রচনা

কাজী নজরুল ইসলাম রচনা। Kazi Nazrul Islam essay all class

কাজী নজরুল ইসলাম রচনাটি ৩য় শ্রেনি, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণি, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনি উপযোগী লেখা হয়েছে। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক সময় কাজী নজরুল ইসলাম রচনা না দিয়ে বলা হয় কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য লিখুন। আবার চাকরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আসে কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখুন। বাংলা ২য়পত্র বিষয় থেকে কাজী নজরুল ইসলাম রচনাটি সহজ ভাষায় লিখা হয়েছে । ৩য় থেকে ৭ম শ্রেনি উপযোগী করে লেখা হয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলাম রচনাটি সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখা হয়েছে। যেন, একবার পড়লেই মুখস্থ হয়ে যায়। কাজী নজরুল ইসলাম এর জায়গায় যদি আসে আদর্শ বিদ্যালয় তাহলেও রচনাটি লিখতে পারেন। Historical place essay is written for class- 3, 4, 5, 6 and 7.

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

ভূমিকা : আমার প্রিয় কবি কে? কেউ যদি এ প্রশ্ন করেন, নির্দ্বিধায় বলবো- কাজী নজরুল ইসলাম। আমি নজরুল সাহিত্যের অনুরাগী পাঠক। নজরুলের অগ্নিঝরা বাণী, তাঁর অনিরুদ্ধ যৌবনশক্তির গীতিময় প্রকাশ, তাঁর বন্ধন অসহিষ্ণু চিত্তের আগ্নেয় দোর্দণ্ডতা আমাকে অভিভূত করে।

কবির জন্ম পরিচয়

কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালে ২৪মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দ ১১
জ্যৈষ্ঠ) জন্মগ্রহণ করেন । কাজী নজরুল ইসলামের পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মাতার নাম জায়েদা খাতুন। দুখু মিয়া নামে কাজী নজরুল ইসলামকে ছোটবেলায় ডাকা হতো ।

কবির শিক্ষাজীবন

কাজী নজরুল ইসলামের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পরিধি অতি সংক্ষিপ্ত। ছোটবেলায় তিনি মক্তবে যাওয়া-আসা
করতেন। তাঁর প্রাইমারি শিক্ষা সম্পন্ন হয় মক্তব থেকে। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর হাইস্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। পরবর্তীকালে তিনি বর্ধমানের সিয়ারসোল রাজ হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন। দশম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় তিনি ৪৯ নম্বর বেঙ্গলি রেজিমেন্ট সৈনিকে যোগদান করেন। এখানেই নজরুল ইসলামের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার ইতি ঘটে।

কবির কর্মজীবন

কাজী নজরুল ইসলামের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল অনেক ছোট বয়স থেকেই। নজরুল বারো বছর বয়সে লেটোর
গানের দলে যোগ দেন। এরপর তিনি মাসিক এক টাকা বেতনে রুটির দোকানে কাজ করেন। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হলে নজরুল সেনাদলে যোগ দিলেন। স্কুলের পড়া ছেড়ে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে করাচিতে চলে যান। যুদ্ধ শেষ হলে (১৯১৮) নজরুল হাবিলদার হয়ে ফিরে এলেন। এ সময়ে বিপ্লবী বীর বারীন ঘোষের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে তিনি বাঁধা পড়লেন। মেতে উঠলেন স্বদেশী হাঙ্গামায়। জেলে গেলেন, বেদুইন নজরুল অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নিলেন, ‘ভাঙার গান’ লেখার প্রেরণা পেলেন। নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’ ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ‘নবযুগ’, ‘লাঙল’ ও ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করেছেন।

কবির কাব্যপ্রতিভা

সাহিত্যজগতে তখন চলছে রবীন্দ্রনাথের ‘বলাকা’র যুগ। রবীন্দ্রনাথ যখন বাঁধনহারা দুরন্ত যৌবনের
জয়সংগীত উচ্চারণ করছিলেন, তখনই চির অশান্ত নজরুলের কবি-প্রতিভার উন্মেষ। রবীন্দ্রনাথের ‘সবুজের অভিযান’-এ নজরুল যোগ না দিয়ে পারেননি। তিনি ঝড়ের মাতমে বিজয়কেতন উড়িয়ে অট্টহাস্যে আকাশখানি ফেঁড়ে ‘বিদ্রোহী’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন।

সাহিত্যকীর্তি

নজরুল ইসলাম একের পর এক লিখে চললেন উদ্দামতা ভরা কবিতা আর গান। এক এক করে বেরোল ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশী’, ‘প্রলয়শিখা’, ‘ভাঙার গান’, ‘ফণিমনসা’, ‘সর্বহারা’, ‘সাম্যবাদী’, ‘ছায়ানট’, ‘চক্রবাক’, ‘সিন্ধু- হিন্দোল’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ এবং ‘কুহেলিকা’, ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাস, ‘ব্যথার দান’, ‘রিক্তের বেদন’, ‘শিউলিমালা’ গল্পগ্রন্থ ও
‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’, ‘দুর্দিনের যাত্রী’, ‘রুদ্রমঙ্গল’ ইত্যাদি প্রবন্ধগ্রন্থ। সর্বপ্রকার অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম। আর শান্তি সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলা হলো—

“যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত,
আমি সেই দিন হব শান্ত।”

সংবর্ধনা, সম্মাননা ও পুরস্কার

কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর অনবদ্য সৃষ্টিকর্মের জন্য নানা সংবর্ধনা, সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ
করেছেন। ১৯২৯ সালে কলকাতা অ্যালবার্ট হলে নজরুল ইসলামকে জাতির পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে কাজী নজরুল ইসলামকে সভাপতির পদে বসিয়ে সম্মান দেখানো হয়। ১৯৪৫ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। ১৯৬০ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ উপাধি দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে তাঁকে ডি. লিট (Doctor of Literature) উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।

কবির অসুস্থতা

কাজী নজরুল ইসলাম মাত্র ৪৩ বছর বয়সে পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হন। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি তার
বাকশক্তি হারান। বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা করেও তাঁকে আর সুস্থ করে তোলা স হয়নি ।

কবির বাংলাদেশে আগমন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালের ২৪মে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনা হয়। তাঁকে ঢাকায় এনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা দান করা হয় ।

মৃত্যু

তিনি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট (১৩৮৩ বঙ্গাব্দ ১২ ভাদ্র) ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাঁকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হয়।

উপসংহার

নজরুল ইসলাম আমাকে তাঁর অফুরন্ত প্রাণের জাদুভরা সান্নিধ্যে নিয়ে আসেন, সৈনিক ব্রত নিতে উৎসাহিত করেন । সৈনিক হতে চাই আমি। এ কারণে তিনি আমার একান্ত প্রিয় কবি।

সবশেষে

অনেকেই কাজী নজরুল ইসলাম রচনা pdf চেয়েছেন। কাজী নজরুল ইসলাম রচনা class 8, আদর্শ গ্রাম রচনা ক্লাস ২, আদর্শ গ্রাম অনুচ্ছেদ রচনা, কাজী নজরুল ইসলাম রচনা ৩য় শ্রেণি, কাজী নজরুল ইসলাম রচনা ক্লাস 6, কাজী নজরুল ইসলাম রচনা class 10 সহ সকল চাহিদার পূরন হবে এই পোস্ট। আমাদের ফেসবুক লিংক এখানে

যেভাবে খুঁজে পাবেন: কাজী নজরুল ইসলাম রচনা class 7, একটি কাজী নজরুল ইসলাম রচনা class 5, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার কাজী নজরুল ইসলাম, আমার দেখা একটি কাজী নজরুল ইসলাম রচনা ৫০০ শব্দ, বাংলাদেশের কাজী নজরুল ইসলাম অনুচ্ছেদ, বাংলাদেশের সেরা ১০ কাজী নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সেরা কাজী নজরুল ইসলাম, কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকা।

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে ২০টি বাক্য

১. কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ২৪ মে ১৮৯৯ সালে।
২. তাঁর জন্মস্থান ছিল আসানসোল, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত।
৩. কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যু ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সালে।
৪. তিনি ঢাকায়, বাংলাদেশে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
৫. কাজী নজরুল ইসলামের কর্মজীবন শুরু হয় লেখক ও সুরকার হিসেবে।
৬. তাঁর পিতা ছিলেন কাজী ফকির আহমেদ।
৭. তাঁর মাতা ছিলেন জাহিদা খাতুন।
৮. কাজী নজরুলের ভাইবোনদের মধ্যে কাজী সাহেব জান, কাজী আলী হোসেন এবং বোন উম্মে কুলসুম ছিলেন।
৯. তাঁর পত্নী ছিলেন প্রমীলা দেবী।
১০. তাঁর সন্তানেরা হলেন কাজী সব্যসাচী, কৃষ্ণ মোহাম্মদ, কাজী অনিরুদ্ধ এবং অরিন্দম খালেদ।
১১. নজরুল প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি গান রচনা করেন।
১২. ১৯৬০ সালে ভারত সরকার নজরুলকে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারে ভূষিত করে।
১৩. মাত্র ১০ বছর বয়সে কাজী নজরুল তাঁর পিতাকে হারান।
১৪. ১৯১৭ সালে, ১৮ বছর বয়সে, তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৫. ১৯২০ সালে তিনি সামরিক বাহিনী ত্যাগ করেন এবং ‘বেঙ্গলি মুসলিম লিটারারি সোসাইটি’-তে যোগ দেন।
১৬. ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতা বেতারে কাজ শুরু করেন।
১৭. ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে।
১৮. কলকাতা ও ঢাকার অনেক রাস্তা কাজী নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
১৯. বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক দিয়ে সম্মানিত করে।
২০. তাঁর স্মরণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম তারিখ ও স্থান কোথায়?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ২৪ মে ১৮৯৯ সালে, আসানসোল, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারতে।

প্রশ্ন ২: কাজী নজরুল ইসলামকে কোন উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

প্রশ্ন ৩: নজরুলের পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের পিতার নাম ছিল কাজী ফকির আহমেদ।

প্রশ্ন ৪: কাজী নজরুল ইসলামের প্রধান সাহিত্যধারা কী?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যধারা মূলত বিদ্রোহ, সাম্যবাদ, মানবতা, প্রেম ও শোষণ-বিরোধী ভাবধারার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

প্রশ্ন ৫: নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কোন কবিতাটি তাঁকে “বিদ্রোহী কবি” হিসেবে পরিচিতি দেয়?
উত্তর: তাঁর বিখ্যাত কবিতা “বিদ্রোহী” তাঁকে “বিদ্রোহী কবি” হিসেবে পরিচিতি দেয়।

প্রশ্ন ৬: কাজী নজরুল ইসলাম কখন এবং কোথায় মারা যান?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সালে ঢাকায়, বাংলাদেশে মারা যান।

প্রশ্ন ৭: কাজী নজরুল ইসলাম কোন ধরনের সঙ্গীত রচনা করেছেন?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম ইসলামী গান, প্রেমের গান, দেশাত্মবোধক গান, শ্যামা সংগীত এবং অন্যান্য ধাঁচের গান রচনা করেছেন। তাঁর রচিত গানের শৈলীকে “নজরুলগীতি” বলা হয়।

প্রশ্ন ৮: নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম “অগ্নিবীণা”

প্রশ্ন ৯: কাজী নজরুল ইসলাম কোন সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন?
উত্তর: ১৯১৭ সালে নজরুল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।

প্রশ্ন ১০: কাজী নজরুল ইসলামকে কোন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত সরকার ১৯৬০ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করে, এবং বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক প্রদান করে।

গুরুত্বপূর্ন রচনা সমূহ:

M@mun

Hasan Al Mamun is a dedicated teacher, blogger, and YouTuber who has achieved great success in his field. He was born to parents Shahjahan Topodar and Masrura Begum and grew up with a love for learning and exploration. After completing his Bachelor's degree, Hasan pursued a Master's degree in Accounting and excelled in his studies. He then began his career as a teacher, sharing his knowledge and passion for accounting with his students. In addition to teaching, Hasan is also an avid blogger and YouTuber, creating content that educates and inspires his viewers. His YouTube channel, "My Classroom," has grown to an impressive 240,000 subscribers, earning him a silver play button from YouTube. Hasan's interests include book reading, travelling, gardening, and writing, and he often incorporates these passions into his work. He strives to create an honest and supportive community in all of his endeavors, encouraging his followers to learn and grow alongside him. Overall, Hasan Al Mamun is a talented and dedicated individual who has made a significant impact in the fields of education, blogging, and content creation.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button