ড জলাশয়ে আচ্ছাদিত। এখানকার বিশেষ আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে নায়াগ্রা জলপ্রপাত, রকি পর্বতমালা, এবং আর্কটিক অঞ্চল, যা কানাডাকে বিশ্বের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশে পরিণত করেছে।
৩. চীন
- আয়তন: ৯৫,৯৬,৯৬০ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ এবং এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি। এর ভৌগোলিক বৈচিত্র্যে রয়েছে বর্ধিত পর্বতমালা, মরুভূমি, নদী ও উর্বর সমভূমি। দেশের দক্ষিণে ঘন জনসংখ্যার অঞ্চল এবং উত্তর দিকে গবি মরুভূমি। চীন তার প্রাচীন সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক স্থাপনা, যেমন- গ্রেট ওয়াল অব চায়না ও বিশাল গ্রামীণ এলাকা এবং আধুনিক মেট্রোপলিসের জন্য পরিচিত।
৪. যুক্তরাষ্ট্র
- আয়তন: ৯৫,২৫,০৬৭ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: যুক্তরাষ্ট্র ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি দেশ। এটি উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকোর সঙ্গে সীমানা ভাগাভাগি করে। দেশটির আয়তনে যেমন বিস্তীর্ণ মরুভূমি, তেমনই বিশাল পর্বতমালা, বনাঞ্চল এবং আধুনিক শহর রয়েছে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্ক এবং ইয়েলোস্টোনের মতো প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলো বিশ্ব পর্যটনে জনপ্রিয়।
৫. ব্রাজিল
- আয়তন: ৮৫,১০,৩৪৬ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল, যা মূলত আমাজন বৃষ্টি-অরণ্যের জন্য বিশ্বখ্যাত। দেশটির কেন্দ্রস্থল আমাজন নদী এবং বনভূমি দিয়ে পরিপূর্ণ। এই বনের মধ্যে বাস করে বিপুল পরিমাণ উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি। ব্রাজিলের সাও পাওলো, রিও ডি জেনিরো প্রভৃতি শহরগুলি বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, কার্নিভাল উৎসব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত।
৬. অস্ট্রেলিয়া
- আয়তন: ৭৭,৪১,২২০ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: অস্ট্রেলিয়া মূলত একক মহাদেশ ও দেশ, যা তার বিচিত্র জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানকার বিখ্যাত স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, আউটব্যাক মরুভূমি, এবং অজস্র উষ্ণপ্রধান তৃণভূমি। দেশটিতে কোয়ালা, ক্যাঙ্গারুর মতো অনন্য প্রাণী এবং লাল পাহাড়ের বিস্তার বিশাল দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।
৭. ভারত
- আয়তন: ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: ভারত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ। এই দেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য যেমন বিস্তৃত, তেমনই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও। হিমালয় পর্বতমালা, থর মরুভূমি, সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং গঙ্গা নদী দেশের অনন্য ভূ-প্রকৃতির অংশ। এছাড়া তাজমহল, খাজুরাহোর মন্দির এবং কর্ণাটকের ধৌলি পর্বতমালার মতো ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
৮. আর্জেন্টিনা
- আয়তন: ২৭,৮০,৪০০ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে আর্জেন্টিনা অন্যতম, যা আন্দেস পর্বতমালা এবং বিস্তীর্ণ পাম্পাস তৃণভূমির জন্য পরিচিত। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেস সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের শহর হিসেবে খ্যাত। এছাড়াও প্যাটাগোনিয়া অঞ্চলের বরফময় প্রকৃতি এবং গ্লাসিয়ার জাতীয় উদ্যান পরিব্রাজকদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
৯. কাজাখস্তান
- আয়তন: ২৭,২৪,৯১০ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: কাজাখস্তান মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। দেশটির বিস্তৃত তৃণভূমি, মরুভূমি, এবং কাস্পিয়ান সাগরের তীরে অবস্থিত। কাজাখস্তান তার প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে তেল, গ্যাস এবং খনিজের জন্য বিশ্বে পরিচিত। কাজাখস্তানের রাজধানী নুর-সুলতান আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত।
১০. আলজেরিয়া
- আয়তন: ২৩,৮১,৭৪১ বর্গ কিমি
- বৈশিষ্ট্য: আলজেরিয়া আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ, যার বেশিরভাগ অংশ সাহারা মরুভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত। রাজধানী আলজিয়ার্স ঐতিহাসিক শহর হিসেবে পরিচিত এবং দেশের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সাহারা মরুভূমির প্রভাব আলজেরিয়ার জলবায়ু এবং পরিবেশে বিশাল প্রভাব ফেলে, যা দেশটির অর্থনীতি ও জীবনযাত্রাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।
উপসংহার
বৃহত্তম দেশগুলো তাদের আয়তন, ভূ-প্রকৃতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ দ্বারা বিশ্বে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছে। মাই ক্লাসরুম-এর মাধ্যমে এই দেশগুলোর সম্পর্কে ধারণা অর্জন চাকরি ও ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে।