নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ভাবসম্প্রসারন
নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে। নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক–
নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? Class 6
বিশ্বজুড়ে প্রচলিত নানা ভাষার মাঝে মাতৃভাষা মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং স্বাভাবিক ভাষা। মাতৃভাষার মাধ্যমে মানুষ মনের গভীরতম ভাব, সূক্ষ্ম অনুভূতি ও আবেগকে সহজে এবং সাবলীলভাবে প্রকাশ করতে পারে। বিদেশি ভাষা শেখা হলেও, মাতৃভাষার মতো আন্তরিকতা ও স্বতঃস্ফূর্ততার সাথে সে ভাষায় প্রকাশ সম্ভব হয় না।
শৈশব থেকেই মায়ের মুখে শেখা মাতৃভাষা মানুষের হৃদয়ের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। মাতৃভাষায় মনের ভাব প্রকাশের যে গভীরতা ও আত্মার সংযোগ আছে, তা অন্য কোনো ভাষায় খুঁজে পাওয়া যায় না। এই কারণে মাতৃভাষাই শিশুর বুদ্ধি ও বিকাশের জন্য সবচেয়ে সহায়ক।
মা, মাটি, আর মাতৃভাষা আমাদের অস্তিত্বের মূল ভিত্তি। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমরা রক্ত দিয়েছি, আর সেই আত্মত্যাগের ফলে আজ বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত। তাই মাতৃভাষা আমাদের জন্য সর্বোচ্চ, মনের অন্তর্গত ভাব প্রকাশের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।
নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? Class 7
মূলভাব: পৃথিবীর সব ভাষার মধ্যে নিজ নিজ মাতৃভাষাই মানুষের জন্য সর্বোত্তম। মাতৃভাষায় মনোভাব সহজে প্রকাশ করা সম্ভব যা অন্য ভাষায় হয় না।
সম্প্রসারিত ভাব: মাতৃভাষা মানুষের সবচেয়ে প্রিয় এবং ভাব প্রকাশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অন্য ভাষার তুলনায় মাতৃভাষায় মানুষ তার মনের ভাব সহজেই প্রকাশ করতে পারে। প্রত্যেক জাতির ভাষায় একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে যা আত্মিকভাবে যুক্ত থাকে, তাই মানুষের আনন্দ, দুঃখ এবং আবেগের সেরা মাধ্যম হয় মাতৃভাষা। দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা বহু ভাষায় পারদর্শী হতে পারেন, তবে মনের ভাব প্রকাশে তারা মাতৃভাষাকেই প্রাধান্য দেন। শিশুকাল থেকেই মানুষ তার ভাষার সাথে পরিচিত থাকে এবং সহজে অনুভূতি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়। অন্য ভাষায় সাহিত্যের গভীরতা অর্জন কঠিন, যেমনটি দেখা যায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের ক্ষেত্রে, যিনি ইংরেজি সাহিত্যে মনোযোগ দিলেও শেষ পর্যন্ত বাংলাতেই ফিরে আসেন। তাই মাতৃভাষাই মানুষের জন্য প্রিয়তম এবং ভাব প্রকাশের শ্রেষ্ঠ পন্থা।
মন্তব্য: মাতৃভাষা ছাড়া কোন ব্যক্তির প্রকৃত সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। এজন্য সকলের উচিত মাতৃভাষার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা।
নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? Class 8
মাতৃভাষা মানুষের জন্য জন্মগত অধিকার, এবং এতে যে আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি লাভ করা যায়, তা অন্য কোনো ভাষায় সম্ভব নয়। হাজার ভাষা থাকলেও মায়ের ভাষা মানুষের অনুভূতি ও ভাব প্রকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। মনের গভীর ভাব ও আশা-আকাঙ্ক্ষার সঠিক বহিঃপ্রকাশ কেবল মাতৃভাষাতেই ঘটে।
ভাষা শুধু ভাব প্রকাশের মাধ্যম নয়, বরং পূর্ব প্রজন্মের জ্ঞান ও চিন্তাভাবনা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়। পৃথিবীর মানুষ যেমন বিভিন্ন চেহারার, তেমনি তাদের ভাষাতেও রয়েছে বৈচিত্র্য। প্রতিটি জাতির নিজস্ব ভাষা সেই জাতির সংস্কৃতি ও পরিচয়ের প্রতীক।
আমরা মাতৃভাষা ছাড়াও অন্য ভাষা শিখি; তবে কোনো বিষয় গভীরভাবে উপলব্ধি করতে এবং প্রকাশ করতে মাতৃভাষাই সবচেয়ে সহজ। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে ইংরেজিতে সাহিত্য রচনা করতে গিয়ে বহু দুঃখ পেয়েছিলেন, এবং শেষমেশ বাংলা ভাষাতেই ফিরে এসে লেখেন তাঁর অমর রচনা ‘বঙ্গভাষা’। তাঁর জীবনেই প্রমাণিত যে মাতৃভাষা ছাড়া আত্মতৃপ্তি অসম্ভব।
যারা বিদেশে থাকেন, তাঁরাও বিদেশি ভাষায় কাজ চালালেও মাতৃভাষায় কথা বলতেই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পান। জাতীয় ও ব্যক্তিগত বিকাশে মাতৃভাষার গুরুত্ব অসীম। আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসই বলে, মাতৃভাষা আমাদের কতটা মূল্যবান। যেমন মাতৃভূমি প্রিয়, তেমনই মাতৃভাষা প্রতিটি জাতির কাছে অমূল্য।
ভাবসম্প্রসারন: নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? SSC
মূল ভাব:
মাতৃভাষা মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, যা তাকে তার মনের ভাব সহজেই প্রকাশ করতে সহায়তা করে এবং পূর্ণ তৃপ্তি এনে দেয়।
সম্প্রসারিত ভাব:
স্বদেশি ভাষা বলতে মূলত মানুষের মাতৃভাষাকেই বোঝানো হয়। মাতৃভাষা ছাড়া আমাদের মনের ভাব পুরোপুরি প্রকাশ করা কঠিন হয়ে ওঠে। শিশু বয়স থেকেই আমরা মাতৃভাষায় কথা বলি, ভাবনা প্রকাশ করি; এটি আমাদের কাছে যেমন পরিচিত, তেমনই আত্মিক। মাতৃভাষা এমন একটি মাধ্যম যা দিয়ে আমরা সবচেয়ে সহজে, সাবলীলভাবে এবং প্রাণবন্তভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। যদিও অনেকে বিদেশি ভাষা শিখে দক্ষ হয়ে ওঠে, কিন্তু মাতৃভাষার মাধ্যমে চিন্তা-চেতনার যে গভীরতা ও সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা যায়, তা অন্য ভাষায় সম্ভব নয়।
মানুষের জন্মভূমির সাথে তার আবেগ, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও ভাষা মিলে এক গভীর সংযোগ সৃষ্টি করে। এই মাতৃভাষা সেই সংযোগের প্রধান বাহন যা মানুষকে স্বাচ্ছন্দ্য ও তৃপ্তি এনে দেয়। বিভিন্ন জাতির মধ্যে মাতৃভাষার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটায়। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব জাতি তাদের মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চা ও শিক্ষা-বিকাশে মনোযোগী হয়েছে, তারা অনেক ক্ষেত্রেই উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে।
বিশ্বের অসংখ্য বিদ্বান ও জ্ঞানী ব্যক্তি বিভিন্ন ভাষার ওপর দক্ষতা অর্জন করলেও তাদের অর্জিত জ্ঞানকে মাতৃভাষায়ই সেরা ভাবে প্রকাশ করতে পেরেছেন, কারণ মাতৃভাষার মাধ্যমে অনুভূতি ও চিন্তা সঠিকভাবে ফুটে ওঠে। তাই মাতৃভাষায় নিজের ভাব প্রকাশ করা অন্য ভাষায় পরিপূর্ণভাবে সম্ভব নয় এবং এই কারণেই মাতৃভাষার মাধ্যমেই মানুষ তার পূর্ণ তৃপ্তি লাভ করে।
মন্তব্য:
আমাদের চিন্তা-চেতনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার রূপায়ণ ঘটে মাতৃভাষার মাধ্যমে। মাতৃভাষাই মানুষের ভাব প্রকাশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও প্রিয় মাধ্যম, যার দ্বারা মানুষের মনের গভীর তৃপ্তি অর্জিত হয়।
নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? HSC
মূলভাব: মাতৃভাষার মাধ্যমেই আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনের ভাব প্রকাশ করি। মাতৃভাষার মতো প্রিয় আর মধুর কোনো ভাষা নেই।
সম্প্রসারিত ভাব:
মাতৃভাষা বা স্বদেশী ভাষা মাতৃস্তন্যস্বরূপ। মাতৃস্তন্য ব্যতীত যেমন শিশুর তৃষ্ণা কোনোকিছুতেই মেটে না, তেমনি মাতৃভাষা ছাড়া কোনো মানুষই প্রাণ উজাড় করে মনের ভাব ব্যক্ত করতে পারে না। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। জন্মের পর থেকে আমরা এ ভাষায় কথা বলি, মনের ভাব প্রকাশ করি, খাই-দাই, স্বপ্ন দেখি, ঘুমাই। এ ভাষার সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও অস্তিত্বের চেতনা। আমরা বাংলা ভাষায় যতটা সহজ ও সাবলীলভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি, অন্য কোনো ভাষায় সেটা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।
অনেক চেষ্টা-সাধনা করে আমরা বিদেশি ভাষায় দক্ষতা ও পারঙ্গমতা অর্জন করলেও মাতৃভাষার মতো করে আমরা তা ব্যক্ত করতে পারি না। বিদেশি ভাষা কখনো আমাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পরিতৃপ্ত করতে পারে না। আমাদের স্বপ্ন-সাধ, আশা-আকাঙ্ক্ষা তাতে পরিপূর্ণতা পায় না। তাই শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে সবসময় মাতৃভাষার প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা নিজেদের ভাষাকে অবজ্ঞার চোখে দেখে, বিদেশি ভাষার প্রতি বেশি আগ্রহী হয়। এ ধরনের মানুষ জাতির জন্য কলঙ্ক। এরা অতি হীনমনের অধিকারী। এরা কখনো জীবনে জ্ঞানে পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের রক্তমজ্জাতে মিশে আছে বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি। ওপরে ওপরে তারা যতই ইংরেজ বা ফরাসি সাজার চেষ্টা করুক, তারা তা কখনো করতে পারবে না।
দৃষ্টান্ত আমাদের প্রখ্যাত প্রতিভাধর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। অনেক বেশি প্রতিভা ও পাণ্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও তিনি ইংরেজি সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা পাননি। শেষে ফিরে এসেছেন মাতৃভাষার কাছে। কবি আবদুল হাকিমের ভাষায় যারা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করেন, তাদের বংশ পরিচয় নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বস্তুত মাতৃভাষা ছাড়া কোনো মানুষই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারে না। পৃথিবীর হাজার হাজার ভাষা থাকলেও একমাত্র মাতৃভাষাই পারে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে; মনের তৃপ্তি মেটাতে। প্রতিটি মানুষের কাছে তার মায়ের মতো মাতৃভাষাও প্রিয়। কারণ এ ভাষার মধ্যেই জড়িয়ে রয়েছে তার অস্তিত্ব।
মাতৃস্তন্যের মতো মাতৃভাষারও কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র মাতৃভাষাই পারে মানুষকে পরিপূর্ণ বিকশিত করতে।
আরো পড়ুন:
সবশেষে: আশা করছি নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।