কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে।
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক—
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারন Class 6
মূলভাব: জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিরা নিজেদের কীর্তি প্রচার করে না, গুণহীনরা নিজেদের বড় বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে বেড়ায়।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার কর্মে প্রকাশ পায়, প্রচারে নয়। মহৎ ব্যক্তিরা অন্যদের দ্বারা সম্মানিত হন। আত্মপ্রচারকরা, যারা নিজেদের গুণকীর্তন করে, প্রকৃত গুণী নয়; তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব নেই। এর বদলে, গুণী ব্যক্তি সমাজে খাঁটি হীরার মতো জ্বলজ্বল করে। তিনি নিজের গুণের প্রশংসায় বিভোর থাকেন না এবং সবাই তাঁকে শ্রদ্ধা করে। কবি বলেন, “নিজে যারে বড় বলে বড় সে নই, লোকে যারে বড় বলে বড় সে হয়।”
মন্তব্য: মহৎ ব্যক্তিরা প্রশংসিত হন, অপরদিকে অকর্মণ্যরা অহমিকা প্রচারে লিপ্ত থাকে।
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারন Class 7
মূলভাব: খাঁটি জিনিসের কোনো প্রকার প্রচারের প্রয়োজন হয় না। খাঁটি জিনিসের গুণাগুণই মানুষকে আকৃষ্ট করে।
সম্প্রসারিত ভাব: হীরক খুব মূল্যবান একটি পদার্থ। তবে নকল হীরক মূল্যহীন। নকল হীরক নিজের আসল পরিচয় গোপন করে বড় হওয়ার চেষ্টা করে। এতে তার আসল সত্যতা ধরা পড়ে। সে খাঁটি নয়, তাই নিজের দুর্বলতা লুকানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়। ফলে তার আসল পরিচয় উন্মোচিত হয়। যদি সে খাটি হতো, তবে অহংকারের প্রয়োজনই পড়ত না। তার গুণাগুণ ও বিনম্রতাই তার সত্যিকার পরিচয় প্রকাশ করতো। শুধু আকার-আকৃতি দিয়েই কোনো জিনিসের গুণ বিচার করা হয় না। খাঁটি হীরক নকল হীরকের অহংকারকে খর্ব করে বলে যে, নকল বলেই সে মিথ্যা অহংকার করছে। যদি সে সত্যিকার অর্থে খাটি হতো, তবে মিথ্যা অহংকারের আশ্রয় নিত না।
মানুষের মধ্যেও নকল হীরকের মতো মিথ্যা অহমিকা দেখা যায়। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে অনেকেই মিথ্যার আশ্রয় নেয়। অল্পজ্ঞানী ও গুণহীন ব্যক্তিরা কথার মোহ তৈরি করে নিজেদের বড় বলে প্রচার করতে চায়, কিন্তু তাদের মিথ্যা প্রচারই তাদের চরিত্রের শূন্যতা প্রকাশ করে। অন্যদিকে, যারা সত্যিকার জ্ঞানী ও মহৎ, তারা কখনো মিথ্যা অহংকারের মাধ্যমে নিজেদের প্রচার করেন না। তাদের মহত্ত্ব ও গুণ তাদের কাজের মধ্যেই প্রকাশ পায়।
মন্তব্য: যারা সত্যিকার গুণের অধিকারী নয়, তারাই মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে অন্যকে প্রতারিত করতে চায়।
ভাবসম্প্রসারন: কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি Class 8
মূলভাব: সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা নিজেদেরকে ভালো মানুষ হিসেবে দেখাতে চায়, কিন্তু বাস্তবে তারা ঘৃণার পাত্র হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব: যখন কেউ নিজের আসল পরিচয় গোপন করে বড় হওয়ার চেষ্টা করে, তখন তার অন্দর থেকে অসত্যতা বের হয়ে আসে। মিথ্যা বাহাদুরি মানুষকে বড় করে না, বরং এটি তাদের আসল পরিচয়কে উন্মোচন করে দেয়।
যেমন, নকল হীরা যখন নিজেকে বড় বলে পরিচিতি দেয়, তখন তার অহংকার থেকেই তার নকলত্ব প্রকাশ পায়। আসল হীরা হলে তার অহংকার করার কোনো প্রয়োজন হতো না, কারণ সে তার গুণে নিজেই সকলের কাছে পরিচিত হতো। নকল হীরা নিজেকে বড় বলার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার আসল স্বরূপ প্রকাশ পায়। মানুষের মাঝেও এ ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। অনেকে নিজেদের দুর্বলতা গোপন রাখতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়, কিন্তু সত্য কখনো গোপন রাখা যায় না। এক সময় তা উন্মোচিত হয়ে পড়ে।
মহৎ মানুষ সাধারণত সংযমী হয়ে থাকে এবং অহংকার করেন না। তাদের মহত্ত্ব তাদের কর্মের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। অপরদিকে, যারা নিজের নীচ পরিচয় লুকাতে চায়, তারা অহেতুক বাহাদুরী করে, যা আসলে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করে দেয়।
সত্যিকারের ভালো মানুষরা কখনো অন্যায়ের সাথে আপোস করে না এবং তারা মিথ্যার বিরুদ্ধে থাকে। অর্থাৎ, তারা কখনো মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে না।
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারন Class 9
মূলভাব: পৃথিবীর জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিগণ তাদের গৌরবোজ্জ্বল কীর্তির প্রচার করে বেড়ায় না। গুণহীনরাই নিজেদের বড় বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে বেড়ায়।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পায় তার কর্মে, প্রচারে নয়। মহৎ ব্যক্তিদের কর্মের জয়গান করে অন্যরা, নিজেদের নয়। যে নিজেকে বড় মনে করে এবং গৌরব বৃদ্ধির জন্য নিজের গুণকীর্তন করে বেড়ায়, সে প্রকৃতই গুণহীন। অন্তঃসার শূন্য মানুষই কেবল অন্যের কাছে মিথ্যা বলে বাহাদুরি করে বেড়ায়। নিজের প্রশংসা জোটে না বলে, তারা নিজেদের অহমিকায় মেতে ওঠে। আত্মপ্রচারে মেতে থাকাই তাদের বৈশিষ্ট্য। যা সত্য নয়, তা বাড়িয়ে বলা মিথ্যার নামান্তর। জনসমক্ষে তার প্রচারিত বড় বড় মিথ্যা বুলির জন্য তারা সমাদৃত না হয়ে বরং ধিকৃত ও নিন্দিত হয়। তাদের একটি শূন্য কলসের সাথে তুলনা করা যায়। কথায় আছে, শূন্য কলসই বেশি বাজে। পক্ষান্তরে, আত্মপ্রচারবিমুখ গুণী ব্যক্তি সমাজে খাঁটিহীরার মতো জ্বলজ্বল করে জ্বলে। তার আলোকে সকলে আলোকিত হয়, তার সৌরভে সুরভিত হয় চারপাশ।
তাঁকে সকলেই শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। তিনি কখনো নিজের গুণকীর্তনে বিভোর থাকেন না; বরং নিজেকে অতি ক্ষুদ্র বলে মনে করেন। জগদ্বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস বলতেন, “আমি যে কিছুই জানি না, এই শুধু জানি।” বিজ্ঞানী নিউটন বলতেন, “আমি জ্ঞানসমুদ্রের বালুকাতটে বালুকণা খুঁটছি মাত্র।” আর এজন্যই কবি বলেছেন, “নিজে যারে বড় বলে, বড় সেই নয়; লোকে যারে বড় বলে, বড় সেই হয়।” অতএব, যারা নিজের গুণকীর্তন করে বেড়ায়, বুঝতে হবে তারা প্রকৃত গুণী নয়; তারা হচ্ছে আত্মপ্রচারক, শঠ। তাদের মধ্যে কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।
মন্তব্য: মহৎ ব্যক্তির প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে, সবাই তাদের শ্রদ্ধা ও ভক্তি করে। পক্ষান্তরে, অকর্মণ্য লোকেরাই ব্যর্থ আত্ম-অহমিকা প্রচারে লিপ্ত হয়।
কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি/তাইতো সন্দেহ করি, নহ ঠিক খাঁটি ভাবসম্প্রসারন SSC & HSC
মূলভাব:
সততা মানবজীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা সমাজজীবনে নিজেকে বেশি প্রচারে ব্যস্ত রাখে, তাদের সম্পর্কে হয় বিপরীত ধারণা। প্রকৃত গুণের অধিকারীরা কখনোই নিজেদের গুণাবলিকে সগৌরবে প্রচার করে বেড়ায় না।
সম্প্রসারিত ভাব:
একটি প্রচলিত প্রবাদ হলো- An empty vessel sounds much, অর্থাৎ শূন্য কলস বাজে বেশি। যে ব্যক্তি নিজেকে সর্বক্ষেত্রে বড় বলে প্রচারে মশগুল থাকে এবং অন্যকে ঠকিয়ে নিজের গৌরব বাড়ানোর চেষ্টায় অধীর থাকে, তাকে ভালো মানুষ বলা যায় না। শুধুমাত্র অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তিরাই অন্যের কাছে নিজের অবস্থান বাড়িয়ে বলে বাহাদুরি পেতে চায়। তবে একসময়ে তাদের আসল চেহারা উন্মোচিত হয়। আর প্রকৃত ভালো মানুষ অকপটে নিজের অবস্থান প্রকাশ করে, মিথ্যাকে ঘৃণা করে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বর্তমান সমাজে এমন প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। যারা প্রকৃত গুণের অধিকারী নয়, তারাই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অন্যকে ঠকাচ্ছে। একজন খাঁটি মানুষ কখনো মিথ্যা অহংকারের পথ ধরে না; বরং আত্মপ্রচারকে ঘৃণা করে।
আমাদের সবারই মিথ্যা অহংকার পরিত্যাগ করা উচিত। কেননা এতে নিজের বিশ্বস্ততা অন্যের কাছে ক্ষুণ্ন হয়। আত্মপ্রচারকারী ব্যক্তিকে সমাজের মানুষ কখনোই ভালো চোখে দেখে না।
আরো গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন: