স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারনটি সকল শ্রেণি এবং চাকরি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। আমরা খুব সহজ করে লেখার চেষ্ট করেছি। প্রত্যেক ক্লাসের জন্য আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছ ভাবসম্প্রসারনটি। স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ক্লাস ৫ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
মাই ক্লাসরুমে পাবেন গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন Class 8, Class 9, Class 10 & ভাবসম্প্রসারন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আশাকরছি, ভাবসম্প্রসারনটি দেখে সহজেই মুখস্ত করতে পারবে।
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারনটি যেকোন পরীক্ষায় কমন আসারমতো। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা ২য়পত্র সাজেশনে প্রায়ই ভাবসম্প্রসারনটি থাকে। তাহলে চলো শুরু করা যাক—
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারন Class 6
স্বদেশ প্রেম হল মানুষের জন্য একটি মহান আদর্শ। যে ব্যক্তি নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করে না, সে পশুর মতো।
মানুষ জন্ম থেকে মায়ের উপর নির্ভরশীল থাকে, ঠিক তেমনি সে দেশের উপরও নির্ভরশীল। দেশের আলো, বাতাস, খাবার, পানি—এসব পেয়ে মানুষ বড় হয়। এইভাবে, মায়ের সঙ্গে দেশের তুলনা করা যায়। স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে।
যখন কেউ দেশের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে, সে কখনো দেশের উপযুক্ত নাগরিক হতে পারে না। মানবতার অভাব থাকা মানে পশুর সমান। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষরা সবাই দেশপ্রেমিক ছিলেন। মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মক্কা থেকে হিজরত করার সময় কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, “আমাকে যদি আমার লোকেরা বিতাড়িত না করতো, তবে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।”
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ দেশপ্রেমের জন্য জীবন দিয়েছিলেন। তাদের আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়। যারা নিজের স্বার্থে দেশের ক্ষতি করে, তারা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। যারা দেশকে ভালোবাসেন, তারা তাদের কর্মের মাধ্যমে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারন Class 7
মূলভাব: স্বদেশপ্রেম মানুষের একটি উত্তম আদর্শ। যার মধ্যে স্বদেশপ্রেম নেই, সে মানুষ হয়েও পশুর মতো।
সম্প্রসারিত ভাব: দেশপ্রেম হল মানুষের একটি প্রাকৃতিক গুণ। এটি আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। দেশপ্রেম ছাড়া আমরা মা, মাটি এবং আমাদের fellow countrymen কে ভালোবাসার মতো মহান অনুভূতি অনুভব করতে পারি না। তাই আমাদের ঋষিরা জন্মভূমিকে মায়ের মতো শ্রদ্ধা করেন। যেমন মা আমাদের রক্ত, মাংস, হাড় ও মজ্জায় মিশে থাকে, তেমনই আমাদের জন্মভূমির আলো, বাতাস, রূপ, রস, এবং গন্ধও আমাদের অন্তরে থাকে।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, “দেশপ্রেম ঈমানের অর্ধাংশ।” তিনি স্বদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস তাঁর “জন্মভূমি” কবিতায় বলেছেন:
“জননীগাে জন্মভূমি তােমারি পবন
দিতেছে জীবন মােরে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে।”
যারা নিজেদের দেশকে ভালোবাসে এবং দেশের জন্য কাজ করে, তারাই প্রকৃত মানুষ। মহামানবেরা সবাই দেশপ্রেমিক ছিলেন। বীরেরা দেশের জন্য নিজেদের জীবন দিতে দ্বিধা করেন না। যিনি দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে চান, তিনিই আসল মানুষ। যে মাতৃভূমিকে ভালোবাসে না এবং দেশের জন্য কোনো অবদান রাখে না, তিনি মানুষের পরিচয়ে অবমানিত।
মন্তব্য: যারা দেশমাতৃকার কল্যাণে আত্মত্যাগ করেন, তারা প্রকৃত মানুষ। কিন্তু যারা দেশের ভালোবাসায় অমনোযোগী, তারা পশুর মতো।
ভাবসম্প্রসারন: স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন Class 8
মূলভাব: জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। এ গুণ যার মধ্যে নেই, সে দেশের মানুষ হিসেবে তুচ্ছ।
সম্প্রসারিত ভাব: সমাজের কাছে এমন মানুষ মর্যাদা পেতে পারে না; বরং তারা মানুষের ঘৃণা ও নিন্দার শিকার হয়। যেসব মহৎ গুণ মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে, তার একটি হচ্ছে স্বদেশপ্রেম। জন্মভূমি মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রত্যেক মানুষ জন্মগ্রহণ করে তার নিজের জন্মভূমির কোলে। সেখানকার ধুলো-মাটিতে ও আলো-বাতাসে সে বড় হয়। জন্মভূমির প্রাকৃতিক সম্পদ তার জীবনের জন্য অপরিহার্য। তাই স্বদেশকে ভালোবাসা এবং দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য কাজ করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।
মানুষের জীবনে স্বদেশের অবদান এত বিশাল যে, মাতৃভূমি তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। স্বদেশের জন্য ভালোবাসা দেশের জন্য কাজ করার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ব্যক্তি দেশের জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দেন। দেশের স্বাধীনতা ও সম্মান রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও তিনি দ্বিধা করেন না। আমাদের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর শহিদরা দেশকে রক্ষা করতে জীবন উৎসর্গ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
অন্যদিকে, যাদের স্বদেশের প্রতি মমত্ববোধ নেই, তারা দেশের কল্যাণে আগ্রহী থাকে না। এমন মানুষরা দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতেও দ্বিধাবোধ করে না। দেশদ্রোহী ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড দেশের মানুষের ক্ষতি করে। তাদের কারণে অনেক সময় দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তাই এই ধরনের মানুষ সকলের দ্বারা ঘৃণিত ও অসম্মানিত হয়। তারা সত্যিকার অর্থে মানুষ বলা যায় না। আসলে, দেশের জন্য কাজ করলেই মানুষ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া যায়।
মন্তব্য: যারা দেশপ্রেমে অভাবিত, তারা নিতান্তই স্বার্থপর। স্বদেশকে ভালোবাসা হলো মানুষের প্রকৃত ধর্ম।
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারন Class 9
মূলভাব: স্বদেশের প্রতি প্রেম, প্রীতি ও হিত সাধনার মধ্যমে মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে।
সম্প্রসারিত ভাব: স্বদেশ বা জন্মভূমি হলো সৃষ্টিকর্তার দান করা একটি অমূল্য রত্ন। মানুষ নিজের ইচ্ছায় কোন স্থানে জন্ম নিতে পারে না, তাই আমাদের স্বদেশের প্রতি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। এই দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের মানবিক গুণাবলী বিকাশ ঘটাতে পারি। আমাদের দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে, কারণ এটি মানব জীবনের জন্য অমৃতের মতো।
স্বদেশের আলো, বাতাস, পানি ও শস্য আমাদের যে সেবা দেয়, তার বিনিময়ে আমাদের দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে। অর্থ, সম্মান বা যশের মাধ্যমে একজন মানুষ তার মর্যাদা অর্জন করতে পারে না; বরং দেশপ্রেমের মাধ্যমে সে সত্যিকার মর্যাদা পায়। যে ব্যক্তি দেশপ্রেমে উদাসীন, সে ইতিহাসের পাতায় অজ্ঞাত হয়ে যাবে।
সাধারণত, মানুষের পরিচয় তার চরিত্র ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে হয়ে থাকে। পশুরা দেশপ্রেমের ধারণা জানে না, কিন্তু মানুষ, যার মধ্যে জ্ঞান রয়েছে, যদি সে দেশপ্রেমের প্রতি উদাসীন হয়, তবে সে পশুর মতো হয়ে যাবে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পৃথিবীর সকল মহান ব্যক্তিত্ব দেশপ্রেমের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সম্মানিত হয়েছেন।
উদাহরণস্বরূপ, হিজরতের সময় হজরত মুহাম্মদ (সঃ) যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তা তাঁর জন্মভূমির প্রতি প্রেমের প্রমাণ। দেশের সুখ-দুঃখে মানুষের এগিয়ে আসা উচিত। স্বদেশ ও স্বজাতির কল্যাণে যে নিজেকে কাজে লাগাতে পারে না, সে প্রকৃত মানুষ নয়। একজন সত্যিকার মানুষ হিসেবে আমাদের স্বদেশ ও স্বজাতির কল্যাণে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।
স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারন SSC & HSC
মূলভাব: মা এবং মাতৃভূমি আমাদের সকলের কাছেই অত্যন্ত প্রিয়। মাতৃভূমির প্রতিটি ধূলিকণা সংবেদনশীল হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। কেবল মনুষ্যত্বহীন ব্যক্তিই পারে তার স্বদেশের বিরুদ্ধে বিরূপ চিন্তা করতে।
সম্প্রসারিত ভাব: পাখি যেমন ভালোবাসে তার নীড়কে, অরণ্যের বন্য জন্তুও ভালোবাসে তার বনকে, তেমনি মানুষও ভালোবাসে তার দেশকে, যেখানে সে জন্মেছে এবং লালিত হয়েছে। মাতৃভূমি, মা, এবং মাতৃভাষার প্রভাব মানুষের শরীর ও মনে গভীরভাবে প্রোথিত থাকে। এই দেশের প্রতি আমাদের প্রেম যেন এক অন্তর্লীন ধারা যা আমাদের অন্তরের গভীরে অনুপ্রাণিত করে।
দেশপ্রেম মানুষের সহজাত অনুভূতি, যা তাকে বৃহত্তের পথে নিয়ে আসে। মানব হৃদয় আনন্দে গেয়ে ওঠে— “আমার এ দেশেতে জন্ম যেন, এ দেশেতেই মরি।” স্বদেশের জন্য কাজ করা মানুষকে তার ক্ষুদ্র স্বার্থান্ধতা থেকে মুক্ত করে বৃহত্তর কল্যাণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। স্বদেশপ্রেমহীন ব্যক্তি পশুর মতোই বিবেচনাহীন এবং আতঙ্কজনক। তারা ব্যক্তিস্বার্থে অন্ধ এবং প্রয়োজনে পশুর মতো আচরণ করে।
প্রত্যেক মানুষকে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে হবে, কারণ “স্বদেশপ্রেম ঈমানের অংশ।” তাই প্রত্যেকের মধ্যে দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ থাকা অত্যন্ত জরুরি।
আরো গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারন:
- যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।
- ভাবসম্প্রসারণ: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির
- ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ ভাবসম্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC HSC
- কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবস্প্রসারন Class 6 7 8 9 10 SSC & HSC
সবশেষে:
আশা করছি স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন ভাবসম্প্রসারনটি পড়ে বুঝতে পেরেছো। ভাবসম্প্রসারনটি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লিখার চেষ্টা করো। SSC & HSC ভাবসম্প্রসারন হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ন। মাই ক্লাসরুম থেকে তোমরা সকল প্রকার ভাবসম্প্রসারন, রচনা, দরখাস্ত, প্যারগ্রাফ মুখস্ত করতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।