যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না

যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে।
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক—
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারন Class 6
মূলভাব: মানুষের জীবনে চাওয়া-পাওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। আমরা যখন যা চাই, তা সবসময় পাই না। আবার, যা পাই, তা সবসময় চাই না।
সম্প্রসারিত ভাব: পৃথিবীতে মানুষ চিরকাল নতুন কিছু পাওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে। তার মন চিরকাল নতুন কিছু খুঁজে বেড়ায়, এক জায়গায় স্থির থাকে না। যা পাওয়া যায়, তা দ্রুত পুরনো হয়ে যায়, আর মন চলে নতুন কিছুর খোঁজে। এটাই মানুষের সাধারণ স্বভাব। কবির ভাষায়, “যা চাওয়া হয়েছিল তা পাওয়ার পর মনে হয় এটাই ঠিক হয় নি,” বরং যা পাওয়া গেল, তা হয়তো ভুল করে চাওয়া হয়েছিল। মানুষ সবসময় নতুন কিছু চায়, আর কিছুদিন পরেই তাও পুরাতন মনে হয়। এইভাবে, মানুষ জীবনে নতুনত্বের পিছনে ছুটে চলে।
কখনো সম্পদ ও আরামে সুখী হতে চাই, আবার কিছুদিন পর ত্যাগের জন্য মন ছটফট করে। এই দোলাচলে মানুষ কখনোই স্থির থাকতে পারে না, সে ছুটে চলে এক অভিজ্ঞতা থেকে আরেক অভিজ্ঞতায়। একটি বন্ধুর দ্বারা আঘাত পেয়ে কেউ হয়তো সত্যিকারের বন্ধুর খোঁজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এইভাবে আমাদের চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে এক ধরণের অস্থিরতা তৈরি হয়। ফলে মানুষ সুখের সন্ধানে কখনো শান্তি খুঁজে বেড়ায়, আবার কখনো আনন্দের জন্য কল্পনায় মগ্ন থাকে।
পৃথিবীতে মানুষের জীবনে চাওয়া-পাওয়ার শেষ নেই। চাওয়ার আনন্দে আর পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় আমাদের জীবন সীমাবদ্ধ, কিন্তু তবুও মন অশান্ত- যেন সত্যিকারের শান্তির খোঁজে চিরকাল ছুটে চলে।
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারন Class 7
মূলভাব: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মাঝে পার্থক্য চিরকাল থাকে। আমরা যা কল্পনা করি, বাস্তবে তার সাথে সবসময় মিল নাও থাকতে পারে। তাই মনে যা চাই, তা সবসময় বাস্তবে পাওয়া সম্ভব নয়।
সম্প্রসারিত ভাব: পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষ আলাদা। তাদের ইচ্ছা, চাওয়া, আশা, স্বপ্ন সবই ভিন্ন রকম। একজনের ইচ্ছা অন্যজনের ইচ্ছার মতো নয়। একইভাবে একজনের আশা বা স্বপ্নের সাথে অন্যজনের মিল থাকে না। এমনকি নিজের ইচ্ছার সাথেও সবসময় নিজের প্রাপ্তির মিল হয় না। অর্থাৎ মানুষ যখন মনে মনে কিছু পাওয়ার কথা ভাবে, তখন বাস্তবের সাথে সেটা মেলে না। মাঝে মাঝে আমরা যা চাই, সেটা অতিরিক্ত হতে পারে বা কখনো তা পাওয়া কঠিনও হতে পারে। অন্যেরও তার নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া আছে, তাই সবসময় একজনের চাওয়া পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেকের চাওয়া-পাওয়া এবং তৃপ্তিও ভিন্ন।
মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। কেউ অল্পতেই খুশি হয়, আবার কেউ অনেক পেয়েও সন্তুষ্ট থাকে না। কোনো কোনো সময় সামান্য চাওয়াও পূর্ণ হয় না। তখন মনে হয়, চাওয়াটাই ভুল ছিল। আবার কখনো এমন কিছু পাই যা চাওয়ার মধ্যে ছিল না, ফলে সেটাও পুরোপুরি তৃপ্তি দিতে পারে না। তাই প্রাপ্তি এবং চাওয়ার মধ্যে পার্থক্য থাকাটা খুবই স্বাভাবিক।
আমরা মাঝে মাঝে মনে করি, যা চেয়েছিলাম তা ঠিক ছিল না। আবার কোনো ভালো কিছু করলে, মনে করি সবাই তার প্রশংসা করবে। কিন্তু দেখা যায়, সেটা না হয়ে উল্টো অন্যরা হয়তো ভুল বুঝে আঘাত দেয়। আবার কখনো এমন কিছু পাওয়া যায় যা চাওয়ার মতো ছিল না। ফলে, আমাদের চাওয়া এবং প্রাপ্তির মধ্যে মিল না থাকার কারণে আমরা অনেক সময় খুশি হতে পারি না। আসলে মানুষ পুরোপুরি জানে না কীসে তার আনন্দ বা শান্তি।
মন্তব্য: মানুষের প্রত্যাশা বা চাওয়ার শেষ নেই। জীবনের প্রকৃত সুখ পাওয়ার জন্য প্রয়োজন সীমিত চাওয়া। তাই আমাদের জীবনে সীমাবদ্ধ চাওয়া-পাওয়াই আনন্দের আসল উৎস।
ভাবসম্প্রসারন: যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না Class 8
মূলভাব
মানুষের আকাঙ্ক্ষা আর প্রাপ্তির সীমা নেই। তার মনোজগতে চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে একধরনের দ্বন্দ্ব চিরকাল বিরাজমান।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের জীবন মূলত চাওয়া-পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। সে পরিশ্রম করে কিছু অর্জন করে, কিন্তু তাতেই থেমে থাকে না। বরং নতুন নতুন চাহিদার উদ্ভব ঘটে, যা তাকে আবার নতুন কিছু পেতে প্ররোচিত করে। এই চাহিদার তালিকা যেন শেষই হয় না। তাই সে ঠিক কী চায়, তা হয়তো সে নিজেই জানে না। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই মানুষ তার হাতে থাকা জিনিসকে তুচ্ছ মনে করে এবং হাতের নাগালের বাইরে থাকা জিনিসের জন্য ব্যাকুল হয়।
এটি মানুষের চিরন্তন স্বভাব। সে যখন কোনো কিছুকে তার নিজস্ব করে পায়, তখনই আবার নতুন কোনো কিছুর জন্য আকুল হয়ে ওঠে। কিন্তু এ আকাঙ্ক্ষার পরিসমাপ্তি কোথায়, সে তা জানে না। অতিরিক্ত চাওয়ার চাপ তাকে শেষপর্যন্ত হতাশায় ডুবিয়ে দেয়, কারণ তার সব চাওয়া পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়। এই কারণে অনেক সময় অপ্রাপ্তির বেদনা তাকে কষ্ট দেয়। তবে যদি সে সীমিত চাওয়া-পাওয়ায় অভ্যস্ত হতে পারে, তবে তার জীবনে অপ্রাপ্তির বেদনাগুলো কমবে এবং প্রাপ্তির আনন্দ আরও বেশি করে উপভোগ করতে পারবে।
মন্তব্য
চাওয়া-পাওয়া মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এই বৈশিষ্ট্য কখনও তাকে সত্যিকার অর্থে সুখ দেয় না; বরং এটি তার মনে দুঃখ আর কষ্টের জন্ম দেয়।
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারন Class 9
মূলভাব: পৃথিবীতে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কোন শেষ নেই। অনেক কিছু পাওয়ার পরও মন আরও কিছু পাওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে।
সম্প্রসারিত ভাব: মানবজীবন কখনোই নিখুঁত সুখের উৎস নয়; এতে মিশে থাকে দুঃখ, বেদনা, এবং বিভিন্ন আকাঙ্ক্ষার দ্বন্দ্ব। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মানুষ ক্রমাগত নতুন কিছু চাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় তাড়িত হয়। কোনো কিছু পাওয়ার পরও তার হৃদয় সন্তুষ্ট হয় না; বরং আরও বড় কিছু পাবার তৃষ্ণা জেগে ওঠে। এই বৈশিষ্ট্য মানুষের চিরন্তন সঙ্গী, যা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। মানুষ জানে না কবে তার পাওয়ার ইচ্ছার শেষ হবে। সীমাহীন কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব নয়, তা জেনেও মানুষ এই সত্যটি এড়িয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে সমাজে অশান্তি ও বিভিন্ন সংকটের সৃষ্টি হয়। চাওয়া ও পাওয়ার এই দ্বন্দ্বেই মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। কিন্তু যেদিন মানুষ তার সীমিত প্রাপ্তিতে তুষ্ট হতে শিখবে, সেদিনই তার যন্ত্রণাগুলো মিটবে এবং তার হৃদয় শান্তিতে পূর্ণ হবে। তখন হয়তো মানুষের কণ্ঠে ফুটে উঠবে কবির সেই লাইন—
“যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই
যাহা পাই তাহা চাই না।”
মন্তব্য: এই পৃথিবীতে চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্ব চিরন্তন। সীমিত প্রাপ্তিতে তুষ্ট হওয়ার ক্ষমতা অর্জন করলেই মানুষ প্রকৃত সুখ ও শান্তির পথ খুঁজে পাবে।
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারন SSC & HSC
মানুষের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ধারা যেন রেল লাইনের সমান্তরাল ধারা। যা প্রত্যাশা করে, তা সে পায় না, আর যা সে কল্পনায়ও ভাবে না, সেটাই যেন হাতে এসে ধরা দেয়। চাওয়া আর পাওয়ার এই দুটি ধারা কখনো মিলিত হয় না।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের চাওয়া আর পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই, কিন্তু এ দুয়ের মাঝে কোনো সামঞ্জস্যও দেখা যায় না। জীবনের এই চাওয়া-পাওয়ার দূরত্ব যেন কখনো পূর্ণ হয় না। কোনো কিছুর জন্য মানুষ প্রাণপণ করে, কিন্তু প্রাপ্তির ফল সে পেলেও তৃপ্তি আসে না। বরং মনে হয়, যা চেয়েছি তা ভুল করেই চেয়েছি। তেমনি, প্রার্থনা পূর্ণ হলে তা কদাচিৎ আনন্দ দেয়, বরং মাঝে মাঝে মনে ক্ষোভই জন্মায়।
মানুষের এই চাওয়া-পাওয়ার ভিন্নতা মানবজীবনের এক অনিবার্য ট্রাজেডি, যা কখনো মিটে যায় না। তাই কবি বলেছেন:
“নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস
ওপারেতে সর্ব সুখ আমার বিশ্বাস।”
প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মাঝে এই দূরত্বই জীবনের বাস্তবতা, আর এই বাস্তবতা নিয়েই জীবন সুন্দর।
আরো গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন:
- যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।
- ভাবসম্প্রসারণ: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির
- ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ ভাবসম্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC HSC
- কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবস্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC & HSC
সবশেষে:
আশা করছি যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।