যে সহে, সে রহে

যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। যে সহে, সে রহে ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে।
যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক—
যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারন Class 6
মূলভাব:
জীবনে সফল হতে হলে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অপরিহার্য। এগুলো মানুষকে অভ্যন্তরীণ শক্তিতে বলীয়ান করে, যা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।
ভাবসম্প্রসারণ:
মানবজীবন চ্যালেঞ্জ ও সংগ্রামে পরিপূর্ণ। দুঃখ-কষ্ট, রোগ-শোক, দারিদ্র্য এবং হতাশার মতো প্রতিকূল পরিস্থিতি মানুষকে মাঝেমধ্যে দিশেহারা করে তোলে। তবুও, যারা ধৈর্যশীল, তারা সংকল্প নিয়ে এগিয়ে গিয়ে সমস্ত বাধা জয় করতে সক্ষম হয়।
ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, সাহস ও অধ্যবসায় মানুষের জীবনে অপরিহার্য গুণ। এ গুণগুলির অভাবে জীবনের লাঞ্ছনা ও যন্ত্রণা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। মহামানবরা এ গুণাবলির মাধ্যমে নিজেদের সাফল্য এবং মানবজাতির কল্যাণ নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্বের সব আবিষ্কার ধৈর্যের ফসল। জ্ঞানী-গুণীরা দীর্ঘ প্রচেষ্টায় মানবজীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন। মহামানবদের ত্যাগ, ধৈর্য এবং সহনশীল মনোভাব আজকের সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলেছে।
ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা মানবজীবনের সুখ, শান্তি এবং প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ধৈর্যশীল মানুষই প্রতিকূলতাকে ধীরস্থিরভাবে জয় করে জীবনে সফলতার চূড়ায় পৌঁছাতে পারে।
যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারন Class 7
মূলভাব:
এই পৃথিবীতে যারা ধৈর্যশীল ও সহনশীল, তারাই জীবনে সত্যিকারের সাফল্য ও স্থায়িত্ব অর্জন করে।
সম্প্রসারিত ভাব:
মানবজীবন কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ নয়; এর পথ নানা বাধা-বিপত্তিতে ভরা। জীবনের এই প্রতিকূল পথ অতিক্রম করেই সফলতা অর্জন করতে হয়। এ জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় গুণ হলো ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। সহিষ্ণুতা মানুষের চরিত্রকে স্থিতিশীল করে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়া গড়ে তোলে। এটি মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এবং ন্যায়ের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
মহামানবদের জীবনের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার প্রকাশ রয়েছে। তারা মানুষের দুর্বলতাকে তিরস্কার না করে তাদের ভালো দিকগুলোকে সামনে এনেছেন। প্রভু যীশু এবং মহানবি মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন উদাহরণ হতে পারে। কঠোর পরিস্থিতির মধ্যেও তারা সহিষ্ণু ছিলেন এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করেছেন। তাদের ধৈর্য ও ভালোবাসাই অসংখ্য মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছে।
মন্তব্য:
ক্ষমা, দয়া, ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতার মতো গুণাবলিই মানুষের প্রকৃত সাফল্য ও শান্তির মূল চাবিকাঠি। এ গুণগুলির বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ নিজের জীবন এবং সমাজ উভয়কেই সমৃদ্ধ করতে পারে।
ভাবসম্প্রসারন: যে সহে, সে রহে Class 8
মূলভাব:
এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে মানুষকে সংগ্রাম করতে হয়। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা যার রয়েছে, সে-ই জীবনের প্রতিকূলতা জয় করতে সক্ষম।
সম্প্রসারিত ভাব:
সহিষ্ণুতা ও ধৈর্য মানবজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ। এটি মানুষকে শক্তি ও সাহস জোগায়, যা জীবনের বিভিন্ন সংকট মোকাবিলায় সাহায্য করে। পৃথিবীতে যারা ধৈর্যশীল, তারাই কাজের প্রতি স্থির থেকে সাফল্য অর্জন করে।
জীবনের প্রতিটি কাজেই বাধা-বিপত্তি আসে। যদি কেউ ধৈর্য হারিয়ে কাজ ছেড়ে দেয়, তবে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে তার জীবন ব্যর্থতায় ভরে ওঠে। অন্যদিকে, যারা সহিষ্ণু হয়ে সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে, তারাই জীবন সংগ্রামে জয়ী হয় এবং গৌরবের অধিকারী হয়।
মন্তব্য:
সহিষ্ণুতা জীবনে সত্যিকারের আশীর্বাদ। এটি মানুষের অন্তরের শক্তি বাড়ায় এবং তাকে জীবনের কঠিন বাস্তবতা জয় করার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। সাফল্যের জন্য ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অপরিহার্য।
যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারন Class 9
মূলভাব:
ধৈর্য মানুষের জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠি।
সম্প্রসারিত ভাব:
যার মধ্যে ধৈর্য ধারণের গুণ রয়েছে, সেই প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে জীবনে সফল হতে পারে। সহিষ্ণুতা হলো এমন একটি গুণ, যা মানুষকে সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় শক্তি জোগায়। জীবনের পথে নানা বাধা-বিপত্তি ও সংকট আসবেই, কিন্তু ধৈর্য ধরে এগিয়ে চললে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
ধৈর্যশীল মানুষ ঠাণ্ডা মাথায় বড় সমস্যারও সমাধান করতে পারে। অন্যদিকে, অস্থিরচিত্ত মানুষ সহজ কাজও ভালোভাবে করতে ব্যর্থ হয়। প্রতিযোগিতামূলক এ পৃথিবীতে সফল হতে হলে সহনশীলতা অপরিহার্য। মহামানবদের জীবন দেখলে বোঝা যায়, তারা সবসময় বিপদ-আপদ ধৈর্য দিয়ে মোকাবিলা করেছেন এবং সফলতা অর্জন করেছেন। আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম প্রচারে অসংখ্য নির্যাতন সহ্য করেও ধৈর্য হারাননি, যার ফলে তিনি সফল হতে পেরেছেন।
মন্তব্য:
সহিষ্ণুতা জীবনের জন্য এক অনন্য গুণ। এটি মানুষকে সাফল্যের পথে পরিচালিত করে এবং জীবনে স্থায়িত্ব এনে দেয়। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার চর্চাই মানুষের প্রকৃত বিজয় নিশ্চিত করে।
যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারন SSC & HSC
সহনশীলতা মানবজীবনের একটি মহান গুণ, যা জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ধৈর্য ধারণ করে সমস্যার মোকাবিলা করলে, জীবনে অনেক বাধা সত্ত্বেও সফল হওয়া সম্ভব। তাই একজন মানুষের জন্য সহনশীলতা এবং ধৈর্যশীল হওয়া অপরিহার্য। ধৈর্যহীনতা জীবনে উন্নতি লাভের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রসারিত ভাব
ধৈর্য এবং সহনশীলতা, জীবনের সংগ্রামে বিজয়ী হওয়ার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। জীবনের পথে অনেক বাধা, বিপদ ও হতাশা আসবে, কিন্তু এগুলোর সামনে ভেঙে পড়লে চলবে না। ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এগুলোর মোকাবিলা করতে হবে। কখনও-কখনও, পথের উপর হাজারো বাধা দাঁড়াবে, কিন্তু যদি ভয় পেয়ে ধৈর্যহীন হয়ে পড়েন, তবে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জীবন একটি কঠিন যাত্রা, যেখানে প্রতিযোগিতা ও চ্যালেঞ্জ লেগে থাকে। “Life is a continuous competitive examination” – জীবন কখনও সহজ ছিল না, এবং কখনোই সহজ হবে না। “Rome was not built in a day” – যে সফলতা আমরা আজ দেখি, তা অর্জিত হয়েছিল দীর্ঘ সাধনা ও ধৈর্যের মাধ্যমে। ধৈর্য মানুষের জীবনের একটি মহৎ অলঙ্কার। আল কোরআনে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” পৃথিবীতে যারা চিরকাল স্মরণীয় এবং সফল, তারা সকলেই ছিলেন ধৈর্য ও সহনশীলতার জীবন্ত উদাহরণ।
একটি বাস্তব উদাহরণ হিসেবে, কার্লাইলের ফরাসি বিপ্লবের ওপর লেখা ইতিহাসের পাণ্ডুলিপিটি অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছিল, কিন্তু তিনি তার অপরিসীম ধৈর্য ও সাধনার মাধ্যমে তা পুনরায় লিখে, চির অমর হয়ে আছেন আমাদের স্মৃতিতে। কাজেই, দেখা যায় যে, ধৈর্য ও সহনশীলতা হল জীবনে সফলতা অর্জনের প্রক্রিয়া, যা মানুষের আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে।
মন্তব্য:
সহনশীলতা জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ, যা মানুষের উন্নতির পথ প্রশস্ত করে। এটি শুধু একজন ব্যক্তির কর্মক্ষমতাকে শক্তিশালী করে না, বরং তাকে জীবনের নানা প্রতিকূলতা ও অস্থিরতা মোকাবিলা করার ক্ষমতা দেয়। তাই, জীবনে সাফল্য পেতে হলে, মানুষকে অবশ্যই ধৈর্যশীল এবং সহনশীল হতে হবে। এটি মানুষের মন ও চরিত্রের বিকাশে সাহায্য করে এবং তাকে স্থিতিশীল ও সফল জীবনের দিকে পরিচালিত করে।
আরো গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন:
- যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।
- ভাবসম্প্রসারণ: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির
- ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ ভাবসম্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC HSC
- কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবস্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC & HSC
FAQ’s on যে সহে সে রহে:
1. যে সহে সে রহে কার উক্তি?
“যে সহে সে রহে” একটি প্রবাদ বাক্য। এটি বাঙালি সংস্কৃতিতে প্রচলিত একটি নীতিবাক্য, যা ধৈর্যের গুণাবলী এবং সহিষ্ণুতার গুরুত্ব বোঝায়। এটি কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির উক্তি নয়, বরং বাঙালি প্রাচীন প্রজ্ঞার অংশ।
2. যে সহে সে রহে ইংরেজি?
“Patience sustains life” বা “Those who endure, survive” এই অর্থে এটি ইংরেজিতে প্রকাশ করা যায়।
3. যে সহে সে রহে রচনা?
এই প্রবাদ বাক্যের ওপর একটি রচনার মূল বক্তব্য হতে পারে:
- ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতা: জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরে এগিয়ে চলার গুরুত্ব।
- অভিজ্ঞতার আলোকে শিক্ষণ: সহিষ্ণুতার মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা মানুষকে জীবনের বড় সমস্যাগুলোর সমাধান করতে সাহায্য করে।
4. যে সহে সে রহে খুদে গল্প?
একদিন একটি ছোট্ট গ্রামে এক কৃষক ছিল। প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করেও তার ফসল তেমন ভালো হতো না। কিন্তু সে কখনো হাল ছাড়েনি। এক বছর প্রচণ্ড খরা দেখা দিল, তখনও সে তার ক্ষেত পরিচর্যা করল। পরের বছর বৃষ্টি হলে তার ফসল প্রচুর হলো। তখন সবাই বলল, “যে সহে সে রহে।”
5. যে সহে সে রহে নিয়ে উক্তি?
- “ধৈর্য মানুষের জীবনের সব চ্যালেঞ্জ জয় করতে সাহায্য করে।”
- “যে সহিষ্ণু, তার জীবন শান্তিপূর্ণ।”
6. যে সহে সে রহে কোন ধরনের বাক্য?
এটি একটি প্রবাদ বাক্য (Proverbial Sentence), যা মানুষের নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে।
7. যে সহে সে রহে অর্থ কি?
এই প্রবাদ বাক্যের অর্থ হলো:
যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরে ও সহিষ্ণু হয়ে জীবনযাপন করে, সে জীবনের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে টিকে থাকে। এটি জীবন সংগ্রামে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
সবশেষে:
আশা করছি যে সহে, সে রহে ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।