কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবস্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC & HSC
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক–
ভাবসম্প্রসারন: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই Class 6
মানুষের জীবন সীমিত হলেও তার সৎকর্ম তাকে অমরত্ব এনে দিতে পারে। মানুষ বেঁচে থাকে শুধু দেহে নয়, তার কর্মেও। মানবজীবন ক্ষণস্থায়ী, তবে যদি সেই জীবনে কেউ মহৎকর্ম করে যায়, তাহলে মানুষ তাকে চিরকাল মনে রাখে।
মূলভাব: পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করলে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে—এটাই চিরন্তন সত্য। কিন্তু মানুষ তার মহান কর্মের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। দেহ চলে গেলেও তার সেবামূলক কাজ মানুষকে তাকে স্মরণীয় করে রাখে। তাই দীর্ঘ জীবন নয়, বরং মহৎকর্মই মানুষের অমরত্বের কারণ। যে ব্যক্তি নিজের জীবনকে কল্যাণকর কাজে ব্যয় করেন, তাকে মৃত্যুর পরও মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
বিশ্বের অনেক কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব—রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বা ভাষা আন্দোলনের শহিদরা—তাদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে অমর। এভাবেই মানুষ তার কর্মের গুণে যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকে।
ভাবসম্প্রসারন: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই Class 6
মূলভাব
পৃথিবীতে প্রতিটি জীবেরই শেষ আছে; একদিন না একদিন সবাইকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়। তবে কিছু মানুষ আছেন যারা তাদের কর্মের মাধ্যমে অমরত্ব লাভ করেন।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের দেহ ধ্বংস হয়ে গেলেও তার মহৎ কাজ থেকে যায়। যারা নিজেদের জীবনে মানুষের মঙ্গলের জন্য অসাধারণ কাজ করে গেছেন, তারা মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। সাধারণ মানুষের মৃত্যু হলে তাকে সময়ের অতল গহ্বরে বিলীন হয়ে যেতে হয়। কিন্তু কীর্তিমানদের মহৎ কাজ তাদেরকে চিরকাল জীবন্ত রাখে। ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালাম, বরকত, রফিক, শফিক কিংবা মুক্তিযুদ্ধের শহিদরা তাদের অমূল্য কীর্তির জন্য বাঙালির হৃদয়ে চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন।
মন্তব্য
পৃথিবীতে দেহের মৃত্যু স্বাভাবিক, কিন্তু কর্মের মৃত্যু নেই। মৃত্যুর পরও মহৎ কাজ মানুষের মনে চিরকাল বেঁচে থাকে। তাই বলা যায়, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারন Class 7
মূলভাব: মানুষ মরণশীল, যা এক অবধারিত সত্য। তবে কিছু মানুষ তাদের মহৎ কর্মের মাধ্যমে মৃত্যুর পরেও স্মরণীয় থেকে যান।
সম্প্রসারিত ভাব: কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য বেঁচে থাকাই মানব জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। যারা কেবল ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসের জন্য জীবন অতিবাহিত করেন, তাদের জীবনের কোনো মহত্ব নেই। তাদের স্মৃতিও সময়ের স্রোতে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু যারা নিজেদের কর্ম ও প্রচেষ্টাকে মানব কল্যাণে উৎসর্গ করেন, তারা মৃত্যুর পরও তাদের মহৎ কর্মের জন্য মানুষের মাঝে অমর হয়ে থাকেন।
যারা সমাজ, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য বা মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন, তাদের নাম সময়ের সাথে ম্লান হয় না। কবির ভাষায় বলতে হয়, “তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ।” কীর্তিমানরা তাদের কাজের মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে জীবিত থাকেন।
মন্তব্য: মানব দেহ নশ্বর, কিন্তু মহৎ কর্মের মাধ্যমে অর্জিত কীর্তি অবিনশ্বর। মানব কল্যাণে যে ব্যক্তি নিজেকে উৎসর্গ করেন, তার স্মৃতি অমর হয়ে থাকে মানুষের হৃদয়ে।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারন Class 8
মূলভাব: মানুষের দেহ নশ্বর, কিন্তু তার সৎ ও মহৎ কর্মের স্মৃতিরা অবিনশ্বর। মৃত্যু মানুষের শরীরকে বিলীন করলেও তার কর্ম আলোর পথ দেখিয়ে যায়।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের জীবনের মূল মূল্যায়ন বয়স দিয়ে হয় না; তার কর্মই তাকে অমরত্ব দেয়। শেক্সপিয়র, সক্রেটিস, আব্রাহাম লিংকন, মাদার তেরেসা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম — এঁরা সবাই দেহত্যাগ করেছেন, কিন্তু তাদের কর্ম ও আদর্শ আজও আমাদের পথপ্রদর্শক। পক্ষান্তরে, অনেকে জীবনে সুখে থাকলেও মৃত্যুর পরই মানুষ তাদের ভুলে যায়। কীর্তিমান ব্যক্তিদের কীর্তিগুলো কালের বিবর্তনেও আলো ছড়ায়।
কবি সুকান্ত অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করলেও তার কীর্তি তাকে অমর করেছে। মানুষের দৈহিক মৃত্যু প্রকৃত মৃত্যু নয়; কর্মই তাকে অমর রাখে। তাইতো বলা হয়, “মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার একমাত্র পথ তার কর্ম।”
মন্তব্য: মানবহৃদয়ে স্থান পেতে হলে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে হবে। সৎকর্মই মানুষকে সার্থক ও আনন্দময় জীবন দেয়।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারন Class 9
মূলভাব: মানব জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও কিছু মানুষ তাদের মহৎ কীর্তির মাধ্যমে সমাজে, দেশে এবং জগতে চিরকাল বেঁচে থাকেন। তাদের কর্মই তাদের অমরত্ব প্রদান করে।
সম্প্রসারিত ভাব: ইংরেজিতে বলা হয়, “Man does not live in years but in deeds.” মানুষ তার বয়স নয়, কর্মের মাধ্যমেই মূল্যায়িত হয়। দীর্ঘায়ু পেলেও অনেকেই কোনো মহৎ কর্ম না করায় স্মরণীয় হয় না। কিন্তু যারা সংক্ষিপ্ত জীবনকালে সমাজ ও মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন, তারা মানুষের হৃদয়ে চিরকাল অমর হয়ে থাকেন। ক্ষুদিরাম, সালাম, বরকত, জব্বার – এরা অকালে জীবন দিলেও তাদের সুকীর্তি তাদের স্মরণীয় করে রেখেছে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যও তার অল্প জীবনে সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। কর্মই তাদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছে, বয়স নয়।
মন্তব্য: মানুষের জীবনকাল সীমিত হলেও তার মহৎ কর্মই তাকে মৃত্যুর পরও স্মরণীয় করে রাখে। জীবনের সফলতা এবং সার্থকতা নির্ভর করে তার কর্মের উপর। তাই বলা যায়, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারন SSC
মূলভাব
মানবজীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও মানুষ তার কর্মের মাধ্যমেই পৃথিবীতে স্থায়ী স্মৃতিচিহ্ন রেখে যায়। এই কীর্তি মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও আত্মনিবেদনের ফল।
সম্প্রসারিত ভাব
প্রতিটি মানুষের জীবনে জন্ম-মৃত্যু অবধারিত। পৃথিবীতে আসা মানেই একদিন তাকে বিদায় নিতে হবে, আর সেই বিদায়ের পর তার অস্তিত্ব মুছে যায়। কিন্তু যিনি মহৎ ও সৎ কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন, তার দৈহিক মৃত্যু হলেও তার স্মৃতি মানুষের মনে চিরকাল অম্লান থাকে। তার কীর্তি এবং সাফল্য তাকে পৃথিবীর বুকে অমর করে তোলে। সাধারণ মানুষের মৃত্যু হলে তার স্মৃতি সময়ের সাথে বিলীন হয়, কিন্তু যিনি মহৎ কাজের মাধ্যমে পৃথিবীতে অবদান রেখে যান, তাকে মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী স্মরণ করে।
কীর্তিমানের শরীরের অবসান ঘটলেও, তার কৃতিত্ব ও অবদান তাকে অনন্তকাল জীবন্ত রাখে। এমনকি তার মৃত্যুর অনেক বছর পরেও মানুষ তার কর্মকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। এইভাবেই কীর্তিমান ব্যক্তির জীবন এবং কর্ম সার্থকতা লাভ করে। মানুষের এই জীবন অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য হলেও, তার কর্মের সফলতাই তার প্রকৃত মূল্যায়ন করে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে অনেকেই আত্মত্যাগ করেছেন। শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অসংখ্য বীর সন্তান তাদের রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার জন্য লড়াই করে গেছেন। তাদের এই আত্মত্যাগের জন্যই আজ বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা। তারা চিরকাল আমাদের অন্তরে অমর হয়ে আছেন, এবং তাদের এই কীর্তি তাদের স্মরণীয় করে রাখবে চিরকাল।
মন্তব্য
মানুষের দেহ নশ্বর হলেও, তার কর্মের মহিমা অবিনশ্বর। মহৎ ও কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে কেউ যদি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে, তবে মৃত্যুর পরও তার কীর্তি তাকে মানুষের মনে জীবন্ত রাখে। তাই বলা যায়, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই।
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারন HSC
মূলভাব: নশ্বর এ পৃথিবীর মানুষের জীবনও নশ্বর, কিন্তু মানুষের মহৎ কর্ম বা কীর্তি অবিনশ্বর। এই অবিনশ্বর কর্মই মানুষকে অমরত্ব দান করে।
সম্প্রসারিত ভাব: জন্ম-মৃত্যু ধ্রুব সত্য। নশ্বর এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে একদিন মানুষকে চলে যেতে হবেই। আর এ যাওয়াই তার শেষ যাওয়া। মৃত্যুর মধ্য দিয়েই মানুষের পার্থিব সত্তা এ পৃথিবী হতে চিরতরে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু পৃথিবীর মহৎ ব্যক্তিগণ তাদের জীবদ্দশায় এমন কিছু কাজ করে যান, যার ফলে পৃথিবীর মানুষ তাকে মৃত্যুর পরও ভুলে যায় না, বরং তার কাজের জন্য মানুষের হৃদয়ে তিনি চিরকাল অমর হয়ে থাকেন। তাই বলা হয়, কীর্তিমান ব্যক্তি বেঁচে থাকেন তার কর্মের মধ্যে। অথচ কোনো সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পর পৃথিবীতে দীর্ঘকাল তাকে কেউ মনে রাখে না। সে পৃথিবী থেকে চিরতরে কালের অতলগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অপরদিকে, কীর্তিমান ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার দৈহিক সত্তার অবসান হয় শুধু, কিন্তু তার মহৎ কাজের অম্লান দ্যুতিতে মনুষ্য হৃদয়ে তিনি চিরভাস্বর হয়ে থাকেন। মৃত্যুর পর তাকে লোকে যুগ যুগ ধরে স্মরণ করে।
এভাবে কীর্তিমান ব্যক্তি তার কর্মের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বেঁচে থাকেন। এ জন্য তার দীর্ঘ আয়ুর প্রয়োজন পড়ে না। দীর্ঘকাল বেঁচেও অনেকে কিছুই করতে পারে না। অনেকে আবার অল্প সময় বেঁচেও তার মহৎ কর্ম দিয়ে পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করেন। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র একুশ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে তাঁর অমর কীর্তি তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে মানুষের হৃদয়ে। সে রকম ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক, শফিক অতি অল্প বয়সে মাতৃভাষার জন্য আত্মবিসর্জন দিয়েছিলেন। তাঁদের এই অম্লান কীর্তির কারণে তাঁরা বাঙালির হৃদয়ে চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন। প্রকৃত অর্থে বলা যায়, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। মানুষ বেঁচে থাকেন তাঁর কর্মের মধ্যে; বয়সের নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে নয়।
মহৎ কীর্তি একজন নশ্বর মানুষকেও করে তুলতে পারে অবিনশ্বর। যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী পার হলেও কীর্তিমান মানুষের মহৎ অবদানের কথা মানুষ স্মরণ করে। মৃত্যুর পরও ঐ কীর্তির মধ্য দিয়েই তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকেন। তাই বলা যায়, মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়।
সবশেষে:
আশা করছি কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।
FAQ’s on কীর্তিমানের মৃত্যু নেই
প্রশ্ন: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই এটি কার উক্তি?
উত্তর: “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই” — এটি বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় উক্তি এবং এর উৎস বাংলা প্রবাদ। তবে এটি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং আরও অনেক কবি ও লেখকের সাহিত্যকর্মে বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।