ভাবসম্প্রসারণ: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির
শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে। শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক-
শৈবাল দিঘিরে বলে Vabsomprosaron class 6
উপকারীর উপকার স্বীকার করা মানব চরিত্রের মহৎ দিক। কিন্তু কিছু স্বার্থপর মানুষ আছে, যারা সামান্য উপকার করে গর্বের সাথে তা প্রচার করে। তাদের তুলনায় মহৎ ও উদার মানুষরা কখনো নিজেদের কাজের কথা জানান না।
শৈবালের মতো সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষরা অন্যদের ওপর নির্ভরশীল। যখন শৈবাল দিঘিতে পড়ে, সে গর্বিত হয়, অথচ তার একটি ফোঁটা শিশির দিঘির জন্য তুচ্ছ।
অপরদিকে, উদার মানুষরা নীরবে মানবসেবায় নিয়োজিত। তারা কখনো নিজেদের গৌরবের খোঁজ করেন না। সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষের দানে সমাজের কোনো উপকার হয় না, এবং মহৎ ব্যক্তিরা গর্ববোধ না করে অন্যের কল্যাণে আত্মতৃপ্তি পান।
শৈবাল দিঘিরে বলে Vabsomprosaron class 7
মূলভাব: এই জগতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা অন্যের উপকার স্বীকার করেন না। বরং তারা সামান্য উপকার করলেই সেটি অহংকার করে প্রচার করেন।
সম্প্রসারিত ভাব: সকলের সামর্থ্য সমান নয়; মানুষে মানুষে শক্তি ও কর্মদক্ষতায় বিরাট পার্থক্য রয়েছে। কিছু মানুষ নিজেদের বিশাল ক্ষমতা ও অবদানের মাধ্যমে বিশ্বকে কল্যাণ সাধন করেন, আবার অনেকেই সীমিত শক্তির অধিকারী। মহৎ হৃদয়ের মানুষরা সাধারণত নিরহঙ্কারী এবং জীব ও জগতের কল্যাণে ব্রতী হন।
শৈবাল যখন দিঘির জল থেকে জন্ম নেয়, তখন সে একটি শিশির বিন্দুর কথা দিঘিকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যেন দিঘি তার দানের কথা ভুলে না যায়। এমন দম্ভপূর্ণ আচরণ প্রকৃত মহত্ত্বের অভাব নির্দেশ করে। যে ব্যক্তি পরের উপকার করে অহংকার করে, সে প্রশংসার কাঙাল।
কিন্তু প্রকৃত উদার এবং মহৎ মানুষেরা, যারা অন্যের কল্যাণে নিবেদিত, তারা যেমন দিঘির জল, তেমনি অকাতরে তৃষিতের তৃষ্ণা মেটান। তারা নিজেদের দানের হিসেব রাখতে বলেন না, যা ক্ষুদ্র ও মহৎ প্রাণের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।
মন্তব্য: মহৎ ও উদার মানুষরা কখনো পরোপকারে গর্ববোধ করেন না; বরং সেই পরোপকারের মধ্যে তারা আত্মতৃপ্তি খুঁজে পান।
Bhabsomprosaron: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির Class 8
মূলভাব
এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা অন্যদের উপকার স্বীকার করে না। বরং তারা সামান্য উপকার করলেই দম্ভভরে সেটি প্রচার করে বেড়ায়।
সম্প্রসারিত ভাব
দিঘির অগাধ জলরাশিতে শৈবালের অবস্থান। ভোরের শিশির তার উপর জমেছে, এবং সেই শিশিরের ক্ষুদ্র ফোঁটা গড়িয়ে পড়ে দিঘির জলে। শৈবাল এই সামান্য শিশিরকে দিঘির প্রতি তার মহৎ দান মনে করছে, অথচ দিঘির বিশাল জলরাশির কাছে এটি খুবই তুচ্ছ। দিঘির জলেই যার অস্তিত্ব, সেই দিঘির প্রতি শৈবালের দম্ভ সত্যিই হীনম্মন্যতার পরিচায়ক।
শৈবালের মতো সমাজে অনেক অকৃতজ্ঞ মানুষ আছে, যারা অন্যদের দয়া গ্রহণ করে, কিন্তু সামান্য উপকার করলেই নিজেদের মহৎ মনে করে। প্রকৃত মহৎ ব্যক্তি কখনো দম্ভ প্রকাশ করে না; তারা নিঃস্বার্থভাবে অন্যের উপকার করে। অহংকার থাকলে মহৎ কাজ করা সম্ভব নয়।
মন্তব্য
প্রতিদানের প্রত্যাশা না করে, মানবকল্যাণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে উপকার করাই মহৎপ্রাণ ব্যক্তির কাজ। তাই উপকারভোগীদের উচিত উপকারকারীদের কথা স্মরণ রাখা।
ভাবসম্প্রসারন: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির Class 9
মূলভাব: অপরের মহৎ উপকার স্বীকার না করে নিজের অতীতকে বড় করে প্রচার করা অকৃতজ্ঞ লোকের বৈশিষ্ট্য। অকৃতজ্ঞরা সামান্য উপকার করে তা গর্বের সঙ্গে প্রচার করে, অথচ প্রকৃত পরোপকারী নিজের উপকারের কোনো হিসাব রাখে না।
সম্প্রসারিত ভাব:
শৈবাল পুকুরের বিশাল জলরাশির মধ্যে জন্ম নেয় এবং তার অস্তিত্ব সেই পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু শৈবাল কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে নিজের বাহাদুরি দেখায়। শীতের রাতে তার বুকে জমা শিশির এক সময় দিঘির পানিতে মিলিয়ে যায়, তারপর সে অহংকার করে যে সে দিঘিকে এক ফোটা পানি দিয়েছে। এভাবে শৈবাল অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেয়।
বাস্তব জীবনে মহৎ ব্যক্তিরা নীরবে দান করেন, কিন্তু সংকীর্ণমনা লোকেরা অপরের দান অস্বীকার করে এবং সামান্য উপকারে নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সমাজে এমন অনেক হীন চরিত্রের লোক রয়েছে যারা তাদের ক্ষুদ্র দানের কথা অহর্নিশু প্রচার করে।
বর্তমানে বিভিন্ন সংবাদপত্রে দেখা যায়, একজন গরিবকে কিছু খাদ্য বা অর্থ সহায়তা দেয়ার সময় অনেক লোক উপস্থিত থাকে। তারা গর্বের সাথে এই দান প্রচার করে, ফলে তাদের সামান্য উপকারের মহিমা ম্লান হয়ে যায়।
মন্তব্য: সমাজে যারা মহৎ, তারা অন্যকে উপকার করে নিজেকে গর্বিত মনে করেন। এই ভাব-সম্প্রসারণ পাঠ্যপুস্তকের সহায়কেরূপে কাজ করবে এবং বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে এর আলোচনা আরও সমৃদ্ধ করবে।
গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন
- কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবস্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC & HSC
- প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না-ভাবসম্প্রসারন
- নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা? ভাবসম্প্রসারন
শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির ভাবসম্প্রসারন Class 10
মূলভাব: অন্যদের উপকার করা মানব চরিত্রের একটি মহৎ দিক, তবে কিছু স্বার্থপর ব্যক্তি সামান্য উপকার করেই অহংকারে মেতে ওঠে।
সম্প্রসারিত ভাব:
মহৎ ও উদার প্রকৃতির মানুষরা অন্যদের উপকার করলে তা কখনো প্রকাশ করেন না; তাদের লক্ষ্য হলো নিভৃতে মানবসেবা করা। আমাদের সমাজে অনেক সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষ আছে, যারা দিঘির শৈবালের মতো। শৈবাল দিঘির ওপর নির্ভরশীল হয়ে জন্মায় এবং এর জলেই পরিপুষ্ট হয়। কিন্তু যখন শৈবাল নিজের বুকে ধারণ করা শিশির দিঘিতে গড়িয়ে দেয়, তখন সে নিজের মহানুভবতার কথা প্রচার করে।
এ ধরনের মানুষ অন্যদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে। তারা যখন অন্যদের উপকার করেন, তখন গর্বের সঙ্গে তা প্রচার করেন। বিপরীতে, উদার ও মহৎ ব্যক্তিরা কখনো আত্মপ্রচার করেন না; তারা মানবকল্যাণের জন্য কাজ করতেই আনন্দিত।
বিশ্বে যাঁরা মানবতার জন্য কাজ করেছেন, তাঁরা নিজেদের প্রচারে বিশ্বাসী নন, অথচ তাঁদের মহৎ কর্ম মানুষের হৃদয়ে চিরকাল উজ্জ্বল। অপরদিকে, সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষের সামান্য উপকারে দুনিয়ার কিছুই লাভ হয় না, তবে তাদের অহংকারের অন্ত নেই।
মন্তব্য: মহৎ ব্যক্তিরা কখনো গর্ববোধ করেন না; তাঁদের জন্য অন্যের কল্যাণই প্রকৃত সুখের উৎস।
শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির ভাবসম্প্রসারন SSC HSC
যারা হীনমনের অধিকারী, তারা সামান্য উপকারের জন্য আত্মগৌরব অনুভব করতে চায় এবং তুচ্ছ উপকারের উদাহরণ তুলে ধরে অহংকার প্রকাশ করে। নিজেদের সামান্য অবদানে গর্ব করার চেয়ে অন্যদের নিঃস্বার্থ উপকারে প্রশংসা করা উচিত, কিন্তু এই শ্রেণির কৃতজ্ঞতাহীন ব্যক্তি সহজেই তা ভুলে যায়।
সম্প্রসারিত ভাব:
শৈবালের জন্ম ও জীবন দিঘির পানিতে। শৈবাল তার অস্তিত্বের জন্য পুরোপুরি দিঘির ওপর নির্ভরশীল। শীতের রাতের কল্যাণে দিঘির বুকে জন্ম নেয় কয়েক ফোঁটা শিশির এবং বাতাসের দোলায় তা গড়িয়ে পড়ে। তবুও, শৈবালের অহংকারের শেষ নেই; সে তার এক বিন্দু শিশিরের কথা দিঘিকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বৃহৎ দিঘির অগাধ পানিতে একটি শিশিরপাতের গুরুত্ব অতি নগণ্য। কিন্তু শৈবাল একটুও মনে রাখে না, দিঘি তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। সে বোঝে না যে, তার এক ফোঁটা শিশির দিঘির কোনো কাজে আসেনি। এমন সংকীর্ণ চরিত্রের মানুষ আমাদের সমাজে খুব সাধারণ। তারা পরাশ্রয়ে বেড়ে ওঠে এবং একসময় সেই পরম আশ্রয়দাতাকেই ভুলে যায়।
বিনামূল্যে দানের বিনিময়ে সামান্য উপকার করে কিছু ক্ষুদ্রচেতা ব্যক্তি অহংকারী হয়ে ওঠে।
রূপকের মাধ্যমে আমাদের মানবসমাজের বিশেষ দুই শ্রেণির মানুষের চরিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে। শৈবাল শ্রেণির মানুষদের সবসময়ই বর্জন করা উচিত এবং দিঘির মতো বিশাল হৃদয়ের মানুষদের খুঁজে বের করে তাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমাজের কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত।
সবশেষে:
আশা করছি শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।